গুনে দুর্লভ, মূল্যে সুলভ কম্পিউটার : রিনিউ-এর উদ্যোগ
কেবল খাস আদমি নয়, এবার আম আদমির কাছেও পৌঁছে যাবে কম্পিখউটার। সাধ্যের মতো দাম হওয়ায় নতুন প্রজন্মের কারিগরির স্বাদ নিতে পারবেন সাধারণ মানুষ। দেশের ঘরে ঘরে কম্পিউটার পৌঁছে দিতে এমনই উদ্যোগ নিয়েছে ‘রিনিউ’। যার পরিকল্পনায় এই অসাধ্য বাস্তবের মুখ দেখেছে, তিনি মুকুন্দ বিএস।
Tuesday September 22, 2015,
2 min Read
এক সময় এনআইটি সুরাত থেকে ব্যাচেলর ইন ইলেকট্রনিক্স ডিগ্রি পেয়ে ম্যানেজমেন্টের দিকে ঝোঁকেন মুকুন্দ। মেধাবী এই ছাত্র সুযোগ পান আইআইএম ক্যালকাটায়। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকতে হয়নি। মোটা মাইনের প্রস্তাব কড়া নাড়ে তাঁর দরজায়। তবে মুকুন্দের সহপাঠীরা সেই টানে বিদেশে গেলেও ভারতেই থেকে যান তিনি। এমন কিছু তৈরির কথা ভাবেন, যা সমাজকল্যাণে কাজে আসবে। বেশিদিন আর ভাবতে হয়নি। নিজে ইলেকট্রনিক্সের ছাত্র হওয়ায় কম্পিউটারই হয়ে ওঠে তাঁর হাতিয়ার। মুকুন্দ সিদ্ধান্ত নেন, সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছে দেবেন কম্পিউটার। এতদিন ব্যয়সাপেক্ষ বলে যারা কম্পিউটার কিনতে পারেননি, তারাই হয়ে ওঠেন, তাঁর বাজারের লক্ষ্য। মূলত ‘রিনিউ’ ব্র্যান্ডের মাধ্যমে ‘গুনে দুর্লভ ও মূল্যে সুলভ’ কম্পিউটার তৈরি শুরু করেন মুকুল। ছোট ব্যবসায়ী, পড়ুয়ারা ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাঁর প্রধান ক্রেতা হয়ে ওঠে।
২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত দক্ষিণ ভারতের একটা বড় অংশের কম্পিউটারের বাজার দখল করে ফেলেছে ‘রিনিউ’। সাত জন টেকনিশিয়ান ও একজন ম্যানেজার নিয়েই জোরকদমে ব্যবসা চালাচ্ছেন তাঁরা। মাত্র ৪,৫০০ টাকায় ক্রেতাকে কম্পিউটার দিয়ে ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে ওই সংস্থা। ২০১১ সালের আদমসুমারির পরিসংখ্যান বলছে, দেশের মাত্র ৯.৫ শতাংশ ঘরে কম্পিউটার পৌঁছেছে। অর্থাৎ প্রতি ১০টি ঘরের মধ্যে একজন কম্পিউটার ব্যবহারকারী। কম্পিউটারের এই বিশাল ফাঁকা জায়গাটা ধরতে চায় ‘রিনিউ’। সস্তায় কম্পিউটার দিতে বহুজাতিক কোম্পানিগুলি থেকে কম্পিউটার কেনে এই সংস্থা। পরে তা ঘষেমেজে চকচকে করে তোলা হয়। পরবর্তীকালে স্কুলে বা এনজিওতে যা কাজে আসে।
কোম্পানির কর্নধারের মতে, স্কুলপড়ুয়াদের বড় অংশ তাঁদের ক্রেতা। দাম কম হওয়ায় ‘রিনিউ’-এর থেকেই কম্পিউটার কিনতে চান বেশিরভাগ অভিভাবকরা। অনেক এনজিও তাঁদের থেকে ডেস্কটপ ছাড়াও ল্যাপটপ, সার্ভার কিনে থাকেন। এছাড়াও হিসেবনিকেশের কাজের জন্য তাদের সস্তায় কম্পিউটারকেই অগ্রাধিকার দেন ছোট ব্যবসায়ীরা। যার ফলে ‘রিনিউ’-এর ক্রেতার সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
আগামী দিনে বেঙ্গালুরু ছাড়িয়ে অন্যান্য রাজ্যেও ব্যবসা করতে চান মুকুন্দ। ইতিমধ্যেই নতুন করে ম্যানেজমেন্ট টিম গড়েছেন তিনি। ৬ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি শিখেছেন, ভিন দেশে পাড়ির আগে ঘর গোছান প্রয়োজন।