কানন কেলির আইন-কার্টুন

কানন কেলির আইন-কার্টুন

Monday September 07, 2015,

2 min Read

দেশের আইনের অ-আ-ক-খ অনেকেরই জানা নেই। নিতান্ত অজ্ঞতার কারণেই রোজ অপরাধ বেড়েই চলেছে। এতো গেল আইনের বিষয়, অনেক ক্ষেত্রে সংসদে আনা নানা বিল এবং সংশোধনী সম্পর্কেও খবর রাখেন না। আবার অনেকে আছেন যারা নতুন আইন বুঝতে চান কিন্তু ভাষার মারপ্যাঁচে কুপোকাত হন। এরকম হাজার একটা প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে এগিয়ে এলেন দুই বোন। কানন ও কেলি ব্রু। দুজনেই আইনজীবী। অভিনব কায়দায় আইনের পাঠ পড়াচ্ছেন ওরা। বড়রা নয়, তাদের ‘ছাত্র’ শিশুরা। কমিকসের মাধ্যমে শিশুদের আইন শেখাচ্ছেন এই দুই আইনজীবী কন্যে।

কানন ও কেলি ব্রু

কানন ও কেলি ব্রু


দু’জনেরই লক্ষ্য ছিল একটাই। দেশের আইনিব্যবস্থায় আমূল সংস্কার ঘটানো। যেমনটা ভাবা ঠিক তেমন কাজ। পাঁচ বছর আগেই সে কারণে দুই বোনের উদ্যোগে গড়ে ওঠে ‘রিসার্চ ফাউন্ডেশন ফর গর্ভন্যান্স ইন ইন্ডিয়া’(আরএফজিআই)। ২০১৩ সালে ‘ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম’-এ প্রথম দেশের আইনি সংস্কারে কমিকসের প্রসঙ্গ তোলেন কানন।‘ন্যাশনাল নলেজ কমিশন’ ও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য হওয়া কাননের কথা গুরুত্ব পায়। সবাই বোঝেন, জটিল আইনি ব্যবস্থাকে সাধারণের কাছে তুলে ধরতে একটা সহজ মাধ্যম প্রয়োজন। কমিকস সেক্ষেত্রে হতে পারে একটা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। দিদির চিন্তাভাবনাকে সম্মান জানান বোন কেলিও। বিশ্বব্যাঙ্কের সঙ্গে গবেষণামূলক কাজে জড়িত থাকায় বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করেন তিনি। দ্রুত নিজেদের চিন্তাভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে গড়ে তোলেন একটা দল। স্কুলের ছেলেমেয়েদের মন বুঝতে লেগে পড়ে এই টিম।

আইন বোঝাতে কমিকসের চরিত্র

আইন বোঝাতে কমিকসের চরিত্র


দেখা যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাঠ্যবইয়ের জটিল ও কঠিন ভাষা বুঝতে অসুবিধা হয় স্কুলপড়ুয়াদের। সেক্ষেত্রে সহজেই কেউ ‌নাগরিক অধিকারে পাঠ দিলে তা বুঝতে হয়ে তাদের। ঠিক এই পরিস্থিতি থেকেই জন্ম নেয় ‘লটুনস’। গোদা বাংলায় বোঝায় আইনের কমিকস। বিভিন্ন চ‌রিত্রের মাধ্যমে স্কুল পড়ুয়াদের আইনের শিক্ষা দেওয়াই এই ‘লটুনস’–এর কাজ।

image


শিশু মন বুঝে কমিকসের চরিত্র গড়তে লটুনসে শিক্ষক, ডিজাইনার ছাড়াও আনা হয় মনোবিদদের। তবে প্রথমে স্কুল পড়ুয়াদের টার্গেট করলেও উকিল বোনেদের লক্ষ্য ছিল সব বয়সের মধ্যে আইনি সচেতনতার পাঠ দেওয়া।মূলত মানবাধিকার, শিশুর অধিকার ও সাধারণ নাগরিকের কর্তব্যের বিষয় রাখা হয়েছিল এই কমিকসে। স্থির করা হয়েছিল, পরীক্ষামূলক সমীক্ষায় দেখা যায়, নাগরিক অধিকার সম্পর্কে জানতে পাঠ্যবই ছেড়ে লটুনসকে হাতিয়ার করেছে ৭০ শতাংশ স্কুলপড়ুয়া। এরপর আর দেরি করেননি কানন ও কেলি। তড়িঘড়ি লটুনসের পাঠ্যক্রম তৈরি করে ফেলেন। ২০১৪ সালের নভেম্বরেই প্রকাশ পায় লটুনস-এর প্রথম সংখ্যা। ইতিমধ্যেই এই কমিকসের মূল চরিত্র ‘পুগলু’ স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে বেশ পরিচিত হয়ে উঠছে। যা দেখে ভবিষ্যতে ‘লটুনস’ নিয়ে ওয়েবসাইট করার কথা ভাবছেন দুই বোন। তাঁদের আশা, ভবিষ্যতে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমেও ‘লটুনস’ পাওয়া যাবে।