সমুদ্র নিরাপদ কিনা বাংলায় জানাবে মীনাক্ষীর টিম

সমুদ্র নিরাপদ কিনা বাংলায় জানাবে মীনাক্ষীর টিম

Wednesday January 27, 2016,

2 min Read

মীনাক্ষী এখন খুব ব্যস্ত। বাসন্তীদেবী কলেজের গণিতের অধ্যাপিকা মীনাক্ষী চট্টোপাধ্যায়ের ওপর গুরু দায়িত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। উপকূলের মতিগতি তত্ত্বাবধান করবে তাঁর নেতৃত্বে একটি দল। হাত গুণে তো আর একাজ হয় না। রীতিমত বন্দ্যোবস্ত হয়েছে ভালোই। উপকূলে হাওয়ার মতিগতি বুঝতে রেডিওর খবরের ভরসায় আর বসে থাকতে হবে না। এবার থেকে মাঝি-মৎস্যজীবীদের মোবাইলেই সাতদিনের পূর্বাভাস চলে আসবে। একেবারে বাংলায় এসেএমএস। মীনাক্ষীরাই পাঠাবেন। কীভাবে? 

image


সমুদ্রের গতিপ্রকৃতির উপর নজর রাখতে দিঘার সমুদ্রে বসানো হয়েছে ওয়েভ রাইডার বুয়া (wave rider buoy)। এই যন্ত্রের মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে সুনামির পূর্বাভাস থেকে শুরু করে সমুদ্রের গতিপ্রকৃতির সব ধরনের খবরাখবর উপকূল এলাকার মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। ভারত সরকারের বিজ্ঞান মন্ত্রক মিনিস্ট্রি অফ আর্থ অ্যান্ড সায়েন্সের অধীনস্থ ন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান ইনফরমেশন সার্ভিস (NCOIS)-এর উদ্যোগে উপকূল এলাকা থেকে ২২ নটিক্যাল মাইল দূরে গভীর সমুদ্রে ৫৫ ফুট জলস্তরের ওপর পরীক্ষামূলকভাবে বসানো হয়েছে এই যন্ত্র। খরচ হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা। 

মূলত সমুদ্রের গতিপ্রকৃতির উপর নজরদারির জন্য ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে সারা ভারতের বিভিন্ন উপকূল এলাকায় এই ধরনের যন্ত্র বসানোর কাজ শুরু করেছে ভারত সরকার। এর আগে ওড়িশা উপকূল এলাকা সহ বিশাখাপত্তনম, গুজরাট সবমিলিয়ে ভারতের মোট ১২টি জায়গায় যন্ত্র বসানো হলেও পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম। এক বছর আগে থেকে দিঘায় যন্ত্রটি বসানোর পরিকল্পনা করছিল NCOIS। শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হওয়ায় সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন উপকূলের মানুষ, মৎস্যজীবী এবং পর্যটকরা। দিঘায় এই যন্ত্রটি যৌথভাবে দেখভাল করবেন বাসন্তীদেবী কলেজের গণিতের অধ্যাপিকা মীনাক্ষী চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন প্রজেক্ট টিম ও দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ। আবহাওয়ায় তথ্য প্রচারের জন্য দিঘায় চালু করা হচ্ছে একটি দফতর। ওই দফতরই বাংলায় লেখা এসএমএসের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে আবহাওয়ায় পূর্বাভাস। তথ্য দেওয়া হবে হায়দরাবাদের NCOIS দফতর থেকেও। পরবর্তী সময়ে কলকাতাতেও একটি কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। দিঘা উপকূলে এই যন্ত্র বসানো হলেও উপকৃত হবেন গোটা বাংলার উপকূল এলাকার মানুষ। যন্ত্রটি অন্তত ৩০০ মিটার এলাকার আবহাওয়া ও সমুদ্রের গতিবিধির তথ্য সংকেত সংগ্রহ করতে পারে। আর সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের মাধ্যমে তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হবে ২৫০ বর্গকিলোমিটার উপকূল এলাকায়।

প্রকল্প সমন্বয়কারী বাসন্তীদেবী কলেজের অধ্যাপিকা মীনাক্ষি চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘যন্ত্রটির মাধ্যমে উপকূলের আবহাওয়া, মসুদ্রের গতিবিধি, জলতরঙ্গ, সুনামি ও সাইক্লোনের পূর্বাভাস পাওয়া যাবে। উপকৃত হবেন মৎস্যজীবীরা, উপকূলের মানুষ’। গভীর সমুদ্রে ভাসমান অবস্থায় থাকবে যন্ত্রটি। লঞ্চ বা ট্রলারের ধাক্কায় যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই ওয়েভ রাইডারটি বসানো হয়েছে। রাতে একটি লাল আলো জ্বলবে বুয়ার ওপরে থাকা স্টিকে। তাতেই অন্ধকারে যন্ত্রের অবস্থান বুঝতে পারবেন লঞ্চ বা ট্রলার চালকরা। উপকূলের মানুষের সুরক্ষায় এই যন্ত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে দাবি দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক সুজন দত্তর।