৫০ টাকায় ক্যান্সাররোগীর আওয়াজ ফেরাবে বিশালের 'অউম'
Monday January 04, 2016,
2 min Read
গলায় ক্যান্সার। কথা বন্ধ। একজন ডাক্তার আছেন যিনি শুধু রোগ সারান না। তুরন্ত গলার আওয়াজ ফিরিয়ে দেন। বেঙ্গালুরুর ওঙ্কোলজিস্ট বিশাল রাও। এই ডাক্তারবাবু এমন এক যন্ত্র আবিস্কার করেছেন যা স্বর ফিরিয়ে দেবে বাকরুদ্ধ মুমূর্ষুকে।
আমরা জানি চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতির পরেও এমন বহু রোগ আছে যা সম্পূর্ণ নিরাময়ের আশা আজও আশার স্তরেই রয়ে গিয়েছে। ক্যান্সার তেমনি এক মারণ অসুখ। তবে এখন সার্জারি,কেমোথেরাপি এসবের মারফত কর্কট রোগের ছোঁবল খাওয়া মানুষ একটু হলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরবার স্বপ্ন দেখতে পারেন। গলায় ক্যান্সার আক্রান্ত রুগীর অপারেশনে ভয়েস বক্স বাদ দেওয়া হয়। একেই কর্কট রোগের অসহ্য যন্ত্রণা,পাশাপাশি কথা না বলতে পারার কষ্ট রুগীর কাছে মৃত্যুসম। তাঁরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন।
ডক্টর বিশাল রাও এখানেই অসাধারণ। তিনি দেখেন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী একই সমস্যা নিয়ে আসেন। বাজারে যেসব নকল ভয়েস বক্স পাওয়া যায় রোগীকে তার জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করতে হয়। ১৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার যন্ত্র প্রতি ছ'মাসে পাল্টাতে হয়। গরীব এবং মধ্যবিত্ত রোগীর ক্ষেত্রে এটা বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। নিজের উদ্যোগে ডক্টর রাও বিভিন্ন সংস্থার কাছে অনুনয় বিনয় করে সস্তায় এরকম যন্ত্র পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতেন। টাকা তুলে গরীব রোগীকে সাহায্যও কম করেননি। কিন্তু ওষুধ বিক্রেতা সংস্থাগুলি সামাজিক ডাকে সবসময় সাড়াও দিতে আগ্রহ দেখাত না। এরকম সময় তাঁর আলাপ হল শশাঙ্ক মহেশ নামের এক উদ্যোগপতির সঙ্গে। মূলত টাকা দান সংগ্রহ এবং ফান্ড তোলার কাজেই সাহায্য করতেই এসেছিলেন শশাঙ্ক। কথার ছলে বলেই ফেললেন, ডাক্তার বাবু আমরা কেন বানাচ্ছি না। বিশালের মগজে জ্বলে উঠল আইডিয়া বাল্ব। স্থির করলেন তিনি নিজেই বরং এরকম কিছু বানিয়ে ফেলবেন যাতে গরীব রোগী কম পয়সায় যন্ত্রগুলি পেতে পারেন। যেমন ভাবা তেমন কাজ। বানিয়ে ফেললেন AUM। বিশালের প্রযুক্তিগত বিদ্যে ছিল। কিন্তু ব্যবসায়িক বুদ্ধি দিলেন শশাঙ্ক। দাঁড়িয়ে গেল প্রোডাক্ট। এটা এমন একটি নকল ভয়েস বক্স যার দাম মাত্র ৫০ টাকা। সম্পূর্ণ দেশি এই যন্ত্রে স্পষ্ট কথা বলতে পারেন রোগী।
২৫ গ্রাম ওজনের এই যন্ত্রটির নাম দেওয়া হয়েছে। "অউম"। শাস্ত্রমতে জগতে ওমকার ধ্বনিই হল প্রথম। এবং হিন্দু ধর্মের বিশ্বাসমতে এই ধ্বনি পবিত্রও। তবে সব থেকে পবিত্র বিষয় হল বিশালের মানুষের জন্যে এভাবে ভাবনা। যার ফল হাতে নাতে পেয়েও গেলেন বিশাল। এখন রমরমিয়ে চলছে বিশালের অউম। ধন্যবাদ শশাঙ্ক মহেশকেও।