মাছের চামড়ায় ব্যাগ, জুতো বানাচ্ছেন বুদ্ধদেব সিনহা

মাছের চামড়ায় ব্যাগ, জুতো বানাচ্ছেন বুদ্ধদেব সিনহা

Thursday April 13, 2017,

2 min Read

বাঘের চামরা পরা শিবঠাকুর দেখেছেন। কুমিরের চামড়ার ব্যাগ। মহিষের চামড়ার মিলিটারি জুতো। আর গুরু, ছাগল, ভেড়ার চামড়ায় বানানো জ্যাকেট জুতো ব্যাগ পার্স এসব তো আকছার দেখছেন। এবার আপনাদের সঙ্গে আলাপ করাবো মাছের চামড়ার। মাছ। বাজারের ভিড়ে যখন ভেটকি বা এজাতীয় মাছ ফিলে করিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন, তখন কি একবারও ভাবেন এই মাছের চামড়ার কী কী হতে পারে এবং হয়! ওগুলোকে ব্যবহারের কথা এতদিন কেউ ভাবতেই পারতো না। এবার অধ্যাপক বুদ্ধদেব সিনহা দেখালেন সেই মাছের চামরা থেকে ব্যাগ জুতো বানানোর কৌশল।

image


মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি আয়োজিত ইন্ডাস্ট্রি অ্যাকাডেমিয়া কনক্লেভে আলাপ হল অধ্যাপক বুদ্ধদেব সিনহার সঙ্গে। একটি ছোট্ট স্টলে একগাদা চামড়ার ব্যাগ জুতো নিয়ে দিব্যি পসার সাজিয়ে বসেছেন। কী এই চামড়ার বৈশিষ্ট্য জিজ্ঞেস করতেই ঝোলা থেকে বেড়াল বেরিয়ে এলো।

অধ্যাপক সিনহা থাকেন বাল্টিকুরিতে। গভর্নমেন্ট কলেজ অব লেদার টেকনোলজির বুট অ্যান্ড শু বিভাগে অধ্যাপনা করেন। মূলত ফেলে দেওয়া আবর্জনায় পড়ে থাকা চামড়াকে পুনর্ব্যবহার করে অসাধারণ সামগ্রী বানানোর কাজই করেন অধ্যাপক সিনহা। কিন্তু এই কাজ করতে করতে মাথায় আসে বাজারের ফেলে দেওয়া মাছের চামড়াকে কোনও ভাবে ব্যবহার করা যায় কিনা। যেমনি ভাবা তেমনি কাজ। ওই চামড়াকে প্রস্তুতকরণের প্রক্রিয়াও আবিষ্কার করে ফেললেন। এবং তার জন্যে পেটেন্টের আবেদনও করে ফেলেন সিনহা স্যার। এখন মাছের চামরা প্রসেস করে সেই থেকে কীভাবে সামগ্রী বানানো যায় তাই এখন শেখাচ্ছেন ছাত্রছাত্রীদের। এবং সেই সব চামরা থেকে তৈরি সামগ্রী বিক্রির যে বিপুল সম্ভাবনা আছে তাও এই কদিনেই টের পেয়েছেন বুদ্ধদেব বাবু। বেশ কয়েকটি প্রদর্শনীতে নিয়ে গিয়েছেন তার সেই প্রোডাক্ট। জুতো। হাত ব্যাগ। এমনকি মাছের চামড়ায় বানানো মানি পার্স। বলছিলেন বিষয়টা নিয়ে দারুণ উৎসাহ। সবাই জানতে চাইছেন এই চামরা টেকসই কিনা। বুদ্ধদেব বাবুর উত্তর তৈরি টেনে ছিঁড়তে পারবেন না। একটু আধটু জল লাগলে নষ্ট হবে না। বছরের পর বছর চলবে।

আর মাছের চামড়ায় মেছো গন্ধ থাকবে কিনা প্রশ্ন করলে হেঁসেই খুন অধ্যাপক বুদ্ধদেব সিনহা। তাই কখনও হয়, মাছ মাছ গন্ধ তো থাকবেই না এমনকি বলে না দিলে টেরই পাওয়া যাবে না চামড়াটা কিসের। আর দাম? আর পাঁচটা চামড়ার থেকে অনেক সস্তা। ফলে এই ধরণের অভিনব চামড়ার সামগ্রী বাজারে এলে অন্য চামড়ার বাজার ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। মাছের দামও বাড়তে পারে বৈকি!

প্রদর্শনীতেই প্রমাণ বুদ্ধদেব বাবুর গবেষণা সফল। এখন অপেক্ষা পেটেন্ট হাতে পাওয়ার। তাহলেই বাজারে সামগ্রী বিক্রির জন্যে তৈরি বলছিলেন অধ্যাপক সিনহা। এই কাজে বুদ্ধদেব সিনহা র সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ কেরছেন মিস সাইনি রায়, সাদিক সেখ, শিরাজ মিস্ত্রি, এবং আশিম কুমার দাস , যিনি তার কারখানাকে সবসমেয় জন্য ব্যবহার করেত দিয়েছেন তাই নয় তাঁর অভিজ্ঞতা দিয়েও সাহাজ্য করছেন। সেই কৃতজ্ঞতার কথাও স্মরণ করতে ভোলেননি এই ছদ্মউদ্যোগপতি।