পর্বতারোহিদের বরাভয় ভয়জার
হিমালয়ে অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ,দুই আমেরিকানের ভয়জার প্রতিষ্ঠা।রথ দেখা কলা বেচা একসাথে।প্রকৃতির ক্ষতি না করে প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগানো এবং স্থানীয় মানুষদের সাহায্যে অ্যাডভেঞ্চারের নতুন মাত্রা যোগ।
Saturday August 22, 2015,
2 min Read
যত দিন যাচ্ছে, উষ্ণতার মাত্রা বেড়ে চলেছে ক্রমাগতই। ঠিক এ রকম সময় মনে হতেই পারে একটু যদি ঠাণ্ডার পরশ পাওয়া যায়। আর ভারতে এর প্রকৃষ্ট জায়গা তো রয়েছে। দিগন্ত বিস্তৃত হিমালয় পর্বতমালা। আর তার সঙ্গে যদি যুক্ত হয় অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ, তাহলে? ভয়জার প্রতিষ্ঠাতারা ঠিক এটাই করেছেন। হিমালয়ের বুকে ট্রেকিং থেকে শুরু করে সমস্ত রকম অ্যাডভেঞ্চারের রসদ মজুত আছে তাদের কাছে। কিন্তু এ রকম পর্যটন সংস্থা তো অনেক রয়েছে, ভয়জার এদের থেকে আলাদা কী করে? প্রকৃতির ক্ষতি না করে প্রকৃতিকেই কাজে লাগিয়ে স্থানীয় মানুষদের সাহায্যে অ্যাডভেঞ্চারের যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, তাতেই বাহবা দিতে হয় ভয়জার কর্মকর্তাদের।
২০১৪ সালে বেহজাদ ল্যারি এবং এলিজা মনরো এই সংস্থাটি যুগ্মভাবে শুরু করেন। ট্রেকিং কিংবা অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ নিতে ব্যবহার করেছেন স্থানীয় মানুষদের।এর জন্য হিমালয়ের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে বেরিয়েছেন বেহজাদ। দেখেছেন কিভাবে গাইড হিসেবে প্রতারিত হন সাধারণ মানুষেরা। একটি সাক্ষাৎকারে বেহজাদ জানিয়েছেন, কোনও ট্যুর পরিচালনা করার মাত্র ৪০ শতাংশ এই সব গাইডরা পান। বাকি ৬০ শতাংশ যায় দালালদের খপ্পরে। তাই বেহজাদ প্রথমেই ঠিক করেন এই দালালদের হঠিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন। অবশেষে ২০১৩ সালে আমেরিকার ‘ক্লিনটন ফেলোশিপ’ ছেড়ে এসে নিজের কাজ শুরু করবেন বলে ঠিক করেন। ২০১৪ সালে এলি যোগ দেওয়ার পর এই প্রতিষ্ঠানটি পরিপূর্ণতা পায়। সংস্থাটির প্রধানত ২টি ভাগ। ভয়জার ডট কম এবং ভয়জার ডট অর্গ। ভয়জার ডট কমের সুবাদেই ট্রেকিং-সহ অন্যান্য অ্যাডভেঞ্চারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ভয়জার বর্তমানে ‘লিভ নও ট্রেস’-এর অংশীদার এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল ইক-ট্যুরিজম সোস্যাইটির’ সদস্য। ভয়জার ডট কম কাজ করে স্থানীয় গাইডদের সঙ্গে করে। ভয়জার ডট অর্গ’র কাজ হল পরিবেশের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখা। যেমন কাঠ পুড়িয়ে গরম জল করার বদলে ওয়াটার ফিল্টার ব্যবহার করা। কারণ পাহাড়ের এইসব দুর্গম জায়গায় গ্যাসের চালান দেওয়াটাই খরচসাপেক্ষ। পর্যটকদের ভিড় হলে দিনে প্রায় ১০০ কিলোর বেশি কাঠ ব্যবহার হয়। এই অসুবিধাটা নিয়েও কাজ শুরু করেছেন কর্মকর্তারা। স্থানীয় মানুষদের আয় বেড়েছে এই ভয়জারের সহায়তায়। এই সব গাইডরাই নয়, বর্তমানে ভয়জাররা-ও চেষ্টা করছে এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদকে সঠিকভাবে ব্যবহার করার। স্থানীয় মানুষদের নিয়েই অনেক দুর্গম স্থানে গিয়েছেন বেহজাদ এবং এলিজা। তাঁদের সাহায্যেই চেষ্টা করছেন পর্যটকদেরও ওই সব অঞ্চলে নিয়ে গিয়ে প্রকৃতির একেবারে কাছাকাছি নিয়ে যেতে।ভয়জারের এই চেষ্টাকেই বোধহয় বলা হয় রথ দেখার সাথে কলা বেচার সুযোগ।