রাজনীতি কীভাবে সমাধান, দেখিয়েছেন পুরুষোত্তম

রাজনীতি কীভাবে সমাধান, দেখিয়েছেন পুরুষোত্তম

Monday May 09, 2016,

8 min Read

১৯৯৬ সালের ঘটনা. অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের নলগোন্ডা জেলার এক গ্রামে কৃষকদের বৈঠক চলছিল. গ্রামবাসীরা ফ্লুরোসিসের সমস্যার সমাধান খুঁজতে ব্যস্ত ছিলেন. সেই সময় নলগোন্ডা জেলার বিভিন্ন গ্রামে জলে ফ্লোরাইডের মাত্রা এত বেশি ছিল যে জল খাওযার মত ছিল না এক কথায় জল বিষ হয়ে গিয়েছিল কিন্তু বিকল্প জলের ব্যবস্থা না থাকায় এই জলই খেতে বাধ্য হতেন গ্রামবাসী। ফলে এই জেলার অনেকেই ফ্লুরোসিসের শিকার ছিলেন। ফ্লুরোসিসে অনেকেরই দাঁত হলুদ হয়ে গিয়েছিল। অনেকের হাত পায়ের হাড় বেঁকে যায় ও তারা বিকলাঙ্গ হয়ে যায়। ফ্লোরাইডযুক্ত জল খেলে হাড়, মাংসপেশী, কলিজা ও পেটের নানারকম অসুখ হয়। গর্ভবতী মহিলাদের ওপর এই জলের প্রভাব খুবই খারাপ, অনেকেরই গর্ভপাত হয় এই জলের জন্য। সেচের জন্য উপযুক্ত জল না পাওয়ায় বহু একর জমিই চাষ না করে ফেলে রাখতে হত। রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছিল। রাজ্য সরকারকে বারবার জানিয়েও সুরাহা হয়নি। জেলা প্রশাসনও চুপ ছিল। পুরো জেলাই সরকারি উপেক্ষার শিকার ছিল। গ্রামবাসীদের অনেক আন্দোলনের পরও সরকারের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই আরও বড় আন্দোলন সংগঠিত করার উদ্দেশ্যেই এই বৈঠক করছিলেন তাঁরা। নানা জনের নানা মত ছিল, বেশিরভাগ কৃষকের মত ছিল প্রভাবিত লোকেদের সংগঠিত করে ধর্ণা প্রদর্শন করা।

image


কিন্তু বৈঠকে একটা অংশের ভিন্ন মত ছিল। বৈঠকে উপস্থিত এই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ এমন এক পথ বাতলায় যে ধরণের আন্দোলন সম্পর্কে কোনও জানা বোঝাই ছিল না। তিনি বললেন, সামনে লোকসভা নির্বাচন, এমন সময়ে সারা দেশের নজর নলগোন্ডা জেলার সমস্যার দিকে ঘোরাতে হবে। সেই জন্য নির্বাচনে যদি ফ্লুরোসিস আক্রান্ত অনেক কৃষক ভোটে লড়ে তাহলে সারা দেশে এই সমস্যার কথা ছড়িয়ে পড়বে। কৃষকরা তাঁর কথা মেনে নিলেন। অনেকেই মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন। মনোনয়ন পত্র পরীক্ষা কের ৫৪০ জনের মনোনয়ন পত্র গৃহীত হয়। এটা সেই বছরে নির্বাচনে একটি নির্বাচন কেন্দ্র থেকে হওয়া সবথেকে বেশি প্রার্থী। এর আগে কোনওদিন কোনও লোকসভা কেন্দ্রে এর থেকে বেশি মনোনয়ন পত্র জমা পড়েনি। স্বাভাবিকভাবেই সারা দেশের নজর গিয়ে পড়ল নলগোন্ডার ওপর। এতজনের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ল, ছড়িয়ে পড়ল সরকারের উদাসীনতার কথা। এতজনকে দেওয়ার মত প্রতীকও ছিল না নির্বাচন কমিশনের কাছে, তাই নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করা হল। রাজ্য সরকারও নড়ে চড়ে বসল ও ৩ লক্ষ একর জমিতে সেচের জল আর ৫০০ গ্রামে সুরক্ষিত পানীয় জলের ব্যবস্থা করল সরকার।

এতদিনের আন্দোলন যে সমস্যার সমাধান করতে পারেনি, কিছুদিনেই সেই সমস্যার সমাধান করে দিলেন ওই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ। তিনি আর কেউই নন, বিখ্যাত শিক্ষাবিদ, সমাজবিদ প্রফেসর পুরুষোত্তম রেড্ডি।

