সাংবাদিকতা ছেড়ে রোটি ব্যাঙ্ক গড়েছেন তারা পাটকর

সাংবাদিকতা ছেড়ে রোটি ব্যাঙ্ক গড়েছেন তারা পাটকর

Wednesday November 02, 2016,

2 min Read

জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। তারা পাটকরের জীবনদর্শন এটাই। দুঃস্থ, ক্ষুধার্ত মানুষের মুখে অন্নজল তুলে দেওয়াই তারা পাটকরের লক্ষ্য। এজন্য এক হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে বুন্দেলখণ্ডের খরাপ্রবণ মাহোবা জেলায় তারা পাটকর মানব কল্যাণের কাজ করছেন।

image


তারা গড়ছেন অভিনব রোটি ব্যাঙ্ক। রোটি ব্যাঙ্কের স্বেচ্ছাসেবীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে রুটি ভিক্ষে করেন। ভিক্ষা করেন সব্জিও। তারপর সংগৃহীত ওই রুটি-সব্জি তুলে দেন ক্ষুধার্ত মানুষের হাতে।

২০১৪ সাল থেকে এই কাজ করে আসছেন তারারা। তারার এ কাজের ফলে প্রতিদিন অন্ন সংস্থান হয়ে থাকে অন্তত এক হাজার ক্ষুধার্ত মানুষের।

তারা ছিলেন পেশায় একজন সাংবাদিক। কিন্তু ২০১৪ সালে সাংবাদিকতা ছেড়ে দেন বৃহত্তর মানব সেবার ব্রতী হওয়ার লক্ষ্যে। শুরু করেন নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাজ। ৪৬ বছরের তারার ব্রত, একটি মানুষও যেন খিদের জ্বালায় কষ্ট না পান। পেট ভরে যেন খেতে পান সবাই। এ কাজে তারাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বুন্দেলি সমাজ।

গত কয়েক বছরে রোটি ব্যাঙ্কের কাজের পরিধিও বেড়েছে। তারার প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এখন কাজ করছে মাহোবা জেলার আরও কয়েকটি গ্রামে। তারা বললেন, এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবার হালও বেহাল। এখন কয়েক জন ডাক্তারবাবু আমাদের কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। বিনা পয়সায় রোগী দেখছেন তাঁরা।

রোটি ব্যাঙ্ক নিয়ে তাঁর স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন তারা। নিজের স্বেচ্ছাসেবাকে বুন্দেলখণ্ডের আরও ১৩টি জেলায় বিস্তৃত করতে চলেছেন তিনি। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত পরিকল্পনা হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি, উত্তর প্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশেও রোটি ব্যাঙ্কের কাজকর্মকে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

তারা জানালেন, ইতিমধ্যে পরিদর্শন করা হয়েছে বানডা, আটটারা, ললিতপুর, ওরাইয়ের মতো একাধিক গ্রাম। এই গ্রামগুলি ছাড়াও আরও বেশ কিছু গ্রামে শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে।

বুন্দেলখণ্ডের মাহোবায় প্রচুর পাথর ভাঙা কল রয়েছে। স্থানীয় দরিদ্র বাসিন্দারা এই পাথর ভাঙা কলগুলিতে শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন। তারা জানিয়েছেন, পাথর ভাঙা কলের দূষণে অন্ততপক্ষে দুলক্ষ মানুষ সিলিকোসিসে আক্রান্ত। এদিকে স্থানীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা বলতে প্রায় কিছুই নেই। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে নেই ডাক্তারবাবু।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বুন্দেলখণ্ড সফরে এসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারাদের দাবি, অঞ্চলে একটি এইমস হাসপাতাল স্থাপন করতে হবে। এই দাবিতে ইতিমধ্যে তারা ও তাঁর সহযোগীরা টানা ৮০দিন অনশন চালিয়েছেন।

তারা বললেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতিকল্পে আমাদের দাবি না মানা হলে ফের লাগাতার অনশনে বসা হবে।