নেতৃত্ব দেবেন? জেনে নিন কী কী গুণ দরকার

আপনি কি ছোট একটা স্টার্টআপ টিম চালান? কিংবা বড় সংস্থার কর্মীদের পরিচালন করেন? অথবা ভাবছেন ভবিষ্যতে এরকমই কিছু একটা করবেন! যদি নেতা হতে চান, তা হলে কিছু গুণ আপনার থাকা দরকার। দেখে নিন সেই গুণগুলি কী কী 

নেতৃত্ব দেবেন? জেনে নিন কী কী গুণ দরকার

Monday February 27, 2017,

3 min Read

image


নেতাকে অনেক সময়েই এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয় যা সকলের মনপসন্দ নয়। এটা একটি আংশিক সত্য। তবে নেতাকে কোনও জটিল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে কিছু বিষয় এড়িয়ে চলতে হবেই। অন্যথায় কাজ হবে না।

নেতার স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি থাকা জরুরি। নিজের কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা ও নমনীয়তাও নেতাকে পরিণত হতে সহায়তা করে। এভাবে তিনি অর্জন করেন শ্রদ্ধাও।

মুখোশ পরার দরকার নেই। বরং, নেতা হিসাবে দলের কাছ থেকে বিশ্বাসযোগ্যতা আদায় করাই সর্বাগ্রে প্রয়োজন। যদি সহযোগীরা একশো শতাংশ নির্ভরযোগ্যতা না দেখান তাহলে কাজ হবে না। তবে নেতাকে সর্বদাই নিজের কাজটি ভালোবেসে করা উচিত।

কর্মীরা হলেন মুল্যবোধের প্রতিচ্ছবি। দরকারি যা কিছু করা উচিত তা না করে নেতা যদি দায়সারা হন, তাহলে তাঁর কাজটি যথাযথ হবে না। যদি আপনার কাজের প্রতি সম্পূর্ণ দায়বদ্ধ থাকেন আপনি – বাকিটা হয়ে যাবে।

লোকে সবসময়েই বলে থাকে, তিনি নিজেই নিজেকে তৈরি করেছেন। নেতারা কিন্তু তা নন। তাঁদেরকে চালনা করা হয়। তাঁরা অন্যদের কাছ থেকে উত্সাহ বা প্রেরণা পেয়ে থাকেন। নেতার নিজস্ব বিশ্বাসই নেতাকে উদ্যোগী করে তোলে।

আপনাকে সবসময়েই নিজের কাজকে ভালোবাসতে হবে। সত্যিকারের সাফল্য আসে কাজের প্রতি ভালোবাসা থেকে। এটা দেখার বিষয় নয় যে, আপনি আপনার কাজ থেকে কী পেলেন। নেতা দৃষ্টান্ত গড়েন নিজের জীবনচর্যা অনুসারে।

সৃজনশীলতা শুধুমাত্র সাফল্য নয়, অস্তিত্ব বজায় রাথার পক্ষেও জরুরি। সৃজনশীলতাই প্রকৃতপক্ষে নেতা। চিন্তা, সংগঠন কিংবা প্রযুক্তি – যে কোনওক্ষেত্রেই সৃজনশীলতা আমাদের নেতৃত্ব প্রদান করে থাকে।

দায়বদ্ধতা প্রমাণিত হয় ধৈর্য্যের পরীক্ষায়। মহান লক্ষ্যের পথ কখনও কুসুমাস্তীর্ণ হয় না। পরিণত নেতা উপলব্ধি করতে পারেন চলবার পথে কখন কী ধরনের কৌশল অবলম্বন করতে হবে।

মানুষের সীমায়িত সাধ্য অনেক কিছু আড়াল করে। কিন্ত আপনি নিজে যা সঠিক বলে মনে করেন তাই করবেন। নিজে যা সঠিক বলে মনে করেন কখনও সেই পথ থেকে সরবেন না। দেখবেন আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন।

এটা প্রবাদের মতো সত্য যে, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বড় বড় নেতারা এক-একজন দ্রষ্টা। তাঁরা সবসময়েই লক্ষ্যের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখেন। নেতাদের মন খোলা রাখা ও নমনীয় হওয়াটাই উচিত। আপনার দায়বদ্ধতা এমন হওয়া উচিত যাতে আপনি উন্নতি করতে পারেন ও বজায় রাখতে পারেন সম্পর্কগুলি।

যা করণীয় তা দ্রুত করুন। পিছন ফিরে তাকাবেন না। মনে রাখবেন অনেক সময় ভুল করেও আখেরে আমরা পরবর্তীকালে লাভবান হই।

সবচেয়ে বেশি প্রতিভার স্বাক্ষর রাখে যে দলটি - সেই দলে স্বভাবতই থাকেন সবচেয়ে বেশি প্রতিভাবানরা। তবে এমন একটি দল যদি গড়তে চান যা চূড়়ান্ত সাফল্যলাভ করবে – সেক্ষেত্রে আপনাকে দায়িত্বশীল হতে হবে। অন্যের ওপর দায়িত্ব ন্যস্ত করা সহজ। নিজের দায়িত্ব সর্বতোভাবে পালন করাটা কিন্তু বেশ শক্ত কাজ।

মহান হতে গেলেো আপনাকে ইতিবাচক এক সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। চলার পথে অনেক ওঠাপড়া আছেই। কিন্ত ইতিবাচক মানসিকতাই শেষ কথা। এভাবেই অসম্ভবকে সম্ভব করা হয়।

আপনার অন্তর্দৃষ্টি স্বচ্ছ হলে আপনি সঠিক মানুষ হিসাবে প্রমাণিত হবেন। অন্তর্দৃষ্টি না থাকলে বোকা হিসাবে প্রমাণিত হবেন।

অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানো খুব সোজা। কিন্তু আপনি যদি জানতে চান সঠিক কাজটি কীভাবে করবেন, তাহলে অর্থনীতিবিদ ল্যারি রবিনসনের পরামর্শ শুনুন। তিনি জানিয়েছেন, দায়িত্ব নেওয়াই শেষ কথা নয়। বরং দায়িত্ব পালন করার আগে মনে রাখতে হবে যাতে পরবর্তী ধাপগুলিও ঠিকঠাক থাকে।

অনেক সময়েই আমরা বড় ধরনের ভুল করে থাকি। যা কিনা আমাদের আশাতীত ছিল। আসলে নিজের মনটিকে তৈরি করা দরকার। সেইসঙ্গে প্রস্তুত হওয়া দরকার খুব খারাপ পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্যেও।

যদি কোনও ব্যক্তি নিজে কী চান সেই সম্পর্কে সচেতন না থাকেন, সেটা তাঁর দোষ। যোগাযোগের মাধ্যমেই সবচেয়ে ভালোভাবে সমন্বয় রক্ষা করা যেতে পারে। সবসময়েই মানুষকে বলুন, তাঁদের আইডিয়াগুলিকে প্রকাশ করতে। এই সুযোগ দেওয়া হয় বলেই প্রতিভাবানরা আমাদের সঙ্গে কাজ করেন।

সঠিক নেতৃত্ব তাঁর দলের সকলের ভিতর থেকেই নেতৃত্বগুণ জাগিয়ে তুলতে পারেন। মনে রাখবেন, আপনার দলটি একাই যাবতীয় কর্তব্য পালন করতে পারবেন না। আপনি একাই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না। কিন্তু আপনার অফুরান প্রাণ শক্তি ভীষণ জরুরি। যা আপনাকে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে।