কলকাতায় শিক্ষার দিশা দেখাচ্ছে বিচিত্র পাঠশালা

কলকাতায় শিক্ষার দিশা দেখাচ্ছে বিচিত্র পাঠশালা

Monday September 14, 2015,

2 min Read

বিচিত্র পাঠশালাই আমার চোখ খুলে দিল। বললেন শিয়ালদহ লোরেটো ডে স্কুলের ইংরেজির শিক্ষিকা রোশনি দাশগুপ্ত। ওরিয়েন্টাল সেমিনারি স্কুলের ছাত্র রাজীব কোটাল বললেন, কখনই আমি ভাবিনি সিনেমা বানাতে পারব। বিচিত্র পাঠশালাই আমাকে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়। ‌আড়িয়াদহের টেকনো ইন্ডিয়া স্কুলের অধ্যক্ষা জয়িতা দাশগুপ্তের মতে, বিচিত্র পাঠশালা ক্লাসরুম অনেক সম্ভাবনা তৈরি করে।

image


শনি, রাজীব, জয়িতা- সবাই আসলে একটা বিষয়ে একমত, বিচিত্র পাঠশালার কর্মশালায় নতুন ভাবনার জন্ম হয়। বিচিত্র পাঠশালা এক অভিনব ক্লাসরুম। এই ক্লাসরুমে বিষয়শিক্ষা হয় ছবি, ভিডিও আর সিনেমা দেখিয়ে। ২০১০ সাল থেকেই ছাত্র-শিক্ষকদের উৎসাহিত করতে এ ধরনের ক্লাসরুম শুরু করেছে বিচিত্র পাঠশালা। বিজ্ঞান আর কারিগরির যুগে এটাই এক নতুন পন্থা। গত দশ বছর ধরে, শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগের (আইসিটি) প্রসার ঘটেছে। প্রথম ইউপিএ সরকার নিয়ে আসে এই ধারণা। একে বলা হয় কন্টিনিউয়াস কমপ্রিহেনসিভ ইভলিউশন (সিসিই)। ২০১২ সালের জুলাই মাসে তৈরি হয়েছিল এই বিচিত্র পাঠশালা। এর প্রথম উদ্দেশ্য ছিল ছবি দেখিয়ে ছাত্রদের মধ্যে আরও আকর্ষণ বাড়ানো। এর দ্বিতীয় উদ্দেশ্য ছিল, ছাত্রদের আরও বেশি করে মাধ্যম-মুখী করে তোলা। বললেন পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শুভা দাস মল্লিক।

image


আমরা আশাবাদী, নানা ধরনের চলচ্চিত্র, ভিডিও ক্লিপিংস বিষয়টাকে আরও চিত্তাকর্ষক করে তুলবে। আমরা প্রতিদিন শিক্ষা নিচ্ছি, নানা ধরনের জনপ্রিয় ছায়াছবি থেকে। শিক্ষা নিচ্ছি তথ্যচিত্র থেকে। আমরা কর্মশালার আয়োজন করছি ছাত্র-শিক্ষকদের নিয়ে। আমাদের এই পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ২০১০ সালে আমাদের প্রথম কর্মশালা হয়েছিল কলকাতায়। বিভিন্ন স্কুল থেকে ৫০ জনের বেশি শিক্ষক এসেছিলেন বিচিত্র পাঠশালার কর্মশালায়। বললেন শুভা দাস মল্লিক।

image


২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৫টি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। কলকাতার অধিকাংশ নামী স্কুলের ছাত্র-শিক্ষকরা এসেছিলেন বিচিত্র পাঠশালার কর্মশালায়। শুভা বলেন, বিচিত্র পাঠশালা পূর্ব ভারতের সবথেকে পুরোনো লাইব্রেরি। এক হাজার বই এবং জার্নাল আছে। সংগ্রহশালায় রয়েছে এক হাজারের বেশি সিনেমা। গোটা বিশ্বে এ ধরনের তথ্যচিত্র, জনপ্রিয় সিনেমা, শিক্ষা বিষয়ক চলচ্চিত্র জনপ্রিয় হয়েছে।

একটা সিনেমা ছাত্রদের ভাল চলচ্চিত্র তৈরিতে উৎসাহী করে। একট ভাল সিনেমা ক্লাসরুমের মধ্যে ভাষা, বিজ্ঞান, অঙ্ক, ইতিহাস, ভূগোল আর জীবনশৈলী শেখায়। দেশের বিভিন্ন বোর্ডের স্কুলের সিলেবাস পড়ুয়াদের মধ্যে জনপ্রিয় করতে পরিকল্পনামাফিক নির্দিষ্ট চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে।

আজ কারিগরি শিক্ষার যুগ। আমাদের জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে গেছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান যেমন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, ধ্বংসের দিকেও তেমন ঠেলে দিচ্ছে। আজ হাতের মুঠোয় পৃথিবীর সব খবর। পড়ুয়াদের ঝোঁক বাড়ছে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিচিত্র পাঠশালা লড়াই করছে এই প্রবণতা থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের বের করার। ইন্টারনেট থেকে সঠিক তথ্য নিয়ে একজন শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাদান করতে পারেন। সিনেমা চলচ্চিত্র, ভিডিও ক্লিপিংস একজন শিক্ষককে বাস্তবমুখী করে তোলে। পড়ুয়াদের আরও বিজ্ঞানমুখী করে তুলে পারেন তিনি।