ট্যাটু কোনও ট্যাবু নয়, আপনার অধিকার

ট্যাটু কোনও ট্যাবু নয়, আপনার অধিকার

Sunday February 04, 2018,

2 min Read

শরীর একান্ত ব্যক্তিগত সম্পত্তি। তার ওপর আপনার অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না। কোনও চাকরির শর্তেই আপনার শরীরের দাগ কিংবা ট্যাটু বা উল্কি কিছুই অন্তরায় হতে পারে না। 
image


সম্প্রতি একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে মুম্বাই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি আর এম বোর্দে এবং রাজেশ কেতকর জানিয়ে দিয়েছেন চাকরির জন্যে আবেদনকারী যদি সমর্থ হন, এবং অন্য সমস্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তবে শুধু শরীরে ট্যাটু কিংবা উল্কি থাকার জন্যে কাউকে চাকরি থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। এই রায়ের পর ভারতীয় যুব সমাজ নির্ভাবনায় শরীরে ট্যাটু শিল্প করতেই পারেন। ট্যাটুর প্রসঙ্গে মুম্বাই হাইকোর্টের এই রায়ের নেপথ্যে রয়েছেন মুম্বাইয়ের সোলাপুরের বাসিন্দা শ্রীধর পাখরে নামে এক যুবক। বেশ কয়েকমাস আগে সিআইএসএফের কনস্টেবল এবং গাড়ি চালকের পদের প্রাথমিক পরীক্ষায় নির্বাচিত হন শ্রীধর। নিয়মমাফিক হাজির হন মেডিক্যাল পরীক্ষা দিতে। যোগ্য শ্রীধর জানতেন কোথাও আটকাবেন না তিনি। কিন্তু পরীক্ষকের নজর এড়ায় না তাঁর ডানহাতে আঁকা ধর্মীয় নক্সা। পদপ্রার্থী রূপে সবরকমের যোগ্যতার প্রমাণ দেওয়ার পরও, শুধুমাত্র হাতে ট্যাটু থাকার জন্য পাখরের আবেদন নাকচ হয়ে যায়।

প্রথমে মুষড়েই পড়েন। হাতের ট্যাটু মুছে ফেলার সবরকম চেষ্টা করেন কিন্তু ব্যর্থ হন। শেষে সরাসরি লড়াইয়ে নামেন এই যুবক। রীতিমত আইনি লড়াই লড়তে আদালতের দ্বারস্থ হন। তিনি জানতেন আর্মিতে অন্য নিয়ম। সেখানে জওয়ানদের শরীরের ট্যাটু সৈন্য দলে যোগদানের অন্তরায় হয় না। তাহলে সিআইএসএফের নিয়মে ব্যতিক্রম হবে কেন? দীর্ঘ আলোচনা শোনার পর বিচারপতি বোর্দে এবং কেতকর শোনালেন এই যুগান্তকারী রায়। বিচারপতিদের স্পষ্ট কথা, শ্রীধর সর্বত্র উৎরে গেলেও হাতে ট্যাটু থাকার কারণে যদি নাকচ হয়ে গিয়ে থাকেন তবে সেটা অন্যায় হয়েছে। সিআইএসএফ বাধ্য শ্রীধর পাখরেকে যোগ্য মর্যাদার সঙ্গে চাকরিতে বহাল করতে। শুধু তাই নয়, ধর্ম নিরপেক্ষ এই দেশে হাতের ধর্মীয় নক্সাকে অশ্রদ্ধা করাও অনুচিত। এই রায়ে উৎসাহিত তরুণ প্রজন্ম। শরীরে আঁকিবুঁকি করার সুপ্ত ইচ্ছে গুলো এবার কার্যত প্রয়োগ করতেই পারবেন ওরা।