মহিলাদের ইটভাঁটায় সাফল্যের নবজাগরণ

মহিলাদের ইটভাঁটায় সাফল্যের নবজাগরণ

Monday February 22, 2016,

2 min Read

নবজাগরণ স্বনির্ভর সংঘ। তমলুকের শ্রীরামপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের এই স্বনির্ভর সংঘ স্থানীয় মহিলাদের কাছে ঠিক যেন দখিনের খোলা জানালা, যেখান দিয়ে ফুরফুরে হাওয়ার মত ঢুকে পড়ে একরাশ আশা, মাথা উঁচু করে বাঁচার স্বপ্ন। কারণ এই নবজাগরণ স্বনির্ভর সংঘই তাদের পথ দেখিয়েছে কীভাবে স্বনির্ভর হতে হয়। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের অধীনে সংঘের তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠল আস্ত এক ইটভাটা। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই দিয়ে তৈরি হবে ইট। আর এই ইটভাটায় ভর করে আর্থিক স্বাধীনতার স্বাদ পেতে চলেছেন নবজাগরণ স্বনির্ভর সংঘের মহিলারা।

image


সংঘের মহিলা সদস্যরা এতদিন বিচ্ছিন্নভাবে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই দিয়ে ইট তৈরি করতেন। জেলাশাসক অন্তরা আচার্য জানান, তমলুক ব্লকের শ্রীরামপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা ২৮টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের নিয়ে নবজাগরণ স্বনির্ভর সংঘ গড়ে উঠেছিল। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই থেকে ইটভাটা তৈরির জন্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প থেকে ৩২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। ইটভাটার পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য ২২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি ১০লক্ষ টাকা ইটভাটার মূলধন এবং নানারকম খরচের জন্য রাখা হয়েছে।

নবজাগরণ স্বনির্ভর সংঘের দলনেত্রী কবিতা দিন্দা জানান, ‘স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ২০ জন মহিলা বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রর ছাই থেকে ইট তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন। এরাই নতুন ইটভাটায় ইট তৈরির কাজ করবেন। এই ভাটায় কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই থেকে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার ইট তৈরি হবে’। এতদিন ধরে স্বনির্ভরগোষ্ঠীর মহিলারা বড়জোড়ার ভাটা থেকে ছাই দিয়ে ইট বানাচ্ছিলেন। এবার নিজেদের এলাকাতেই মহিলারা ইট বানাচ্ছেন। কবিতা জানান, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলারাই বাকীদের প্রশিক্ষণ দেবেন। আর এই গোটা কর্মকাণ্ডে জেলা প্রশাসনকে পাশে পেয়েছে নবজাগরণ স্বনির্ভর সংঘ। জেলাশাসক অন্তরা আচার্য ইতিমধ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন, ইট বিক্রি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। কারণ, জেলা প্রশাসন সব ইট কিনে নেবে। এইসব ইট জেলার ইন্দিরা আবাসন, গীতাঞ্জলি আবাসন প্রকল্পর কাজে ব্যবহার করা হবে।

এতো সবে শুরু। তমলুকের নবজাগরণ স্বনির্ভর সংঘের মহিলারা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই থেকে ইটভাটা তৈরি করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। এবার গ্রামের পিছিয়ে থাকা মহিলাদের পথ দেখাবেন তাঁরা। নবজাগরণ হবে আশেপাশের আরও গ্রামের মহিলাদেরও। শুধু আশেপাশের গ্রাম কেন, সারা দেশের পিছিয়ে থাকা মহিলাদের উৎসাহিত করবে নবজাগরণ।