একটি বই এবং একটি সোনালি ফাঁদ...

একটি বই এবং একটি সোনালি ফাঁদ...

Tuesday December 15, 2015,

7 min Read

২০০০ সালের ১৫ মার্চ, ডট-কম বুদ্বুদের পতন শুরুর ঠিক পাঁচদিন পর প্রকাশিত হয় “ইব়্যাশনাল এক্সুবারেন্স”। লেখক রবার্ট শিলার। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের বিখ্যাত অধ্যাপক। সাম্প্রতিককালের সবথেকে দূরদর্শী ও সময়োপযোগী বইটি সেই সময়ের স্টকমার্কেটের অতি মূল্যায়নের বিষয় নিয়ে লেখা। পরের মাসগুলিতে গোটা দুনিয়া দেখেছে হুবহু মিলে গেছে শিলারের ভবিষ্যদ্বানী। বাজারের দ্রুত নাটকীয় পতন হয় আর শিলার একজন বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন দূরদ্রষ্টা রূপে স্বীকৃতি পান। কাশ্যপ দেওরা ও তাঁর বই গোল্ডেন ট্র্যাপ, ভারতীয় স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের ক্ষেত্রে প্রায় সেই জায়গাতেই পৌঁছতে চলেছে। 

এসডিএ বাজারের ইনভেস্টোপ্যাড অফিসে বসে আমি প্রথম এই বইটার ব্যাপারে শুনি। ইনভেস্টোপ্যাডের প্রতিষ্ঠাতা রোহন মালহোত্রা এই বইটা পড়ার কথা বলেন। বইয়ের নামটা আমার একটু খেলো লেগেছিল, তবে “ভারতীয় স্টার্টআপে অতিরিক্ত বিনিয়োগের ভিতরের কথা”, ট্যাগলাইনটি আমাকে আকৃষ্ট করে। স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে চারবছর ধরে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত থেকে, প্রথমে একজন শুরুর দিকের কর্মী হিসেবে, তারপর ব্যর্থ উদ্যোগপতি হিসেবে, এবং এখন একজন ভিসি হিসেবে, ভিতরের কথা নিয়ে আমার বিশেষ উত্সাহ রয়েছে। তবে বইটা নিয়ে সংশয়ই ছিলাম, চটুল আলোচনা ও চারদিকের ফিসফাসের থেকে বেশি কিছু এই বইয়ে থাকবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ ছিল।

কাশ্যপ দেওরা

কাশ্যপ দেওরা


বদলে আমি পেলাম গত ২০ বছরে ভারতের স্টার্টআপের উত্থানের ইতিহাসের এক চুলচেরা বিশ্লেষণ। আমি খুব কমই এরকম লেখক দেখেছি যিনি এত সুসংহতভাবে বিভিন্ন বিষয়গুলিকে একটি আখ্যানে ধরতে পারেন, এবং তা একই সঙ্গে সুপাঠ্য ও বিশ্লেষণধর্মী। আমার এই বইয়ের সমালোচনার একমাত্র উদ্দেশ্য পাঠককে এই বইটি পড়তে উৎসাহিত করা। পাশাপাশি আমি আমার নিজের কিছু গল্প বলব, যা বিভিন্ন বিষয়ে লেখকের অবস্থানকে সমর্থন করে। আপনি যদি ভারতীয় স্টার্টআপ ইকো সিস্টেমের একজন ছাত্র হন, তাহলে এটা আপনার অবশ্য পাঠ্য।

বইটি চারটি ভাগে ভাগ করা এবং সময়ানুক্রমিকভাবে সাজানো। প্রথম অংশটি দেওরার ভাষায় দ্য ইন্টারনেট ওয়েভ, ১৯৯৪ এর ইন্টারনেটে ব্যবসার শুরু থেকে ২০০২ এর ইন্টারনেট বুদ্বুদ ফাটার সময়কালকে ধরা হয়েছে এই অংশে। দ্বিতীয় অংশ যার নাম দ্য গ্লোবালাইজেশন ওয়েভ-এ রয়েছে এর পুনরুদ্ধার ও ২০০৯ এ ফের পতনের কথা। তৃতীয় ভাগে রয়েছে সাম্প্রতিককালের ২০১০ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ঘটনাবলী, দেওরা যাকে বলেছেন দ্য স্মার্টফোন ওয়েভ। শেষভাগে দেওরা ইন্ডিয়ান স্টার্টআপের ভবিষ্যত কোনদিকে যাচ্ছে সে বিষয় আলোকপাত করার চেষ্টা করেছেন। আমার জন্য বইটি চারটি পদের খাবারের মতো, তৃতীয়ভাগটি মূল পদ। বহুদিন পর এত ভাল তথ্যভিত্তিক গদ্য পড়লাম।

