পড়ুয়া পিতামাতার শিক্ষা বন্ধু ‘স্কু টকস’

‘স্কুটকস’ অর্থ্যাৎ স্কুলের কথা বার্তা।বাবা-মা, শিক্ষক-শিক্ষকাদের মধ্যে এক ছাদের তলায় নিয়ে এসেছে ‘স্কু টকস’। সন্তানদের ভবিষ্যৎ, গৃহশিক্ষক, শিশুবিশেষজ্ঞদের মতামত থেকে শুরু করে শিশু ডাক্তারদের সঙ্গেও আলোচনা করতে পারেন বাবা মায়েরা। ২০১৫ সালের জুন মাসে ‘স্কুটকস’-এর শুরু হয় যাত্রা।

পড়ুয়া পিতামাতার শিক্ষা বন্ধু ‘স্কু টকস’

Sunday September 27, 2015,

2 min Read

স্কুল-ছাত্রছাত্রী-বাবা-মা এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধন।বর্তমান সদাব্যস্ততার যুগে এই বন্ধন যেন ক্রমেই আলগা হয়ে যাচ্ছে। এই বন্ধনকে দৃঢ় করতে ‘স্কু টকস’ এক অভাবনীয় পদক্ষেপ।


image


পড়ুয়াদের মায়েদের আলাদা গ্রুপ দেখা যায় হোয়াটসঅ্যাপে। যেখানে তাঁরা নিজেদের সন্তানদের নানা ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করেন একে অপরের সাথে। কিন্তু এই আলোচনা কতখানি ফলপ্রসূ, তা নিয়ে কিন্তু সন্দেহ থেকেই যায়। কারণ বাবাদের উপস্থিতি সেখানে নেই। শিক্ষক-শিক্ষকা কিংবা প্রিন্সিপালই বা কোথায়?কখনও কখনও গ্রুপগুলি গসিপের আড্ডা স্থল হয়ে ওঠে ঠিক এই জায়গা থেকেই শুরু ‘স্কুটকস’এর। বাবা-মা, শিক্ষক-শিক্ষকাদের মধ্যে এক ছাদের তলায় নিয়ে আনার প্রয়াসের নাম ‘স্কুটকস’।


টিম ‘স্কুটকস’

টিম ‘স্কুটকস’



কিন্তু এই অভিনব ভাবনা এল কী ভাবে? ‘স্কুটকস’-এর সহ প্রতিষ্ঠাতা বহুল চন্দ্র জানিয়েছেন নিজের অভিজ্ঞতার কথা। ২০১৪ সালের ক্রিস্টমাসের সময়। নিজের পরিবারের সঙ্গে জয়পুরে সময় কাটাচ্ছিলেন বহুল। দুপুরে খাওয়ার সময় ছেলের সহপাঠীর বাবার ফোন আসে। সহপাঠীর জন্মদিন উপলক্ষে নিমন্ত্রণ। ছেলে এই সব সামাজিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হবে ভেবে একদিকে বেশ খুশিই হয়েছিলেন বহুল। কিন্তু একটা সমস্যা দেখা যায়। ছেলের এই সহপাঠীকে ভালোমতো চিনতেন না বহুল। চিনতেন না তার বাবা মায়েদেরও।এরপরেই ক্লাসের তথা সমগ্র স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা, বাবা-মায়েরা যাতে একই ছাদের তলায় থাকতে পারে তারই উদ্যোগ নিয়েছে বহুল। একই সঙ্গে শিক্ষক- শিক্ষিকা এবং প্রিন্সিপালের যোগদান এক বাড়তি পাওয়া। বহুল জানিয়েছেন, তাঁর এই চিন্তাভাবনা পড়ূয়াদের বাবা মারা অনেকেই সমর্থন জানিয়েছেন।

২০১৫ সালের জুন মাসে ‘স্কুটকস’ সকলের সামনে আসে। বহুলকে যোগ্য সহযোগিতা দেয় প্রশান্ত গুপ্তা। জয়পুরের সেন্ট জেভিয়ার্স প্রথম গ্রহন করে ‘স্কুটকস’কে। বর্তমানে জয়পুরের ১৯টি স্কুল ব্যবহার করছে ‘স্কুটকস’কে। প্রায় ৬০০০ গ্রাহক রীতিমতো টাকা খরচ করে এই ‘স্কুটকসের’ অন্তর্বর্তী হয়েছেন। বিভিন্ন ভাগ রয়েছে ‘স্কুটকসের’ মধ্যে। যেমন, সন্তানদের ভবিষ্যৎ, গৃহশিক্ষক, শিশুবিশেষজ্ঞদের মতামত। এর পাশাপাশি শিশু ডাক্তারদের মতামতও নিতে পারেন বাবা মায়েরা।


‘স্কুটকস’ এর প্রতিষ্ঠাতা বহুল চন্দ্র(বামে) ও সহ প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত গুপ্তা(ডাইনে)

‘স্কুটকস’ এর প্রতিষ্ঠাতা বহুল চন্দ্র(বামে) ও সহ প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত গুপ্তা(ডাইনে)


প্রধানত সাবস্ক্রিপশনের মারফত ‘স্কুটকসের’ সদস্য হওয়া যায়। স্কুল মারফত বাবা মায়েদের কাছ থেকে ৪৯৯ টাকা নেওয়া হয়। আপাতত ৪০ জন সদস্যকে নিয়েই এই অসাধ্যসাধন করে ফেলেছে ‘স্কুটকস’। এদের পরবর্তী লক্ষ্য ভারতের বিভিন্ন শহরের স্কুলগুলিকে একই ছাদের তলায় আনা। তার মধ্যে রয়েছে মুম্বই, গুরগাঁও, দিল্লি। কিছুদিনের মধ্যেই ‘স্কুটকস’ ছাত্রছাত্রী, বাবা,মা, শিক্ষক-শিক্ষকা এবং প্রিন্সিপালকে নিয়ে বিভিন্ন সম্মেলনের আয়োজন করতে চলেছে। একেকটি স্কুলের অন্তর্ভুক্তি মানে সদস্যসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫০০ ছাত্রছাত্রী, ৭০০০ বাবা,মা, ২০০ জন শিক্ষক-শিক্ষকা। ‘স্কুটকসের’ এই চাহিদা দেখে বেশ কয়েকটি সংস্থা লগ্নি করার জন্য এগিয়ে এসেছেন ইতিমধ্যেই।