প্রতিষ্ঠাতাই বলবেন কী করবেন

প্রতিষ্ঠাতাই বলবেন কী করবেন

Wednesday November 04, 2015,

3 min Read


সেক্যুয়া ক্যাপিটেলের এমডি শৈলেন্দ্র সিং বলেন, বিনিয়োগের ঠিক সময় ভুল সময় বলে কিছু হয় না। প্রয়োজন একজন আবেগতাড়িত প্রতিষ্ঠাতা, তেমনি আবেগতাড়িত টিম যেখানে সবাই একসঙ্গে দারুন কাজ করবে এবং প্রয়োজন ভালো ব্যবসার আইডিয়া। টেকস্পার্কসের আলোচনায় ফুডটেক এবং হাইপারলোকাল ব্যবসায় গতি কমে আসা নিয়ে যখন আলোচনা হচ্ছিল তখন শৈলেন্দ্র যা বলছিলেন, বোঝাই যাচ্ছিল নিজের বক্তব্য নিয়ে কতটা আত্মবিশ্বাসী তিনি। ‘হতে পারে কিছু কালো মেঘ আছে, কিন্তু কেউ জানে না ঝিরঝিরে বৃষ্টি হবে নাকি অপেক্ষায় রয়েছে হ্যারিকেন। যাই হোক না কেন সঙ্গে একটা ছাতা থাকা জরুরি’।

image


সেখান থেকে আলোচনা গড়াল কীভাবে একজন উদ্যোক্তা পুঁজি সংগ্রহ করবেন সেইদিকে। শৈলেন্দ্র বলেন, একটা সময় মানুষ কী চাইছে তার ভিত্তিতে বিনিয়োগকারীর আগ্রহ হিসেব করা ঠিক হবে না। গ্রাহকের চাহিদার বদল ঘটতে থাকে। সংস্থাগুলির উচিত সবসময় পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে সেই চাহিদাগুলি পূরণের চেষ্টা করা। প্রশ্ন হল কী এমন ছিল যা শৈলেন্দ্রকে নিজের এই স্টার্টআপে বিনয়োগে উৎসাহিত করল? তিনি মনে করেন, প্রতিষ্ঠাতার ইচ্ছেতেই সব হয়। ‘অল্প বয়সে যখন আমি শুরু করি, কিছু চেকবক্স ছিল। আমার মনে হয় বেশিরভাব তরুণেরা সেই সব ভাবনা নিয়ে শুরু করে। আমি সবসময় মনে করি, জীবনের সবচেয়ে ভালো জিনিস মেপে ঠিক করা যায় না, ঠিক তেমনি কোনও স্টার্টআপও শাস্ত্র দিয়ে বিচার করা যায় না’। এই অবস্থায় শৈলেন্দ্রর বাতলে দেওয়া উপায় হল, আবেগ, স্বচ্ছতা, রসায়ন এবং প্রতিষ্ঠাতা দলের চালিকাশক্তি। তিনি এটাকে বলেন ধারণার প্রক্রিয়া, যেখান থেকে প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া যায়, ‘আমরা কী এই ভেঞ্চারে ৫ থেকে ১০ বছর বিনিয়োগ করতে চাই’? তাঁর মতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটা সংস্থায় বিনিয়োগ করা ‘সেক্সি’ মনে হতে পারে, কিন্তু তাতে কত যে শ্রমের প্রয়োজন, সেটাই বুঝে উঠতে পারেন না অনেকে। ১০ বছর সেক্যুয়ার সঙ্গে থেকে শৈলেন্দ্র এখন সন্দেহজনক আইডিয়ার গন্ধ পান। কীভাবে সেগুলি এড়ানো যায়? ‘জল মেপে’, এক ঝটকায় উত্তর শৈলেন্দ্রর। তাঁর বিশ্বাস, একজন বিনিয়োগকারীকে প্রতিষ্ঠাতার ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে।

একটা বদ্ধমূল ধারণা রয়েছে আইআইটি, আইআইএমের প্রাক্তনীদের স্টার্টআপ ভালো বিনিয়োগ পায়। শৈলেন্দ্র অবশ্য তা মানতে চান না। ‘আমি একেবারেই সহমত নই। ফ্রিচার্জের কুণাল সাহা, ফিলজফিতে গ্র্যাজুয়েট, প্র্যাকটোর শশাঙ্ক NIT-K গ্র্যাজুয়েট। হেল্পচ্যাটের অঙ্কুর সিংলা আইনজীবী এবং OYO Rooms এর রীতেশ কলেজের গন্ডিও পেরোননি। আমি বিশ্বাস করি, শেখার ইচ্ছে থাকলে যে কোনও কিছু আত্মস্থ করা যায়’, বলেন তরুণ উদ্যোক্তা। তাঁর ধারণায় স্টার্টআপগুলি একএকটা রেসের ট্র্যাক আর প্রতিষ্ঠাতারা হলেন অ্যাথলিট।

তাঁকে যখন জিজ্ঞেস করা হল, সময়ের বিচার করে এই সময়ে বিনিয়োগের সবচেয়ে ভালো ক্ষেত্র কী? তিনি বলেন, যদি প্রতিষ্ঠাতার ভাবনায় কোনও সেক্টর দারুণ মনে না হয়, তাহলে সেটা একেবারেই উপযুক্ত নয়। ২০০৭ এ বাজওয়ার্ড ছিল ফ্যাশন, এখন অন্যকিছু। যাইহোক, এই মুহূর্তে তাঁকে বিনিয়োগ করতে বললে শৈলেন্দ্র মোবাইল ক্ষেত্রকেই বাছতেন। কারণ এই ক্ষেত্রের বৃদ্ধি হচ্ছে আড়াআড়ি। দ্বিতীয়ত বাছতেন ফিনট্যাককে। শৈলেন্দ্র কিছু স্টার্টআপকে বিবেচনা করেন প্রকৃতির দিক থেকে, প্রত্যেকেই প্রায় একই রকম, বিজনেস মডেলটাই একটু এদিকওদিক। দর্শকদের একজন জানতে চাইলেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা কী স্টার্টআপগুলিকে বেশি খরচ করতে উৎসাহ দেন। শৈলেন্দ্র উত্তর, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটা ঠিক। কিন্তু অনেকেই নির্ভর করেন কতটা কী করার বাকী আছে দেখার উপর। ‘পুঁজি না তুললে পেছনে পড়ে থাকবেন। এটাই আসল কথা’, শৈলেন্দ্রর সংযোজন। অ্যাথলেটের উদাহরণে ফিরে সেক্যুয়া ক্যাপিটেলের এমডি বলেন, ‘আপনার বিনিয়োগকারী বলতে পারেন, চলুন জোরে দৌড়াই। তাহলে সেই মতো মাসেলও ফোলাতে হবে’।