ভুল করে অ্যান্ত্রেপ্রেনিওর হয়ে যাবেন না...

ভুল করে অ্যান্ত্রেপ্রেনিওর হয়ে যাবেন না...

Monday February 22, 2016,

2 min Read

প্রায়ই শুনছি কিংবা দেখছি যে বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েরা সব স্টার্টআপ। ঝকঝকে সফল অ্যান্ত্রেপ্রেনিওর। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই প্রযুক্তিবিদ স্টার্টআপরা লক্ষ লক্ষ ডলারের ফান্ড জোগাড় করে ফেলছেন। একজিটে কামিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা। ব্যাপারটা বেশ গ্ল্যামারাস। তাই না!

image


তবে কখনও ভেবেছেন, প্রতিটি স্টার্টআপের সফলতার পিছনে রয়েছে অস্থিরতা, ডামাডোল আর উদ্বেগের দীর্ঘ ইতিহাস। সেই অর্থে কোনও গাইড বুক নেই যা আপনাকে অ্যান্ত্রেপ্রেনিওর হতে শেখাবে। তবে এই জগতে গ্ল্যামারের আলোয় আপনার চোখ ঝলসে গেলেও যেতে পারে। শুরুয়াতি ব্যবসায়ী তাঁর পরিবারকে নিশ্চিন্ত চাকরির নিরাপত্তা দিতে পারেন না। সফলতার পেছনে দৌড়ানোর শারীরিক আর মানসিক ধকলও কম নয়। "অ্যান্ত্রেপ্রেনিওরশিপ বেশ কঠিন",বললেন Proptiger এর সহনির্মাতা কার্তিক বর্মা।

স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম নিয়ে অভিজ্ঞ কয়েকজন অ্যান্ত্রেপ্রেনিওর এবং বিনিয়োগকারীর সঙ্গে আড্ডার পর যা বুঝলাম কয়েকটা কথা আপনাদের না বললেই নয়। 

নিজেই নিজের বস হতে চান?

মনে হতেই পারে একজন শুরুয়াতি নিজেই নিজের বস। ভুল করছেন। যখন আপনি একটি কোম্পানি চালাচ্ছেন তখন কাস্টমার আপনার বস। একজন আর্টিস্ট, কনসালটেন্ট, ফ্রিলান্সার কিংবা একজন ডাক্তার নিজেই নিজের বস। কিন্তু ফান্ডেড অ্যান্ত্রেপ্রেনিওর তাঁর বোর্ডকে জবাব দিতে বাধ্য। বললেন India Quotient-র নির্মাতা আনন্দ লুনিয়া। যাঁরা আপনার কোম্পানিতে চাকরি করেন তাঁদের নিরাপত্তার দায় আপনারই। সুতরাং সংস্থার মালিক হলেও আপনি চিন্তামুক্ত কখনোই নন। হ্যাঁ, একজন উদ্যোগপতি হিসেবে কিছু মানুষের জীবিকা সরবরাহের গর্ব আপনার থাকতেই পারে, কিন্তু শুধু সেকারণে অ্যান্ত্রেপ্রেনিওর হতে চাওয়াটা মোটেই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় নয়।

পেজ থ্রি সেলিব্রিটি হবেন...

এইসময়ে অ্যান্ত্রেপ্রেনিওরশিপের খবর ক্ষুধার্ত মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার মেইন খাবার। আনন্দ বললেন, আপনি যদি পেজ থ্রির ছোট্ট কলামের সেলিব্রিটি হতে লালায়িত থাকেন তবে ৯৫% স্টার্টআপের সঙ্গে ঘটা অসফলতার ধাক্কা আপনি বরদাস্ত করতে পারবেন না। অনেকক্ষেত্রে স্টার্টআপরা তাঁদের প্রোডাক্ট নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখা ছাপানোর জন্য লাফালাফি করেন। কিন্তু প্রণয় শ্রীনিবাসন আমাদের একটু অন্য কথা বললেন। প্রণয় 'Sourceasy'-র নির্মাতা হওয়ার যোগ্যতা একটা গোটা দশক খুচরো ব্যবসার জগতে সাফল্য দেখানোর পর অর্জন করেছেন। অ্যান্ত্রেপ্রেনিওরশিপ মানেই নাম, অর্থ, ঝা চকচকে অফিস আর CNBC-র পর্দায় ভেসে ওঠা নয়। প্রকৃত অ্যান্ত্রেপ্রেনিওর হতে গেলে সমালোচনা আর ব্যর্থতার গ্লানি সইবার ক্ষমতা থাকতে হবে। বাহ্যিক গ্ল্যামারটাই আসল নয়, আপনার অ্যান্ত্রেপ্রেনিওর হয়ে ওঠার পেছনে অবশ্যই রয়েছে অনেক গভীর কারণ।

অ্যান্ত্রেপ্রেনিওররা 'Cool Dude :-)' নন 

সবার অ্যান্ত্রেপ্রেনিওর হবার দক্ষতা বা মেরুদন্ড থাকে না। স্মার্ট মানুষরা এটা বোঝেন। আপনি জীবনে সেটা করলেই সফল হবেন যা আপনি আদপে করতে ভালোবাসেন। GSF Accelerator এর প্রতিষ্ঠাতা রাজেশ শাওনির মতে অ্যান্ত্রেপ্রেনিওরিয়াল স্কিল আয়ত্ত করা ভীষণ জরুরি। আনন্দ আরও বললেন, চটজলদি টাকা রোজগার করব ভেবে এই পথে হাঁটার কোনও মানে হয় না। প্রকৃত অ্যান্ত্রেপ্রেনিওররা সমস্যাকে শুধু চিনতে নয়, তার সমাধান করতেও সক্ষম। তাই করুন যেটা আপনি বিশ্বাস করেন। আপনি করতে পারবেন। প্রণয়ের কথা দিয়ে শেষ করি, একটি লেগাসি তৈরি করার নাম হল অ্যান্ত্রেপ্রেনিওরশিপ।