মহিলা উদ্যোগে জোর দিচ্ছে কর্নাটক

মহিলা উদ্যোগে জোর দিচ্ছে কর্নাটক

Saturday February 06, 2016,

3 min Read

কর্ণাটকের ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ মহিলা। কর্ণাটক সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে মহিলা পরিচালিত সংস্থাগুলির কর্মী সংখ্যা প্রায় পাঁচ লক্ষ। বেঙ্গালুরুতে আয়োজিত ইনভেস্টমেন্ট কর্ণাটক ২০১৬ সামিটেও মহিলা উদ্যোগপতিদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। সামিটের দ্বিতীয় দিনে ‘মহিলাদের উদ্যোগে উত্সাহদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় কর্ণাটকের বিভিন্ন প্রান্তের মহিলারা উপস্থিত ছিলেন দর্শকাসনে। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কর্ণাটকের ব্যবসা ও শিল্প দফতরের অতিরিক্ত প্রধান সচিব ও মহিলাদের উদ্যোগ প্রসারে অন্যতম উদ্যোগী, আইএএস অফিসার রত্না প্রভা বলেন, “আমি পৃথিবীকে দেখাতে চেয়েছিলাম, মহিলা ও মহিলা সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে একসঙ্গে দাঁড়িয়েছে”। মহিলা পরিচালিত ব্যবসাগুলির ক্ষেত্রে সরকারের নানা উদ্যোগের কথাও জানান তিনি।

image


নব শিল্প নীতি ২০১৪-১৯ এর মূল লক্ষ্য, সরকারের লক্ষ্য মহিলা উদ্যোগপতিদের উত্সাহ দান এবং... “মহিলাদের উদ্যোগে জোর ও মহিলা উদ্যোগপতিদের অবদান বৃদ্ধি এবং আগামী ৫ বছরে আরও বেশি মহিলা উদ্যোগ তৈরি”।

রাজ্যের দুটি শিল্পাঞ্চল- হুবলি ও ধরওয়াদকে মহিলা উদ্যোগের প্রসার ঘটানোর জন্য ব্যবহার করা ও KIADB/KSSIDC নির্মিত শিল্পাঞ্চল এস্টেট এবং জমি শেডের পাঁচ শতাংশ মহিলা উদ্যোগপতিদের জন্য সংরক্ষিত করার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে এই নীতিতে।

বাইকন লিমিটেডেক চেয়ারপার্সন ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর কিরণ মজুমদার শ, তাঁর কি নোট বক্তৃতায় আশির দশকে তাঁর উদ্যোগের যাত্রাপথের অভিজ্ঞতার কথা বলেন, নিজেদের বেঙ্গালুরুর প্রথম স্টার্টআপ হিসেবে দাবি করে তিনি বলেন, “আমি যা করেছি, বেঙ্গালুরুতে না থাকলে তা করতে পারতাম না”।

বিনিয়োগ পাওয়াই তাঁর কাছে ছিল প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ, এবং তিনি বলেন সব উদ্যোগপতিদেরই বিশেষত মহিলাদের ক্ষেত্রে এটাই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।

তিনি আরও বলেন, মহিলা উদ্যোগপতিদের জন্য ব্যবসার বৃদ্ধি খুবই জরুরি। যদিও পুঁজি ও অন্যান্য যোগানের প্রয়োজনীয়তা থাকায় এটা খুবই কঠিন কাজ। মহিলাদের ব্যবসা বৃদ্ধির গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝতে হবে ও সেই লক্ষ্যে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তিনি যোগ করেন, “একটি ভাল দল তৈরি করুন। মার্কেটিং ইত্যাদি জটিল বিষয়গুলি বৃ্দ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ”।

স্টার্টআপদের জন্য একটি জোরদার নীতি প্রণয়নের ওপর জোর দেন তিনি, যেখানে সরকার সুযোগ সুবিধা ও পুঁজির ব্যবস্থা করবে, শুধু মহিলা নয় সব উদ্যোগপতিদের জন্যই।

IKEA এর সিইও জুভেনসিও ম্যায়েজু, লিঙ্গ সাম্যের গুরুত্বের বিষয় বলেন, এবং জানান IKEA এর সারা বিশ্বের কর্মীদের মধ্যে ৫২ শতাংশ মহিলা। তিনি আরও বলেন ভারতে তাদের যে সমস্ত দোকান খুলবে প্রত্যেকটির ডে কেয়ার সেন্টার থাকবে।

Industree এর এমডি নিলম চিবার বলেন, বেঙ্গালুরু শুধুমাত্র তথ্য-প্রযুক্তির কেন্দ্রই নয়, বস্ত্র কেন্দ্রও বটে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের দ্বারা আমুলের মত নেটওয়ার্ক বা গোষ্ঠী বানানোর ওপর জোর দেন তিনি।

মহিলা উদ্যোগের বিকাশের উদ্দেশ্যে কর্ণাটক সরকার ও সিস্টার সিটি ইনিশিয়েটিভের মধ্যে লেটার ও ইন্টেন্টও স্বাক্ষরিত হয় ইনভেস্টমেন্ট কর্ণাটক ২০১৬ তে। সানফ্রানসিসকোর মেয়র এডউইন লি ও কর্ণাটকের বৃহৎ ও মাঝারি শিল্প এবং পর্যটন দফতরের মন্ত্রী আর ভি দেশপাণ্ডের উপস্থিতিতে এলওআইতে স্বাক্ষর করেন বাণিজ্য ও শিল্প দফতরের অতিরিক্ত প্রধান সচিব রত্না সচিব ও সিস্টার সিটি ইনিশিয়েটিভের ডিরেক্টর ও বোর্ড মেম্বার ড.নন্দিনী ট্যান্ডন। বেঙ্গালুরু ও সানফ্রানসিসকোর মহিলা উদ্যোগপতিদের মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেনে সাহায্য করবে এই চুক্তি।

উত্পাদন ক্ষেত্রে, বিশেষত ছোট ও মাঝারি শিল্পে মহিলা উদ্যোগপতিদের অংশগ্রহণের দিকে নজর দিচ্ছে কর্ণাটক সরকার, এবং বিভিন্ন সরকারি ও মহিলা সংগঠনের মাধ্যমে সবরকম সহায়তা দিতে তারা প্রস্তুত।

সরকারের ওপর সব কিছুর জন্য নির্ভর না করে মহিলাদের নিজেদের জোরে বাধা অতিক্রম করতে হবে। পুরুষ কর্মীদের মধ্যে লিঙ্গ সচেতনতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে ডে কেয়ার সেন্টার তৈরি করতে হবে এবং সুনিতা রেবেকা চেরিয়ান যেমন বললেন, মহিলাদের পুরুষদের মতই শক্তিশালী হতে হবে, বাড়তি সুবিধা ও ছাড়ের ওপর নির্ভর করলে চলবে না।

(লেখা-তনভি দুবে, অনুবাদ-সানন্দা দাশগুপ্ত)