প্রফেসর রেড্ডি বহু গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন ও সেইসব আন্দোলনকে জিতিয়েছেন। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে উনি নিজে আন্দোলনে সরাসরি যুক্ত না থেকে পরামর্শ দিয়ে তা সফল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

নলগোন্ডার কথা বলতে গিয়ে তিনি বললেন, অবিভক্ত অন্ধ্রের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী ও নির্বাচন আধিকারিক টি এন শেসনকে জনগণের আন্দোলনের চাপেই নতি স্বীকার করতে হয়েছিল। পুরুষোত্তম রেড্ডি বললেন, রাজনৈতিক পার্টি ও নেতাদের ওপর বিশ্বাস হারিয়েছিলেন সেখানকার মানুষ. আমার প্রস্তাবে তাঁরা অবাক হলেও অন্যান্য আন্দোলন করতে করতে ক্লান্ত হয়ে আমার কথা মেনে নিয়েছিলেন। আমি খুশিতো হয়েছিলাম, কিন্তু আমার একটা ভয়ও ছিল। কৃষকরা ৫০০ টাকা জমা করে মনোনয়ন পত্র দাখিল করবে, কিন্তু কেউ জিতবে তো না উল্টে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

কিন্তু তাঁরা জানান ৫০০ টাকা দিয়ে দাঁড়াতে তাঁদের আপত্তি নেই। অনেকবারই সার ব্যবহারের পরও ফসল নষ্ট হয়ে যায়, ফল না পেলে ধরে নেবে সার নষ্ট হল।

এই আন্দোলনে জয় তাঁর জীবনে একটা বড় ঘটনা হলেও এটাই তাঁর সবথেকে বড় জয় বলে মনে করেন না তিনি। তাঁর মতে রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন নাগার্জুন সাগর বাঁধের পাশে প্রস্তাবিত নিউক্লিয়র রিয়্যাক্টর তৈরি বন্ধ করাই তাঁর সবথেকে বড় সাফল্য।

তিনি বললেন, এটা খুবই বড় প্রকল্প ছিল, কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল, তিনি যখন বিষয়টা জানতে পারেন তখনই এই কাজ বন্ধর জন্য আন্দোলন শুরু করেন। পরিবেশ ও মানুষের ক্ষতির কথা মাথায় রেখে তিনি নিজেই এই আন্দোলন শুরু করেন।

পুরুষোত্তম নারায়ণ জানতেন তিনি একা এই প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে লড়তে পারবেন না। নিজের শক্তি সম্পর্কে সম্যজ জ্ঞান তাঁর ছিল। তিনি সেই সব গ্রামে গিয়ে নিউক্লিয়র রিয়্যাক্টরে ক্ষতিকারক দিকগুলো নিয়ে প্রচার শুরু করেন, লোকজনের মধ্যে সচেতনতা বাড়ান। এর জন্য নানা গ্রামে ঘুরে ঘুরে সভা করেন তিনি, অনেকের সঙ্গে কথা বলেন এবং আন্দোলন গড়ে তোলেন। জল জঙ্গল জমি বাঁচাতে শুরু করেন এক মরণ পণ লড়াই। জনগণ বুঝতে পারে ক্ষতির কথা এবং তাঁরা নিজেদের মত করে বিরোধিতা করতে থাকে। ক্রমশই আন্দোলন বৃহত্তর রূপ নেয়, প্রফএসর শিবাজি রাও, গোবর্ধন রেড্ডি, ড.কে বালগোপালের মত মানুষরাও যোগ দেন আন্দোলনে। আন্দোলনের চাপে হার মানতে হয় সরকারকে, রাজীব গান্ধী প্রফেসর রেড্ডিকে চিঠি লিখে জানান নিউক্লিয়র কেন্দ্র তৈরির কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

প্রফেসর রেড্ডি বললেন, একবার শুরু করার পর আর পিছন ফিরে দেখিনি, সেটা বড় আন্দোলন ছিল, সাফল্যও ছিল বড়।

তাঁর মতে অন্য রাজ্যে আন্দোলন করা সত্ত্বেও পরমাণু কেন্দ্র বন্ধ করতে পারেনি। নাগার্জন সাগর আন্দোলনের জয়ের কারণ বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি গ্রামে গ্রামে গিয়ে পরমাণু বিদ্যুত কেন্দ্রর ক্ষতিকারক দিকগুলে তুলে ধরতাম। বলতাম একটা দুর্ঘটনা ঘটলে আশেপাশের ১০০ কিমিএর মধ্যে থাকা মানুষ প্রভাবিত হবেন, এবং সেখান থেকে তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সময় থাকবে মাত্র ২৪ ঘন্টা। সেখান থেকে চলে গেলে জীবিকা থেকে উচ্ছেদ হবেন তাঁরা। বাঁধ প্রকল্পের জল দূষিত হয়ে যাবে। আমি মানুষকে তাঁদের ভাষায় বোঝাতাম, তাই খুব দ্রুতই সাফল্য পাই।

