লাগে 'গোডাউন' দেবে 'স্টোরমোর'

লাগে 'গোডাউন' দেবে 'স্টোরমোর'

Thursday September 24, 2015,

3 min Read

ব্যবসা মানে কী? কেউ-কেউ বলেন গাধাকে ঘোড়া বানিয়ে বিক্রি করতে পারাটাই ব্যবসা। আবার কেউ বলেন সুযোগের সঠিক ব্যবহার করতে পারাটাই ব্যবসা। অর্থাৎ সুযোগ যেভাবেই আসুক না কেন তাকে কাজে লাগানো এবং লাভের কড়ি ঘরে তোলা। অনলাইন কেনাকাটা বা ই-কমার্সের কথাই ধরুন। গ্রাহক ইন্টারনেটে জিনিস পছন্দ করছেন, অর্ডার করছেন আর সেই জিনিস ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। এখন কথা হল যে সব সংস্থা ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত তারা পাহাড়প্রমাণ মালপত্র রাখে কোথায়। আসলে সেখানেই লুকিয়ে রয়েছে সুযোগ বা অপরচুনিটি। মালপত্র রাখার জন্য সুবিধাজনক জায়গায় প্রয়োজন গোডাউন। ভাড়ার বিনিময়ে এমন গুদামঘরের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে কোনও কোনও সংস্থা। ঠিক সেই পথেই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে StoreMore. নির্দিষ্ট কয়েকটি শহরে এখানে টাকা দিলেই মিলছে জিনিস রাখার জায়গা।

এই ট্রেন্ড এল কোথা থেকে?

প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অধিকাংশ ট্রেন্ডই এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। অন-ডিমান্ড স্টোরেজের এই ট্রেন্ডও সেই মার্কিন মুলুকেরই। বর্তমানে মার্কিন বাজারে এই ব্যবসার estimated revenue প্রায় ২৪০০ কোটি ডলার। সেখানে প্রতি দশজনের মধ্যে একজন এমন একটি স্টোরেজ ইউনিটের মালিক। যেমন MakeSpace কিংবা BoxBee. গুদাম ভাড়া দিয়ে দুটি সংস্থা যথাক্রমে তুলে নিয়েছে ১০০ লক্ষ ও ৭০ লক্ষ ডলার। আবার হংকঙের BoxFul সম্প্রতি ব্যবসা করেছে ৮০ লক্ষ ডলারের। ভারতে যেমন সাড়া ফেলে দিয়েছে মুম্বইয়ের BoxMySpace. মার্কিন মুলুকের ট্রেন্ড এখন পৌঁছে গিয়েছে ভারতেও।


image


StoreMore-র কথা

দু'বছর আগে নিতিন ধাওয়ান এবং পূজা কোঠারি মিলে শুরু করেন স্টোরমোর।জিনিসপত্র রাখার ব্যবস্থা করে দিত এই সংস্থা। এখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে on demand ক্যাটেগরি। দু'জনের দেখা হয় ১০ বছর আগে। তখন তাঁরা Mindworks Global Media নামে একটি মিডিয়া আউটসোর্সিং কোম্পানিতে কাজ করতেন। সেখানে Associate Editor হিসাবে কাজ করতেন পূজা। নিতিন দেখতেন ফিনান্স ও অ্যাকাউন্টসের বিষয়। কাজের ফাঁকেই বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতেন পূজা-নিতিন। নিজেদের উদ্যোগে কিছু করতে হবে। এই ভাবনার তখনই সূত্রপাত। তাঁরা প্রথম জুটি বাঁধেন ২০১০ সালে Star Records-এর হয়ে। স্টার রেকর্ডস ছিল একটি ডকুমেন্টস ম্যানেজমেন্ট বিজনেস। সেখানে পূজা ছিলেন বিনিয়োগকারী, আর ব্যবসা চালাতেন নিতিন। ২০১৩ সালে সেই ব্যবসারই অঙ্গ হিসাবে জন্ম নেয় স্টোরমোর। একটি স্বতন্ত্র কোম্পানি হিসাবে স্টোরমোর আত্মপ্রকাশ করে ২০১৪ সালে। পূজা জানালেন,"ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়নের (NCR) বেশ কয়েকটি লোকেশনে আমাদের ১০টি গুদাম আছে। জায়গার হিসাবে যা প্রায় এক লক্ষ বর্গ ফুট।জিনিস রাখার জন্য কাস্টমার এর মধ্য থেকে যে কোনও সময় জায়গা বেছে নিতে পারেন। এখন আমাদের গুদামগুলিতে জিনিস রেখেছেন এমন কাস্টমারের সংখ্যা ২০০ থেকে ২৫০।"


নিতিন ধাওয়ান

নিতিন ধাওয়ান


রেভিনিউ মডেল

স্টোরমোর জায়গা দিয়ে থাকে মাসিক ভাড়ার হিসাবে। একজন ভাড়াটে যেভাবে মাসের শেষে বাড়িওয়ালাকে ঘরভাড়া দেন ঠিক তেমনই ব্যাপার। এছাড়াও প্যাকিং, জিনিস সরান, রি-ডেলিভারির জন্য অতিরিক্ত চার্জ করে থাকে স্টোরমোর। তাহলে USP কী? পূজা বললেন, "আমাদের নিয়মটা খুবই ফ্লেক্সিবল। কোনও সিকিউরিটি ডিপোজিট জমা রাখতে হয় না। কোনও লক-ইন পিরিয়ডও নেই। ভাড়া দিলে যতদিন ইচ্ছা জিনিস রাখা যায়"।


পূজা কোঠারি

পূজা কোঠারি


পথ দেখাবে পোর্টাল

স্টোরমোরের রয়েছে একটি পোর্টাল প্ল্যাটফর্ম। যাতে ব্রাউজ করে একজন কাস্টমার পাবেন জরুরি কিছু প্রশ্নের উত্তর। যে সব লোকেশনে স্টোরমোরের গুদাম রয়েছে সেখানকার নাম, সঙ্গে সেই গুদামের ছবি, কী কী সুবিধা রয়েছে সেখানে তার বিবরণ ইত্যাদি। এমনকী লগ ইন করে একজন কাস্টমার জেনে নিতে পারবেন সংশ্লিষ্ট গুদামে তার কতটা কী মালপত্র রয়েছে। যাতে কোনও জিনিস ফিরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন থাকলে তিনি সেটাও করতে পারবেন। এ যেন গুদামঘরের জন্য MakeMyTrip-এর মতো ব্যাপারস্যাপার। পছন্দমতো জায়গায় হোটেল রিজার্ভের পরিবর্তে গোডাউন বুক করা।

স্টোরমোরের লক্ষ্য

অন-ডিমান্ড স্টোরেজের ক্ষেত্রে ভারতে বৃহত্তম নেটওয়ার্ক গড়ে তোলাকেই লক্ষ্য হিসাবে নিয়েছে স্টোরমোর। তবে একটা বিষয় রয়েছে। জিনিসপত্র রাখার বিষয়টাকে আরও ছড়িয়ে দিতে চায় সংস্থা। ঘরোয়া প্রয়োজনেও যদি কেউ জিনিস রাখতে চান, সেই ব্যবস্থাও করতে চান পূজারা।