আগামী বছরের জানুয়ারী থেকে আমেদাবাদ, জয়পুর সহ দেশের ১০টি মেট্রো শহরে ডটজট পিক আপের পরিষেবা দেবে। ডটজট একটি ই কমার্স সংস্থা।এই সংস্থার বড় শেয়ার হোল্ডার ডেস্ক টু ডেস্ক ক্যুরিয়ার। ক্রেতাদের বাড়ি বা অফিসের কাছের DTDC পিকআপ শপ থেকে তাঁরা অর্ডারের জিনিস সংগ্রহ করতে পারবেন। ফেরত দেবার মতো জিনিসও রেখে যেতে পারবেন। ডটজট ফরাসি পিকআপ সার্ভিসেস সংস্থার সঙ্গেও হাত মিলিয়েছে।
GeoPost Group এর একটি অংশ হিসেবে ২০০০ সালে পিকআপ শুরু হয়। এটি আসলে Le Groupe La Poste এর পরিপূরক সংস্থা। DTDC কোম্পানীতে GeoPost ৪০% শেয়ারের মালিক। ইউরোপের ২২,০০০ পার্সেল স্টোরের অর্ডারের সামগ্রীর যাবতীয় চলাচলের তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত দেখাশোনা পিকআপ সার্ভিসের হাতে। যে ইউরোপীয় দেশগুলি এঁদের পরিষেবা পায় তাদের মধ্যে ফ্র্যান্স, জার্মানী, ইংল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও পর্তুগালও অন্তর্ভুক্ত। এঁরা বছরে ৩০ মিলিয়ন পার্সেল সামলান।
ডটজটের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও সঞ্জীব কাথুরিয়া জানালেন, এই পরিষেবা স্বাভাবিকভাবেই ই-কমার্স কোম্পানীগুলোর খরচ ১% কমিয়ে দেয়। এধরণের পরিষেবা অনলাইন সপিং কোম্পানীর বিক্রির পরিমাণ বাড়াতে প্রয়োজন। স্মার্ট ফোন আর নেটের দৌলতে শহর ছাড়িয়ে শহরতলির অলিগলি এমনকি গ্রামেও পৌঁছে যাচ্ছে ই কমার্স। ২০২০ সালের মধ্যে শুধু ডেলিভারির জন্য লাখ লাখ কর্মী প্রয়োজন। এই পদ্ধতিতে অনলাইন পণ্যমূল্য আগামী দিনে ২% বেড়ে যাবে। কিন্তু PUDO মানে Pickup and Drop off পরিষেবার আওতায় পণ্যমূল্য ৩% পর্যন্ত কমা সম্ভব। দুটো পরিষেবার তুলনা করে সঞ্জীব আরও বললেন,ডটজটের গ্রাহকদের জন্য হোম ডেলিভারির তুলনায় PUDO ডেলিভারি হলে ১৫% সস্তাও হয়।
PUDO র নিয়মে ক্রেতা তাঁর নিকটস্থ ডেলিভারী সেন্টারের ঠিকানা দেন। বাড়ির নয়। প্যাকেজ এলে সেন্টার স্ক্যান করে ক্রেতার মোবাইলে মেসেজ যায়। তিনিও অর্ডারের সামগ্রী নিতে চলে আসেন। গত বছরই টেলর জাবং এক অভিনব পদ্ধতি বের করেছিল। ক্রেতা তাঁদের অর্ডারের জামাকাপড় পেট্রোল পাম্প বা কফি শপ থেকে নিয়ে নিতেন। ডটজটও খুব জলদি এরকম পরিষেবা non-DTDC সেন্টারগুলোয় চালু করতে চলেছে।
পিকআপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ডিয়েগো ম্যাগডেলনাট বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে প্রোডাক্টের শিপিং থেকে ডেলিভারী পুরো বিষয়টার ওপর কড়া নজর রাখতে হবে। ২০২০ সালের মধ্যে ভারত, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকায় ১,৫০,০০০ নতুন শপ খুলবেন ডিয়েগোরা। তাঁর মতে ভারতের বাজার পিকআপের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নতুন দোকানের ২০শতাংশই থাকবে এদেশে। ডটজট এখন দিনে ৩৫,০০০ শিপমেন্ট সামলায়। ২০১৬-র শেষে আরও ১২৫টি নতুন শহরে ছড়িয়ে যাবে ব্যবসা।
স্ন্যাপডিল ও KPMG (Klynveld Peat Marwick Goerdeler)-র যৌথ রিপোর্ট অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যেই ভারতীয় ই কমার্সের বাজার দর ৪০ হাজার কোটি ছাড়িয়ে যাবে। ২০৩০ পর্যন্ত তা হবে ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। এই দৈত্যাকৃতি বৃদ্ধির প্রধান শর্ত যেখানে ছোট শহর ও শহরতলির ক্রেতা, সেখানে ই-কমার্স কোম্পানির ডেলিভারির জন্য বিরাট সেনাদল চাই। ভারত জনবহুল দেশ। তবুও ডেলিভারী দেওয়ার সঠিক লোকের অভাব রয়েছে। সমস্যা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। গত এপ্রিলে ফ্লিপকার্ট এবং মাইন্ত্রার কিছু ডেলিভারি স্টাফ হরতাল করেছেন। স্থানীয় কোম্পানী রোডসরানারের কর্মীরা ক্ষতিপূরণ দাবি করে প্রতিবাদ করেছেন। ডটজটের PUDO সহজ পদ্ধতি নয়। কিন্তু ই কমার্সের গ্রোথ অব্যাহত রাখতে ভীষণ প্রয়োজন।