শুরুর কথা-স্মার্টফোন পূর্ববর্তী যুগের ইন্টারনেটের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

গল্পের শুরু ১৯৯৪ তে, দেওরা যখন ক্লাস টেনের পরীক্ষা দেওয়ার পর ভাবছেন জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন কি না। ঠিক তখনই পৃথীবির অপর প্রান্তে মার্ক অ্যান্ড্রেসেন (নেটস্কেপ), জেরি ইয়াং (ইয়াহু) এবং জেফ বেজোস (অ্যামাজন) তাঁদের নিজের নিজের কোম্পানি শুরু করছেন বা শুরু করার মুখে। প্রথম অংশের বেশিরভাগটা জুড়েই রয়েছে দুটি স্টার্টআপ, জঙ্গলী কর্প ও রাইটহাফ.কমের গল্প।

তিনজন ভারতীয় পিএইচডির ছাত্র-আশিষ গুপ্ত, আনন্দ রাজারমন ও ভেঙ্কি হরিনারায়ন ও ধারাবাহিকভাবে উদ্যোগপতি রাকেশ মাথুর মিলে শুরু করেন জঙ্গলী। এই অধ্যায়ে বর্ণনা করা হয়েছে কীভাবে ভারতীয় স্টার্টআপের এই পথিকৃতরা লেনদেনের সার্চ ইঞ্জিন জঙ্গলী তৈরি করেন, যার মাধ্যমে গ্রাহকরা তালিকা থেকে বিভিন্ন ফিল্টারের মাধ্যমে ছেঁকে বেছে নিতে পারেন ও শেষে কী ভাবে আমাজন তা অধিগ্রহণ করে।

পরে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠাতাই অ্যন্ত্রপ্রনঁয়্যার ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেন। আনন্দ ও ভেঙ্কি একসঙ্গে মিলে শুরু করেন ক্যামব্রিয়ান ভেঞ্চার্স ও কসমিক্স। রাকেশ মাথুর বিভিন্ন কোম্পানি তৈরি করেন ও বিক্রি করেন, বর্তমানে তিনি ফ্লাইহুইল সফটওয়্যার নামে একটি কোম্পানি চালান। এঁদের সম্পর্কে স্টার্টআপের জগতের বিভিন্ন অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কাছে আমি আগেই শুনেছি, প্রত্যেকের কাছেই শ্রদ্ধেয় এঁরা. কিন্তু তাঁদের গল্প পড়ে বুঝতে পারলা কী করে তাঁরা এখানে পৌঁছেছেন।

এই একই সময় নাগাদ, দেওরা ও তাঁর সহপাঠীরা ডটকম বিস্ফোরণের যুগে নিজেদের কিছু করার কথা ভাবছেন. ১৯৯৯-২০০২, দেওরা (বম্বে আইআইটি-তে আন্তঃকলেজ প্রযুক্তি উত্সব টেকফেস্টও শুরু করেন তিনি) ক্যাম্পাসে তাঁর প্রথম স্টার্টআপের পরিকল্পনা করছিলেন এবং এরজন্য রাকেশ মাথুরের থেকে এঞ্জেল ফান্ডিংও সংগ্রহ করেন তিনি। রাইটহাফ সেই সময় প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যের সমস্যা এবং বাইরের বাজারের চাপ ইত্যাদির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল, যে ভয়ঙ্কর মানসিক অবস্থা একমাত্র একজন উদ্যোগপতির পক্ষেই বোঝা সম্ভব। রাকেশ মাথুরের তত্কালীন কোম্পানি পার্পল যোগী, কিছুদিন পর কোম্পানিটি অধিগ্রহণ করে, পরবর্তীকালে আবার ২০০১ এর ডট-কম বুদ্বুদ ফাটার পর এই কোম্পানিটিও সমস্যার মধ্যে পরে। দেওরা এই সবকিছুই সাবলীলভাবে বলে চলেন তাঁর বইতে, যা সাধারণত কেউ নিজের ব্যর্থতার কথা বলতে গিয়ে করতে পারে না।

একজন, আইআইটিতে পড়েছেন, ছাত্রাবস্থাতে প্রযুক্তি উত্সব শুরু করেছেন এবং নিজের ফান্ডেড স্টার্টআপ শুরু করেছেন, এত অল্প বয়সে এই সাফল্য অর্জন আমাকে খুবই শ্রদ্ধাশীল করে। প্রথমভাগ শেষ হতে হতে আমি ছাত্র উদ্যোগপতি দেওরার ভক্ত হয়ে গেছিলাম।

টাইগার ও তাদের 'দিস অ্যান্ড দ্যাট'

