ব্যবসা বুঝতে তথ্য যোগায় কম্পাস

ব্যবসা বুঝতে তথ্য যোগায় কম্পাস

Wednesday November 18, 2015,

4 min Read

অল্প বয়েসেই উদ্যোক্তা হয়ে গিয়েছিলেন। কাজ করতে করতে মধ্য অল্পসের বাসিন্দা বিজোর্ন উপলব্ধি করেছিলেন, ব্যবসা বাড়ানোর জন্য আর কী কী দরকার, কী দরকার নেই, কোথায় বেশি জোর দিতে হবে, কোন জায়গা থেকে মনোযোগ সরাতে হবে-এই বিষয়গুলি জানা দরকার। কম্পাস হল তেমনই একটি সংস্থা, যারা ব্যবসার সাফল্য আরও বাড়াতে ৩০+ ডাটা সোর্সের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মাপকাঠি সামনে নিয়ে আসে। সেই মাপকাঠিতেই সংস্থার সিইও, সিএফও এবং প্রতিষ্ঠাতারা সমস্যা খুঁজে বের করেন, কী করতে হবে, কোন কাজ আগে করতে হবে ঠিক করে নেন এবং সেই মতো ব্যবস্থা করে ফলাফল নিয়ন্ত্রণ করেন। বিজোর্ন এবং তাঁর টিম সিলিকন ভ্যালির প্রাণকেন্দ্রে উন্মুক্ত অফিসে কম্পাসের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করছেন। তাঁদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য দুইই মহান।

image


ছোটবেলাতেই আন্তেপ্রেনিয়রশিপ প্রায় মজ্জাগত হয়ে গিয়েছিল বিজোর্নের। কিন্তু অনেক পরে কাজ করতে করতে জানতে পেরেছিলেন আন্তেপ্রেনিয়র শব্দের মানে কী। বাংলাদেশ, জার্মানি এবং আমেরিকায় সব মিলিয়ে ৫টি অলাভজনক সংস্থা নিজে গড়েছেন অথবা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি কোনও সংস্থার প্রয়োজন অনুযায়ী তার উন্নতি, সংস্থাগুলিকে ব্যবসা আনুপাতিক হারে বাড়াতে অথবা কমাতে সাহয্য করেন। এই উৎসাহ বিজোর্নকে সুদূর অল্পস থেকে বাংলাদেশে টেনে নিয়ে গিয়েছে। সেখানে তিনি ট্রান্সপারেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট শুরু করেন। এখানে তাঁর কাজ হল, স্থানীয় ব্যবসাগুলিতে স্বচ্ছতা এনে, পুঁজির ব্যবস্থা করা এবং ব্যবসায়ীক শিষ্টাচারের মাধ্যমে ছোট ব্যবসাগুলির মান বাড়াতে সাহায্য করা। তিনি রাশিয়ায় একটি মার্কেটিং ফার্মে মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কম্পাসের কাজের ফাঁকে নিজের অফিসে বসে ইয়োরস্টোরির সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে উঠে এল নানা তথ্য।

‘আমার মূল উদ্দেশ্য হল মানুষের মধ্য থেকে সম্ভাবনার সুপ্ত প্রতিভা জাগিয়ে তোলা। আমি মানুষের উন্নতি দেখতে ভালোবাসি। সেই কাজ করতে চাই যা আমার বিশ্বাস মানুষকে তার ক্ষমতা অনুযায়ী চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতাদের স্টার্টআপের প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে সমৃনভাবে কাজ করতে সাহায্যের ইচ্ছে থেকেই কম্পাসের সৃষ্টি। যার মূল কথা হল, ‘অপ্রয়োজনীয় পারিপার্শিকতাকে বাদ দিয়ে ব্যবসায় মন দিন’। নানা ভাবে চেষ্টার পর আমরা একটা উপায় বের করি। সেটা হল, যার মাধ্যমে ব্যবসার পরিমাপ করা হবে তাকে সমস্ত তথ্য দিয়ে দেওয়া। এই ডাটা থাকার ফলে সংস্থা বুঝতে পারে কোথায় কী করতে হবে। বেঞ্চমার্ক ডাটা নতুন কিছু নয়। বেঞ্চমার্ক তথ্য পেলে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়। ফলে বড় বড় সংস্থাগুলি তাদের সঙ্গে যুক্ত ছোট সংস্থাগুলির সঙ্গে অসম লড়াইয়ে সুবিধা নেয়। এই তথ্যগুলি ছোট অথবা মাঝারি সংস্থার জন্য যথেষ্ট ব্যয় সাপেক্ষ। বিভন্ন উপদেষ্টা সংস্থা যেমন, ম্যাকিনসে অথবা গার্টনার, সিরিয়াস ডিসিশন অথবা ডান অ্যান্ড ব্র্যডস্ট্রিট বেঞ্চমার্ক ডাটা সরবরাহ করে। এই তথ্যগুলি সংগৃহীত, সাজানো, বিশ্লেষিত এবং হাত হাতে দেওয়া হয়’।

