দেশের ‘দশে’ কলকাতার ‘Capital Numbers’

দেশের ‘দশে’ কলকাতার ‘Capital Numbers’

Thursday December 24, 2015,

2 min Read

এবঙ্গ দেশ নাকি খানিকটা নরম-সরম। কিঞ্চিৎ.. কবি কবি। চিন্তায় গতি থাকলেও ব্যবসায় গতি নেই। ক্রিটিকরা বলে থাকেন দোষটা প্রকৃতির। পলিকণায় সমৃদ্ধ এবঙ্গের মাটি এত উর্বর, এত অনায়াসে শস্য ফলানো যায় যে পরিশ্রমের ইচ্ছেটাই মরে যায়। কিলার ইনস্টিংক্ট কিংবা আগ্রাসান বিনা ব্যবসা অচল, অথচ বঙ্গদেশে সেই মানসিকতার নিদারুণ ঘাটতি। ব্যবসা হবে কী করে!

image


সমালোচকদের যোগ্য জবাব দিয়ে দেশকে আস্ত একটা ব্যাঙ্ক (বন্ধন) উপহার দিয়েছেন এ বাংলার এক উদ্যোগপতি। সাফল্যের বিজয়মঞ্চে বাংলার পতাকা উড়ল আরও একবার। কলকাতার ক্যাপিটাল নাম্বারস ইনফোটেক প্রাইভেট লিমিটেড বনে গিয়েছে দেশের সেরা দশ স্টার্ট আপের অন্যতম।

আসা যাক সিআইআই-এর কথায়। দেশের সেরা বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিকে পুরস্কৃত করার কাজ বণিকসভা সিআইআই শুরু করেছিল ২০১৪ সালে। এর পরের বছর সংযোজিত হয় নতুন বিভাগ - ‘টপ টেন প্রমিসিং স্টার্ট আপ‌’। দিল্লিতে জাঁকজমক অনুষ্ঠানের মধ্যে ৪৫টি পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। রেগুলার ক্যাটেগরিতে ভারত সেরা – জাইডাস ক্যাডিলা। সিআইআই-এর দাবি তাদের বাছাই প্রক্রিয়া নিখুঁত। নির্মম। এবং নিরপেক্ষ। 

খড়গপুর, কানপুর, দিল্লি আইআইটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর, বিশিষ্ট শিল্পপতি, বিভিন্ন ক্ষেত্রের শিক্ষাবিদদের নিয়ে গড়া ঝকঝকে জুরি টিম। যাদের দক্ষতা সীমাহীন। মননের চিন্তায় যারা এগিয়ে। বাণিজ্যিক সম্ভাবনা, উদ্ভাবনী শক্তি, কিংবা সৃজনশীলতার মতো দিকগুলি খতিয়ে দেখে তারা বেছে নিয়েছেন ভারতসেরা প্রতিষ্ঠানগুলো। আর রাজধানী দিল্লির সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে কলকাতার ‘ক্যাপিটাল নাম্বারস’। হাতে তার পুরস্কার। সেরা দশের স্টার্ট আপের অন্যতম বনে গিয়েছে ‘ক্যাপিটাল নাম্বারস’।

ক্যাপিটাল নাম্বারস ইনফোটেক প্রাইভেট লিমিটেড পুরস্কারের যোগ্য কিনা বিবেচনা করার জন্য তাদের নিয়ে জুরি বোর্ড নাড়াঘাটা করেছে বিস্তর। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ‌দেখছে তাদের প্রজেক্ট কতটা সফল? উদ্ভাবনী শক্তিই বা কতটা? হাজারো বিচারে শয়ে শয়ে স্টার্ট আপকে টেক্কা দিয়ে দেশের সেরা দশে ঢুকে পড়েছে কৃষিক্ষেত্রে যুক্ত সংস্থা ‘অনন্যা সিডস’, আর্থিক পরিষেবা সংক্রান্ত সংস্থা ‘ফিনমার্ট অ্যাডভাইসরি প্রাইভেট লিমিটেড’ এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এবং প্রোডাকশনের সঙ্গে যুক্ত কলকাতার ‘ক্যাপিটাল নাম্বারস’। তবে কি শিল্পবন্ধ্যা তকমা কাটিয়ে একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ?

সাফল্যের স্বীকৃতি পেয়ে ‘ক্যাপিটাল নাম্বারস’-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকুল গুপ্তা উচ্ছ্বসিত ঠিকই তবে সংযত। বললেন, ‘‘এই পুরস্কারের মধ্যে দিয়ে আমরা জাতীয় স্তরে প্রতিষ্ঠা পেয়েছি। ব্যবসার জগতকে আরও ভাল কিছু দেওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করব।’’

ক্লায়েন্টদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে ক্যাপিটালের ‌দাবি ডিজিটাল প্রোডাকশনের জন্য ইন হাউস স্টাফিং-এর দরকার নেই। ক্যাপিটাল নাম্বারস এর কর্মীরাই সেই সংস্থার যাবতীয় কাজ করে দেন। এতে সংস্থার খরচ কমে কুড়ি থেকে চল্লিশ শতাংশ। কমে দায়িত্বও। আর এই সুরাহা করে দেওয়াই ক্যাপিটালের ইউএসপি। মুকুলের দাবি, ক্যাপিটাল নাম্বারসের কর্মীরা প্রতিভাবান। সিআইআই-এর পুরস্কার পাওয়ার পর তারা আরও বেশি চাঙ্গা। আরও উত্সাহী এবং আরও কর্মদ্যম।

বলা হয় এ বঙ্গদেশে বাণিজ্য বাগিচায় কুঁড়ি ধরে অনেক। কিন্তু ফুল হয়ে ফোটে মাত্র দু-একটা। ‘ক্যাপিটাল নাম্বারস’ কিন্তু জোর গলায় বলছে আমরাও পেরেছি, পারবে বাংলাও।