একদিকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল ম্যানেজমেন্টে’ স্নাতকোত্তর, অন্যদিকে সালসা নর্তকী। কিন্তু ব্যবসা শুরু করেছেন ফেলে দেওয়া জিনিসের পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করার।
তাঁর ‘আপসাইকেল প্রোজেক্ট’ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমিশি শাহ জানালেন, তাঁর এরকম অদ্ভুত কেরিয়ার বেছে নেওয়ার কারণ। লন্ডনে স্নাতকোত্তর পড়ার সময় একটি ক্লাস করেছিলেন আমিশি, যাতে অনেক ধরনের ব্যবসার উল্লেখ ছিল, যা অর্থনৈতিক, সামাজিকভাবে লাভজনক। পরিবেশ রক্ষায় যথেষ্ট সহায়ক।
আমিশির ‘আপসাইকেল প্রোজেক্ট’ ফেলে দেওয়া গ্লাস, প্লাস্টিক এবং অন্যান্য জিনিসকে আবার ব্যবহারের উপযোগী বানায়। ২০১৩ সালে লন্ডন থেকে ভারতে ফেরার পর এই নিয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করেন আমিশি। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার মতো সুযোগ এবং সময় কোনটাই তাঁর ছিল না। অন্ধকারে তির ছোড়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। কিন্তু এই সময় তাঁর সালসা নাচ শেখার অভিজ্ঞতা কাজে দেয়।
আমিশি বেশ অনেকগুলো আন্তর্জাতিক সালসা প্রতিযোগিতায় প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। এতে তাঁর অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল এবং মনে বিশ্বাস-ও এসেছিল কিভাবে নিজের প্রস্তাব অন্যের সামনে আনতে হয়। যাই হোক, নিজের কিছু জমানো দিয়েই ব্যবসা শুরু করেন আমিশি। যেহেতু পরীক্ষা-নিরীক্ষার দিকে যাননি, তাই ব্যবসা শুরু করার খরচটাও কমই ছিল।
প্রথমদিকে স্থানীয় ময়লা ফেলার লোকটাকেই জোগার করেছিলেন জিনিসপত্রের যোগান দেওয়ার জন্য। পরে অবশ্য আরও কয়েকজনকে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত করেন। প্রথম দিকে ফেলে দেওয়া গ্লাস নিয়েই ব্যবসা শুরু করেছিলেন আমিশি। কারণ আবর্জনায় গ্লাস পাওয়াটা সহজলভ্য ছিল।
বর্তমানে ‘আপসাইকেল প্রোজেক্ট’ একটি ক্যাটালগ বের করেছে এবং ইলেকট্রনিক্স কোম্পানীগুলোর কাছে পৌঁছে দিয়েছে। যাতে ‘কি-বোর্ডের’ ‘কি ফ্রেম’, ‘মাদার বোর্ডের’ ‘কার্ড হোল্ডার’ খুব কম দামে বিক্রির কথা বলা রয়েছে।
আমিশি জানিয়েছেন, পুনর্ব্যবহারের যোগ্য করার পর এক একটির এক এক রকম ডিজাইন দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই হায়দ্রাবাদ, পুনে, দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, গুরগাঁও, নাগপুরে ‘আপসাইকেল প্রোজেক্ট’-এর জিনিসের চাহিদা বেড়েছে। আমিশির স্বপ্ন ব্যবসাটাকে আরও বড় করে বিশ্ববাজারে ‘আপসাইকেল প্রোজেক্ট’-এর চাহিদার বৃদ্ধি করা।