গত পাঁচ দশক ধরে পরিবেশ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে কাজ করে চলেছেন প্রফেসর রেড্ডি। সমাজসেবা ওনার ধর্ম। তাঁর কথায় ছোটবেলায় বাবা মায়ের শিক্ষাই তাঁকে শিখিয়েছে সমাজ ও পরিবেশের প্রতি জীবন নিবেদন করতে।

image


পুরুষোত্তম রেড্ডির জন্ম ১৪ ফেব্রুয়ারী, ১৯৪৩ তেলেঙ্গানার এক সমৃদ্ধ ও বিত্তশালী কৃষক পরিবারে। তাঁরা মা ও বাবা কৌশল্যা ও রাজা রেড্ডি দয়ালু ও সমাজসেবক ছিলেন। তাঁরা আর্যসমাজের সদস্য ছিলেন। দয়ানন্দ সরস্বতী, আচার্য অরবিন্দ ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। তাঁদের পরিবার আধ্যাত্মিক ছিল। আচার্য বিনোভা ভাবের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে রাজা রেড্ডি এক হাজার একর জমি ভূদান আন্দোলনে দিয়ে দিয়েছিলেন। এরপর মানুষের জন্য আরও তিন হাজার একর জমি দিয়ে দেন তিনি। ছোটবেলার কথা বলতে গিয়ে প্রফেসর রেড্ডি বললেন, “আমার বাবা মা খুবই আধ্যাত্মিক জীবন কাটিয়েছেন। তাঁদের জীবনই সমাজের কাছে একটি আদর্শ স্বরূপ। আমার বাবা একবার আমাকে বলেছিলেন জমি জায়গার কোনও দাম থাকবে না, পড়াশোনা কর, লাভ হবে”।

বাবার কথা মতই পড়াশোনায় মন দিয়েছিলেন তিনি। সবসময়ই ভাল ও মনযোগী ছাত্র ছিলেন. সবসময় প্রথম স্থান অধিকারী। মেরিটের ভিত্তিতে ওসমানিয়া মেডিক্যাল কলেজে সুযোগ পান তিনি। দু’বছর খুব পড়াশোনা করেন। ভাল নম্বরও পান, কিন্তু তারপরই একটা বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন তিনি। ডাক্তারি পড়াশোনা ছেড়ে সমাজসেবা করবেন। পড়াশোনা করা জরুরি, তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। এই বিষয় প্রফেসর রেড্ডি বলেন, “আমার কেন জানিনা মনে হয়েছিল ডাক্তার হয়ে আমি মানুষের ঠিক মত সেবা করতে পারব না, রাষ্ট্র বিজ্ঞান পড়ে মানুষের বেশি কাজে লাগতে পারব। ডাক্তারি বিদ্যা ভালই লাগত কিন্তু আমার মন গেছিল রাষ্ট্র বিজ্ঞানে। পরে প্রায় তিনদশক হাজার হাজার ছাত্রকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষা দিয়েছেন তিনি. এম এ, এম ফিল ও পিএইচডিতে ওনার বিষয় ছিল রাষ্ট্র বিজ্ঞান। ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ও বোর্ড অফ স্টাডিসের চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি। কর্মজীবনের ব্যস্ততার মধ্যেও বিভিন্ন গণআন্দোলনে অংশ নিয়েছেন তিনি। তিনি জনগণের আন্দোলনকারী হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। দূর দূর থেকে মানুষ তাঁর কাছে পরামর্শের জন্য আসতে থাকে। জনস্বার্থ আইনি লড়াইও করেছেন পুরুষোত্তম রেড্ডি।

