স্বাবলম্বী হতে মরিয়া 'গৃহবধূ' শ্রুতি এখন জনশ্রুতি

স্বাবলম্বী হতে মরিয়া 'গৃহবধূ' শ্রুতি এখন জনশ্রুতি

Monday January 04, 2016,

2 min Read

এই কাহিনির কেন্দ্রে আছেন এক নারী। নাম শ্রুতি তিওয়ারি। যৌথ পরিবারের বড় বউ। তাই তাঁর হাতেই সব দায়দায়িত্ব। সারাদিন পরিবারের জন্য হাড়ভাঙ্গা খাটুনি। অবসর নেই। সারাদিনের খাটুনির পর জেগে ওঠেন তিনি। যখন পরিবারের সবাই ঘুমোতে যায় তখন চলে তাঁর স্বাবলম্বী হওয়ার লড়াই। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর প্রয়াস। তাতেই তাঁর অক্লান্ত আনন্দ। 

image


গ্র্যাজুয়েশনের পর কর্মজীবনে প্রবেশ করেন শ্রুতি। ডিজাইনিং এর ওপরে বরাবরই ভাললাগা ছিল। তাই ডিজাইনিংকেই পেশা হিসাবে বেছে নেন।

এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল। শ্রুতি বেশ ছিলেন তাঁর স্বাধীন জীবনে। তারপরই বিয়ে। ২০১০ সালে শ্রুতি বিয়ে হয় এক রক্ষণশীল পরিবারে। বন্ধ হয়ে যায় শ্রুতির স্বাধীন হওয়ার ইচ্ছে। পরিবারের সাফ কথা সারাদিনের কাজে কোনোভাবেই যুক্ত থাকতে পারবেন না বাড়ির বউ। বাধ্য হয়েই চাকরি ছাড়া। দেখতে দেখতে দুই মেয়ের মা শ্রুতি নিজেই নিজের জন্য বানাতে থাকেন নানা ধরনের ব্যাগ। শখ বলতে পারেন আবার সম্ভাবনাও। শুধুমাত্র নিজের ব্যবহারের জন্য বানানো ব্যাগগুলি নজরে পড়ে শ্রুতির স্বামী কৃষ্ণকান্ত তিওয়ারির। বলা ভালো পছন্দ হয় শ্রুতির কাজ। নিজেই স্ত্রীকে পরামর্শ দেন সেগুলি বিক্রি করার। স্বামীর দেওয়া সাহসে ভর করে ঘুরে দাঁড়ালেন সাধারণ গৃহবধূ।

আর ফিরে তাকাতে হয়নি। স্বামীর সাহায্যে নিজেই খোলেন একটি ফেসবুক পেজ। নাম দেন আদি হ্যান্ড ব্যাগস। এতদিন নিজের জন্য বানাতেন এবার বানানো শুরু করলেন বিক্রির জন্য। ফেব্রিক, কটন, ভেলভেট, পাট দিয়েই ব্যাগ বানাতে থাকেন।

বন্ধুদের ব্যাগ বিক্রির সূত্রেই শ্রুতির আলাপ হয় সপও নামের একটি অনলাইন শপিং সাইটের কর্মকর্তার সঙ্গে। তারাই দায়িত্ব নেয় শ্রুতির কাজকে অনলাইনে বিক্রির। তাঁর ব্যাগের দাম সাধারণের নাগালের মধ্যেই। মাত্র ১৫০ হেকে শুরু করে ৪৫০ –এর মধ্যেই তিনি তৈরী করেন নানা আকর্ষণীয় ব্যাগ।

আর শ্রুতি। সারাদিন সংসারের খাটনির পর দুই মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে কাজে বসেন। কাজ করতে করতেই অনেকদিন ভোর হয়ে যায়। তারপরে আবার সংসারের হাল ধরা। হাসিমুখে বলেন, পরিবারের বারণ ছিল বাড়ির বাইরে কাজ করার। ‘তাই এখন ঘরেই রাত জেগে কাজ করি। সপও –এর মাধ্যমে কলকাতার পাশাপাশি আমার কাজ পৌঁছে যায় কেরালা ,কর্নাটক এ্বং উত্তরের বিভিন্ন রাজ্যগুলিতে’। পাশাপাশি শ্রুতি কিন্তু বলতে ভোলেন না স্বামী কৃষ্ণকান্তের অফুরন্ত সাহায্যের কথাও। কিছু করার ইচ্ছা থাকলে কোনও বাধাই দমিয়ে দিতে পারে না, তার দৃষ্টান্ত শ্রুতি নিজেই।