জানুয়ারি ২০১৪ থেকে সেপ্টেম্বর ২০১৫ এই সময়কালের ভারতের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের অবস্থা আমাকে খুবই চিন্তিত করেছে। উপভোক্তা কেন্দ্রিক মোবাইল স্টার্টআপে বিনিয়োগের সুনামি শুরু হওয়ার পর আমার নিজের স্টার্টআপ ম্যাগনেটওয়ার্কস চালিয়ে যাওয়াই মুশকিল হয়ে পড়ে। একজন উদ্যোগপতি হিসেবে সেই সময় যখন দেখতাম বিনিয়োগকারীরা আবারও একটি খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থাকে টাকা দিচ্ছে রাগ হত। পাশাপাশি নিজের ইন্টারনেট অফ থিঙস্ তৈরির ব্যবসায় বিনিয়োগ না পাওয়ার হতাশা ছিল।

আমাকে স্টার্টআপটি বন্ধ করে দিতে হয়, ও আমি ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট হতে বাধ্য হই, কিন্তু আমার রাগ ও হতাশার কোনো উত্তর এই অধ্যায়টি পড়ার আগে অবধি আমি পাইনি।

দেওরা খুবই শান্তভাবে যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দেন টাইগারের উদ্দেশ্য, তাদের হেজ ফান্ডের ইতিহাস, তাদের কয়েক শো মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ইত্যাদি। প্রত্যেকেই টাইগারের বিনিয়োগকে ভিসি বিনিয়োগ বলে ভুল করেছিল, কিন্তু আদতে তা ছিল একটি সুনির্দিষ্ট গবেষণার ভিত্তিতে পাই পয়সার হিসেব করে ব্যবসা। টাইগারের ভাষায় এটা ছিল 'দিস অ্যান্ড দ্যাট ' বিনিয়োগ। যেখানে দিস ছিল উন্নত বাজারে একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি ও দ্যাট ছিল একটি নতুন তৈরি হওয়া বাজারে এর তুলনীয়।

টাইগার ও লী ফিক্সেল সম্পর্কে বিভিন্ন উদ্যোগপতির কাছে আমি যা শুনেছিলাম সেটাই শক্তপোক্ত যুক্তিক্রমের ওপর দাঁড় করিয়েছেন দেওরা। লী খুব দ্রুত এগোয়ে, বিদ্যুতের গতিতে। তাঁর সঙ্গে বিনিয়োগের কথাবার্তা সাধারণত হত একঘন্টা, তারপর তিনি একটি আধপাতার শর্ত-পত্র দিতেন, যার উত্তর দিতে হবে ৪৫ মিনিটের মধ্যে। এইটুকু সময়ের মধ্যে আপনাকে হ্যাঁ অথবা না বলতে হবে। বোর্ডে জায়গা পাওয়া বা অন্যান্য যে বিষয়গুলি নিয়ে ভিসিরা অত্যন্ত চিন্তিত থাকে, সেগুলিকে পাত্তা দিতেন না তিনি। তিনি শুধু আপনার কোম্পানির সিংহভাগ (নাকি বাঘ বলব) শেয়ার পেতে আগ্রহী, এবং সেটা তখনই সেই মুহূর্তে।

এই অধ্যায় চৌপাতি বাজারের গল্পও বলেছেন দেওরা। কোম্পানিটি দেওরা খুলেছিলেন জীশান হায়াতের সঙ্গে, যে কি না এখন ভারতের সবথেকে ফলপ্রসূ এঞ্জেলদের মধ্যে একজন। কিশোর বিয়ানির ফিউচার গ্রুপ পরবর্তীকালে চৌপাতি অধিগ্রহণ করে। স্টার্টআপের শুরু ও পরে দেওরা ও বিয়ানির মধ্যে শুদ্ধ বেনিয়া পদ্ধতিতে লেনদেনে গল্প আজ অবধি শোনা সব অধিগ্রহণের গল্পের থেকে বেশি মজার।

তৃতীয় অধ্যায়

এই দীর্ঘ পুস্তক সমালোচনায় আগেই আমি যেমন বলেছি, বইটির তৃতীয় অংশটিতে এটিকে এর আসল রূপে পাওয়া যায়। দেওরা ভারতীয় ইকোসিস্টেমের একটি দুর্ভাগ্যজনক দিকের কথা তুলে ধরেছেন যা খুব কম সংখ্যক বিনিয়োগকারীই মানতে রাজি। তিনি লিখেছেন মাত্র তিনটি কোম্পানি- মেকমাইট্রিপ, জাস্ট ডায়াল এবং নকরি সত্যিই এক্সিট অর্জন করতে পেরেছে। তার মানে বাকি সব এক্সিটই আসলে বড় কোম্পানি দ্বারা অধিগ্রহণ ছাড়া আর কিছুই নয় (যার মানে বিনয়োগকারীদের টাকা ডান পকেট থেকে বাঁ পকেটে যাওয়া), বা অধিগ্রহণ ও ভাড়া করা যেমন ফেসবুক লিটলআইল্যাবসকে করেছে বা ট্যুইটার জিডায়ালকে।