অন্তরঙ্গ আলাপচারিতায় তাঁকে আমি জিজ্ঞাসা করি, তিনি বহু বছর রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়েছেন, পড়িয়েছেন এবং শেষ অবধি কীভাবে একজন শিক্ষাবিদ থেকে পরিবেশবিদ ও গণআন্দোলনের কর্মী হয়ে গেলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “দুটো ঘটনা তাঁর জীবন বদলে দিয়েছিল। প্রথমটি ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা যেখানে বহু মানুষ প্রাণ হারান আর দ্বিতীয়টি পারিবারিক। পুরুষোত্তম রেড্ডির ভাইও কৃষক ছিলেন ও জৈব চাষ করতেন। সেই ক্ষেতে সরূপনগর ঝিল থেকে জল আসত। কিন্তু আশেপাশে কারখানা হয়ে ঝিলটিকে বর্জ্য ফেলার জায়গায় পরিণত করা হয়। রাসায়নিক বর্জ্য ঝিলে ফেলা হতে থাকে। এরফলে তাঁদের ফসলও নষ্ট হয়ে যায়, জমিও খারাপ হতে থাকে। এই পারিবারিক সঙ্কটের সময়ই তিনি ঠিক করে নেন পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য কাজ করবেন। ওনার প্রথম আন্দোলন ছিল সরূপনগর ঝিল পুনরুদ্ধার। তাঁর আত্মীয় ও পেশায় রেডিওলজিস্ট গোবর্ধণ রেড্ডি তাঁকে এই কাজে সাহায্য করেছিলেন।

পুরুষোত্তম এতটাই দৃঢ়প্রজ্ঞ ছিলেন যে এর সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক আধিকারিককে কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন। একদিনের জন্যও বসে থাকেননি। ওনার পরিশ্রমে খুব তাড়াতাড়িই আন্দোলনে সাফল্য আসে ও সরূপনগর ঝিল বেঁচে যায়। প্রথম আন্দোলনেই জয় পুরুষোত্তম নারায়ণের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। এরপর তিনি পরিবেশের ক্ষতিকারক কারখানার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন. অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানার একাধিক ঝিলকে বাঁচান।

তিনি পরিবেশ বিষয় পড়াশোনাও শুরু করেন। এমফিলে ওনার বিষয় ছিল অরবিন্দর দর্শনশাস্ত্র এবং পিএইচডিও এই বিষয়ের উপরই করতে চাইতেন। কিন্তু সরূপনগরের ঘটনার পর উনি পরিবেশ নীতির ওপরই পিএইচডি করবেন বলে ঠিক করেন। পরিবেশ সংক্রান্ত পড়াশোনা করতে করতে সেই বিষয় বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন তিনি। মানুষের মধ্যে পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয় সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য আজীবন প্রচার চালিয়ে গিয়েছেন তিনি, এমন কী আজ ৭৩ বছর বয়সেও তরুণদের মতই কাজ করেন।

ইদানিং তরুণদের প্রতি বিশেষ মনযোগ দিচ্ছেন তিনি। কারণ তাঁর মতে যুবারা যদি পরিবেশের সমস্যাগুলি বুঝে সংরক্ষণের জন্য কাজ করে তাহলে ফল আসবে দ্রুত। তাই তিনি এখনও স্কুল কলেজে গিয়ে পরিবেশ সংক্রান্ত পাঠ দেন। তিনি বললেন, আমার সব ভরসা যুবদের ওপরই। খরা, বন্যা, জঙ্গলে আগুন এই সবই পরিবেশের ক্ষতি করার ফল। পরিবেশ বাঁচানোর জন্য স্বাধীনতার দ্বিতীয় লড়াই শুরু করতে হবে আর এই লড়াইটা তরুণ প্রজন্মই লড়তে পারে।

পুরুষোত্তম নারায়ণের অভিযোগ, এখন অবধি দেশের কোনও সরকার উন্নয়নের পরিভাষা তৈরি করেনি। তাঁর মতে সব সরকারই ক্ষতিকারক উদ্যোগ, কারখানা, রাস্তা আর বিল্ডিংকেই উন্নয়ন বলে মনে করে, যেটা ভুল। পরিবেশের ক্ষতিকারক কিছুই উন্নয়ন হতে পারে না। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিবেশ সংরক্ষণের আন্দোলন কেন সফল হচ্ছে না এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন “সমস্যা আন্দোলনকারী, বিশেষত নেতাদের মধ্যেই রয়েছে. নেতারা সমস্যাগুলিকে জনগণের মধ্যে নিয়ে যেতে ততটা মন দেয় না যতটা নিজেদের নাম কামানোতে দেয়। আমি এমন অনেককে দেখেছি যারা একটি সমস্যা নিয়ে কাজ করতে শুরু করে ও একবার নাম হয়ে গেলে সেটি ভুলে যায় ও এমন সমস্যা খুঁজে বের করে যা তাঁকে বেশি প্রচার দেবে। এরফলে আন্দোলন ব্যর্থ হয়। আন্দোলনকারীদের নিজেদের প্রচারে মন না দিয়ে সমস্যাগুলি সম্পর্কে মানুষকে ওয়াকিবহাল করতে বেশি মন দিতে হবে”।