শক্তিক্ষেত্রে দেশে এগিয়ে কর্নাটক, নজর কাড়ছে বিদেশের

শক্তিক্ষেত্রে দেশে এগিয়ে কর্নাটক, নজর কাড়ছে বিদেশের

Sunday February 07, 2016,

3 min Read

অনেকেই হয়ত জানেন না, এশিয়ার প্রথম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্নাটকে। ১৯০২ সালে শিবানাসমুদ্রতে স্থাপন করা হয়েছিল। আর এখন বিশ্বের বৃহত্তম সোলার পার্ক করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। বর্জ থেকে শক্তি উৎপাদনের প্রক্রিয়াও চালু রয়েছে রাজ্যে। তাছাড়া সেই সব সংস্থাকে ছাড় দেয় যারা পয়প্রণালির রিসাইকেল করা জল ফের ব্যবহার করে। এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণে কর্নাটক এখন অগ্রদূত। ফলে বিনিয়োগকারীদের কাছে লোভনীয় হয়ে উঠছে এই রাজ্য। বিশেষ করে নানা ক্ষেত্রে যেমন ফটো-ভোলটেক সেল তৈরিতে ভ্যাট ছাড়ের মতো সুবিধা দেওয়া হয়।

image


ইনভেস্ট কর্নাটকা ২০১৬য় এনার্জি প্যানেল হিসেবে তাঁর প্রথম বক্তব্যে কর্নাটক সরকারের শক্তি দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব পি রবি কুমারের প্রতিশ্রুতি, ২০২০ র মধ্যে রাজ্যে সব বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে।

MNRE এর যুগ্ম সম্পাদক তরুণ কাপুর বলেন, প্রযুক্তির ক্ষেত্রে শক্তিসঞ্চয় খরচ হ্রাস রিনিউয়াল এনার্জি সেক্টরে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। টাটা সোলারের সিটিও এবং ইভিপি অরুল সানমুগাসুন্দরম বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সোলার পাওয়ার ফেসিলিটি ম্যানেজমেন্টেরও উন্নতি হবে। তথ্যপ্রযুক্তিও প্যাটার্ন ড্রিভেন ইনসাইট তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বলেন ইন্ডিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং সেন্টার, জিই পাওয়ারের প্রধান মারিয়াসুন্দরম অ্যান্টনি।

image


দেশের শক্তিক্ষেত্রে নানারকম সুযোগ সুবিধা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এই রাজ্য। ধরা যাক, কয়লা আমদানি করে যারা পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করতে চায় তাদের জন্য রাজ্যের বিস্তীর্ণ উপকূলবর্তী এলাকা রয়েছে, বলেন কর্নাটক ইলেকট্রিক লেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান শঙ্করলিঙ্গে গৌড়া। এখান থেকেই একইসঙ্গে সৌর এবং হাওয়ার যৌথশক্তি বের করে আনা সম্ভব। বাড়ির ছাদে সৌরশক্তি উৎপাদনে সিদ্ধহস্ত ভারত। এই প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করে, বলেন দিল্লির কেএফডব্লিউর হেড অব এনার্জি সেল, স্টিফেন হেজার। কর্নাটকই প্রথম রাজ্য যারা শক্তি উণপাদন এবং ডিস্ট্রিবিউশনের ভিন্ন ক্ষেত্র রয়েছে। এবং ESCOM গুলি (BESCOM, MESCOM, HESCOM, GESCOM) গ্রাহক পরিষেবাকে অন্য মত্রায় নিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য প্ল্যান্টগুলি হল একটি এনার্জি সেন্টার অব এক্সেলেন্স এবং বেঙ্গালোরে ইনকিউবেশন সেন্টার এবং BESCOM এ টেকনোলজি ইনোভেশন সেন্টার।

চাষিদের সঙ্গে কর্নাটক সরকারও লেগে রয়েছে যাতে সৌর এবং হাওয়া থেকে শক্তি উৎপাদনের জন্য যাতে তারা তাদের জমি লিজ দেন। এরফলে ওই চাষিদেরও শক্তি ভবিষ্যতের অংশীদার করা যায়, বলেন কর্নাটক সরকারের শক্তিমন্ত্রী ডি কে শিবকুমার। ইতিমধ্যে ১২০০০ একর জমি কর্নাটকের চাষিরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দিয়ে রেখেছেন। কর্নাটক রিনিউয়েবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জি ভি বলরাম জানান, রাজ্যের জমিনীতি রিনিউয়েবল এনার্জি সেক্টরকে লক্ষ্য হিসেবে ধরতে চলেছে। আরও আপডেট পেতে বিনিয়োগকারীদের তিনি KREDL ওয়েবসাইট দেখার অনুরোধ করেছেন।

জার্মানির কনস্যুল জেনারেল জন রোড বলেন, ভারতের অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে কর্নাটক তিন শতাংশ বেশি দ্রুত উন্নতি করছে। শক্তিনীতিতে জার্মানি দৃষ্টান্ত তৈরি করতে চলেছে। পারমানবিক শক্তি সত্ত্বেও, হাওয়া এবং জৈবজ্বালানির মতো বিকেন্দ্রীভূত রিনিউয়ালের ওপর বেশি জোর দিচ্ছে। ১৯৯০ থেকে এই পর্যন্ত কার্বন নির্গমণ ৩০ শতাংশ কমিয়ে ফেলেছে। এটাই ভারতের জন্য কার্যকর অনুশীলণ হতে পারে, বলেন রোড।

ভারতের অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে কর্নাটকের প্রতি বেশি আগ্রহী স্পেনর মতো দেশগুলি, জানান এসিওনা এনার্জির কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর গ্লেন রেসানি। এই সংস্থাই কর্নটকে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে টারবাইন টাওযার গড়ছে। রিনিউয়াল এনার্জি সাবসিডিতে পরিষ্কার নীতি চাইছেন রেসানি। তাঁর পরামর্শ, এই নীতি অন্তত ১৫ থেকে ২০ বছর একই রকমভাবে টিকে থাকতে হবে যাতে সংস্থাগুলি দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা করতে পারে। সর্বোপরি, সদর্থক পদক্ষেপ এবং বিরামহীন শিক্ষার মাধ্যমে কর্নাটক দেশের অন্য রাজ্যগুলিতে রিনিওয়াল এনার্জি নীতির সুর বেঁধে দিচ্ছে। বলছিলেন ভরুকা পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস চন্দ্রশেখর।

লেখক-মদনমোহন রাও

অনুবাদ-তিয়াসা বিশ্বাস