এর পিছনে দুটো বিষয় কাজ করেছে, খারাপ একক অর্থনীতি ও হাস্যকর মূল্যায়ন। দেওরার মত পরিষ্কারভাবে আর কেউ এটা ব্যাখ্যা করেনি। ২০১৪-১৫ এর ফ্লিপকার্ট, আমাজন ও চিনের জেডি.কমের ব্যবসা, লাভ ক্ষতি, বিনিয়োগের হিসেব কষে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে ব্যবসায় সবথেকে বেশি মার খাওয়ার পরও বিনিয়োগ সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে ফ্লিপকার্ট। আমাজন ৮৯ বিলিয়ন ইউএস ডলার আয় করেছে, প্রতি লেনদেনে লাভ ২ শতাংশ, এর মূল্যায়ন হয়েছে ১৪০ বিলিয়ন ডলার. জেডি.কমের আয় ১৯ বিলিয়ন ডলার, প্রতি লেনদেনে ক্ষতি ২ শতাংশ, মূল্য নির্ধারিত হয়েছে ৩৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার। ফ্লিপকার্টের আয় ৪৫০ মিলিয়ন ইউএস ডলার, প্রতি লেনদেনে ক্ষতি ৩০ শতাংশ, মূল্য নির্ধারিত ১২.৫ ইউএস ডলার।

কীভাবে তারা এত বিনিয়োগ পেল. দেওয়া পোকার গেমের উগাহরণ দিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন, যা খেলোয়াড়রা হল টাইগার, সফটব্যাঙ্ক ও আলিবাবা। বিভিন্ন বড় কোম্পানিগুলির উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলার পাশাপাশিই আরও একটা জিনিস স্পষ্ট করেছে দেওরা, ভারতের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের মালিক ও পরিচালক হল বিদেশীরা, এবং তাদের কাছে এটি একটি ছায়া যুদ্ধ।

আরও নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যে সমৃদ্ধ এই অধ্যায়ে, পুরো বিষয়টি দায়ী কাউকেই ছাড়েননি দেওরা। বিজ্ঞাপন থেকে আয় কমে যাওয়ার ভয়, গণ্যমাধ্যমগুলি তথ্যের সত্যতা বিচার বা করেই বিভিন্ন বিনিয়োগের খবর ছেপে গেছে অন্ধের মতো। একই সময় আসল চিত্রটা তুলে ধরার জন্য অনুসন্ধান মূলক সাংবাদিকতার নামে মিথ্যাচার করেছে। মিন্টের আশিষ মিশ্র ও ইওরস্টোরির জয় বর্ধন অল্প কয়েকজন ব্যতিক্রমীর মধ্যে পড়ে।

দেওরার তৃতীয় কোম্পানি চলোর গল্পও রয়েছে এই বইয়ে, পরে যে কোম্পানি ওপেনটেবল অধিগ্রহণ করে। দেওরা বলেন চৌপাতির ভারতীয় কোম্পানি ফিউচার গ্রুপ দ্বারা অধিগ্রহণের সঙ্গে কতটা পার্থক্য ছিল এই ক্ষেত্রে। গোটা বইতে গসিপ পেয়েছি শুধু একটা জায়গাতেই, যেখানে লেখক রাহুল যাদবের সঙ্গে তাঁর নিজের কথোপকথন তুলে দিয়েছেন, স্টার্টআপের গসিপ কলামনিস্টের জন্য খনি এটি।

শেষপাতের মিষ্টিমুখ ও উপসংহার

দেওরা বইটি আমার আরও এক প্রিয় লেখক দেবদত্ত পট্টনায়কের শিক্ষা থেকে ধার নিয়ে, একটি দার্শনিক বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে শেষ করেছেন। এরপর কয়েকটি ব্যবসার মডেলের কথা তিনি লিখেছেন, যেগুলি তাঁর বিশ্বাস সত্যিকারের ভারতীয় ইউনিকর্ন হয়ে উঠতে পারবে। বইটি সম্পর্কে আমার যদি কোনো সমালোচনা থাকে তাহলে সেটা এই জায়গায়, এই অধ্যায়টি আমার খানিকটা কৃত্রিম মনে হয়েছে, তিনি যে ব্যবসার মডেলগুলির কথা বলেছে তাতে যথেষ্ট উপাদান নেই। কিন্তু এটা নিয়ে আলোচনা অকারণ খুঁতখুঁতানি হবে। আনন্দ রাজারাম যে তাঁকে ভারতীয় স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের হেরোডোটাস বলেছেন তা যথার্থই। দেওরাজী, আইআইটিতে যেমন বলে, ফিল আ গ্যায়ি বস।

(অনুবাদ-সানন্দা দাশগুপ্ত)