শ্বেতার স্পর্শে স্বাবলম্বী হচ্ছেন বিহারের নারী

শুধু হাতের কাজ দিয়ে তৈরি করেছেন কয়েক ডজন কাজের হাত। গ্রামের মহিলাদের স্বাবলম্বী করে তোলার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন গয়ার তরুণী শ্বেতা তিওয়ারি।

শ্বেতার স্পর্শে স্বাবলম্বী হচ্ছেন বিহারের নারী

Saturday August 22, 2015,

2 min Read

শ্বেতা  তিওয়ারি

শ্বেতা তিওয়ারি


গয়ার এক গরিব ঘরে জন্ম শ্বেতার। লেখাপড়ায় ছিলেন নেহাতই সাদামাঠা। বরাবর ঝোঁক ছিল শিল্পকলা ও সঙ্গীতের প্রতি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়ে বিজ্ঞাপনের দুনিয়া ঢুকে পড়েন। সেই দিয়ে কেরিয়ার শুরু। তাড়াতাড়ি অফিস যাওয়া, দেরি করে ফেরা, নির্দিষ্ট রুটিন বলতে কিচ্ছু ছিল না। শনি-রবিবারেও কাজ থাকত। স্বাভাবিকভাবেই লোকে বলত এ আবার কী কাজ তবে এসব মন্তব্য আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরানোর বদলে শ্বেতাকে আরও প্রত্যয়ী করে তুলত।

সেই প্রত্যয় থেকেই একদিন শ্বেতা বানিয়ে ফেললেন চুঙ্গি। একটি ই-শপিং পোর্টাল। কাঁথাস্টিচ, ক্রচেট, মধুবনী ছবির মতো হস্তশিল্পগুলিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার একটা প্লাটফর্ম। একই সঙ্গে গ্রামাঞ্চলের মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলাই ছিল চুঙ্গির আসল উদ্দেশ্য। 

চুঙ্গিতে কাজ করছেন মহিলারা

চুঙ্গিতে কাজ করছেন মহিলারা


তবে পরিবারের বাঁধন খুলে এইসব মহিলা শিল্পীদের রাজি করানো ছিল সবথেকে কঠিন কাজ। এই চ্যালেঞ্জ টপকানোয় শ্বেতার মা বীণা ও বোন স্মিতা তাঁকে দারুণ সাহায্য করেছিলেন। দিনের পর দিন দরজায় কড়া নেড়ে অবশেষে একে একে ওই মহিলাদের রাজি করানো সম্ভব হয়েছিল। কয়েকজনকে দেখে আরও কিছু মহিলা চুঙ্গির সঙ্গে যোগ দেন। আর এভাবেই গড়ে ওঠে চুঙ্গি পরিবার। বাণিজ্য নগরী মুম্বই থেকে এই ব্যবসার দেখভাল করেন শ্বেতা, গয়ায় বসে শিল্পীদের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে তাঁর পরিবার। শ্বেতা বলেন, ‘আমার পরিবারই আমার প্রেরণা, এই সাফল্যও তাঁদের জন্যই’। তবে সব সময়ই যে শ্বেতার চেষ্টা সাফল্যের মুখ দেখে তা নয়। সময় ও রশদের অভাবে কিছু কিছু সময় ব্যবসায়িক লক্ষপূরণ হয় না।


চুঙ্গি পরিবারে শ্বেতার মা ও বোন

চুঙ্গি পরিবারে শ্বেতার মা ও বোন


জিরো ব্যালেন্স দিয়ে যে ব্যাঙ্কের বই শুরু হয়েছিল, তাতেই এখন পঁচিশজন মহিলা সহ পঁয়ত্রিশজনের জীবিকার হিসেব ধরা থাকে। চুঙ্গির সঙ্গে যুক্ত সমস্ত মহিলা শিল্পীরা এখন আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। ওরা আর পরিবারের পুরুষদের মুখাপেক্ষী নন। বরং এখন ওরাই পরিবারের মেরুদণ্ড। বিহারের গরিবগুর্বো মানুষগুলোর জীবন শুধু শিল্পে ভর করে বদলে দিতে চান গর্বিত শ্বেতা। 

এক বছরের মধ্যে একশরও বেশি শিল্পীকে চুঙ্গি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত করতে উদ্যোগী এই সাহসী মেয়ে। শ্বেতার স্বপ্নের সংস্থা চুঙ্গি তাঁর অঞ্চলের মানুষের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে অবিচল।