অলিম্পিকে দুটি পদক, ফুচকাও বেচেছেন কিশোরী সীতা
গরিব ঘরের মেয়ে সীতা সাহু। কিন্ত প্রতিভাময়ী। মাত্র ১৫ বছর বয়সে এথেন্স স্পেশাল অলিম্পিকে দু-দুটি ব্রোঞ্জ নেডেল পায় সীতা। সীতা ২০১১ সালে এথেন্স স্পেশাল অলিম্পিকে মেডেল জিতেছিল ২০০ মিটার এবং ৪x৪০০ মিটার রিলে রেসে।
Tuesday November 01, 2016,
2 min Read
ওই গৌরবের জয়ের পরেই মধ্যপ্রদেশ সরকার ঘোষণা করে সীতাকে এক লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। অথচ সরকার ওই প্রতিশ্রুতি পালন না করার কারণে সীতাকে কঠোর জীবন সংগ্রামের সঙ্গে যুঝতে হয়। মধ্যপ্রদেশের রেওয়ার বাসিন্দা কিশোরী সীতা সংসার টানতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা বিক্রি করা শুরু করে।
সীতার বাবা পেশায় ছিলেন একজন ঠিকা শ্রমিক। প্রতিদিন মজুরি পেতেন ১৫০ থেকে বড়জোর ১৮০ টাকা। তাছাড়া, সেইসময় তিনিও ছিলেন অসুস্থ। ফলে কিশোরী সীতাকে সরকার যে এক লক্ষ টাকা পুরস্কার দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সেই টাকাটা ছিল তখন সীতার পরিবারের কাছে অনেক টাকা। টাকা না পেয়েই সীতা ও তাঁর মা ফুচকা বেচতে বাধ্য হয়েছিলেন।
যাঁরা সীতার কৃতিত্বের গল্প জানতেন অবাক হয়ে তাঁরা ভাবতেন, দেশের মুখ আলোকিত করার পরেও এ দেশের মেয়েকে ফুচকা বেচতে হয়। হায়, পোড়া দেশ! সীতার প্রশিক্ষক উষা সাহু বললেন, আসলে টাকাটা ওঁদের তখন খুবই দরকার ছিল।
২০১৩ সালে সীতার সংগ্রাম সংবাদ মাধ্যমের গোচরে আসে। সীতাকে নিয়ে পরপর বেশ কয়েকটা খবর হয়। তুলে ধরা হয় প্রতিভাময়ী সীতার দুরবস্থার কথা। এরপরেই রাজ্য সরকার সীতার হাতে প্রতিশ্রুত ১ লক্ষ টাকা তুলে দেয়। এছাড়া, ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন আলাদা করে সীতাকে ৬ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেয়।
সীতা এখন ভাল আছে। সীতা আর তাঁর ভাইবোনেরা এখন নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছে। সুস্থ জীবন ফিরে পেয়েছে একটি পরিবার। এখন সীতার বাবা একটি ফুচকার দোকান চালান। সেইসঙ্গে চালান একটি খাবারের দোকানও। শ্রমিকের হাড়ভাঙা খাটুনির কাজ থেকে নিস্তার পেয়েছেন তিনিও। আর সীতার মা কিরণ সাহু বললেন, মেয়েটা আমাদের জীবনটাই পাল্টে দিয়েছে। এখন আমরা অনেক ভালো আছি। কখনও ভাবিনি এতটা ভালো থাকব।