যে কোনও স্টার্টআপে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল অনিশ্চয়তা। পণ্য বাজারের উপযোগী কি না, গ্রাহক কারা, পণ্যের সঠিক দাম কী হবে, কীভাবে বাজারে পণ্য ছাড়া হবে, কত টাকা বাজার থেকে তুলতে হবে-এইসব নানা বিষয়ে ভাবতে হবে। অনিশ্চয়তার ঘোর যদি সংস্থাগুলি কাটাতে না পারে তাহলেই সমস্যা তৈরি হবে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, সংস্থায় একসঙ্গে অনেক লোক নিয়ে নেওয়া, একটা পণ্য নিয়ে অত্যধিক কারিকুরি অথবা ক্রেতা ধরতে প্রচুর টাকা খরচ করে ফেলা ইত্যাদি। অনিশ্চয়তা কাটানোর সবচেয়ে সঠিক উপায় হল, গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে বা মেট্রিক্স নিয়ন্ত্রণ করে একই রকম সংস্থাগুলির তুলনায় যত দ্রুত সম্ভব শিখে নেওয়া।

বিজোর্ন জানান, ‘আমরা যেটা প্রথমেই করলাম সেটা হল নিজেদের প্রডাক্ট নিজের সংস্থায় কাজে লাগালাম। দেখলাম একই রকম অন্যান্য সংস্থার চেয়ে আমরাই ভালো করছিলাম। যাইহোক, গভীরে খতিয়ে দেখে বুঝলাম কম্পাসের প্রথম ভার্সানের রিটেনশন রেট তেমন ভালো নয়। কম্পাসের প্রোডাক্ট তিন থেকে বারো মাসে একবার হয়ত ব্যবহার হল, যদি তার আগে ভুলে না যায়। বেঞ্চমার্ক দ্রুত আপডেটের জন্য ডাটা সংগ্রকে স্বয়ক্রিয় করে ভগ্নাংশ কমিয়ে সেই সমস্যা খানিকটা মেটানো গিয়েছে’।

‘পৃথিবীর যে কোনও জায়গায় সমৃদ্ধশালী এন্টারপ্রেনেরিয়াল ইকোসিস্টেম তৈরি করতে গেলে বিবর্তনীয় এবং উন্নয়নমূলক কার্যকারণ দরকার হয়। বিবর্তনশীল ফ্যাক্টর পরিবর্তন করা শক্ত। কারণ, সেটা নির্ভর করে আর্থসামাজিক এবং সংস্কৃতিক পরিবেশের ওপর। উন্নয়নমূলক বিষয়ের দিকে নজর দিলে সেখানে আমার মতে দুটো জিনিস রয়েছে। মেধা এবং পুঁজি। সাফল্যের পরিমান বাড়াতে গেলে সারা বিশ্ব থেকে সবচেয়ে ভালো ভালো মেধার আমদানি ঘটাতে হবে’, বলেন বিজোর্ন।

বিজোর্ন মনে করেন, অল্প বয়সেই উদ্যোক্তা হওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা দরকার।যখন সময় আসবে উদ্যোক্তা এখন হবেন, নাকি পরে হবেন অথবা কখনই নয়-এই সিদ্ধান্ত দ্রুত নিয়ে নেওয়া যাবে।

কিছু নতুন ফাংশন নিজেদের প্রডাক্টে জোড়ার পরিকল্পনা রয়েছে কম্পাসের। সেগুলি হল-

১. একেবারে ইন্ডাস্ট্রির জন্যই তৈরি বেঞ্চমার্ক যেমন ই কমার্সের জন্য গড়পড়তা শপিং কার্টের মাপ অথবা গেমসের জন্য DAU/MAU।

২. হাই রেজুলিউশন বেঞ্চমার্ক তৈরি করা যা গ্রাহককের জন্য নানা বিষয়ে ছাঁকনির কাজ করবে।

৩. আরও শ খানের ডাটা সোর্স জোড়া