শূন্য থেকে শুরু করে বছরে ১৪০ কোটির টার্নওভার

কয়েক বছর আগে পুণের একটি গলিতে এসটিডি বুথ ছিল অর্জুনের। এখন অর্জুনের সংস্থা উইং ট্র্যাভেলে কাজ করেন ৬০০ জন। প্রতি বছর ১৪০ কোটি টাকার ব্যবসা করে তাঁর সংস্থা। ভাড়ায় গাড়ি দেয়, রেডিও ক্যাব, অফিস যাত্রীদের পরিবহনের জন্যে যানবাহনের ব্যবসা করে সফল অর্জুন।

শূন্য থেকে শুরু করে বছরে ১৪০  কোটির টার্নওভার

Monday October 24, 2016,

2 min Read

কিছুই ছিল না। পড়াশুনোয় ভালো ছিলেন না। ছোটবেলা থেকেই দারুণ ডানপিটে। কিন্তু নিজের চেষ্টা ও স্বপ্নে ভর করে পুণের এই যুবক এখন বছরে সফলভাবে ১৪০ কোটির টাকার ব্যবসা করছেন। ভারতের নানা শহর ছাড়াও ৪৯ বছরের অর্জুন কারাটের ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে থাইল্যান্ডেও। অর্জুন এমন এক উদ্যোগী যাঁর সাফল্যের ফলাফল ভরসা জোগাবে নতুন উদ্যোগপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন এমন তরুণ-তরুণীদের।

image


কয়েক বছর আগে পুণেয় একটি এসটিডি বুথ চালু করেছিলেন অর্জুন। বর্তমানে অর্জুনের সংস্থা উইং ট্র্যাভেলের কর্মীর সংখ্যা ৬০০জন। প্রতি বছর ১৪০ কোটি টাকার ব্যবসা করছে এই সংস্থা। ভাড়ায় গাড়ি দেওয়া, রেডিও ক্যাব, অফিস যাত্রীদের পরিবহনের জন্যে যানবাহনের ব্যবসা করে সফল অর্জুন এখন বসবাস করেন পুণের অভিজাত এলাকায়।

কোনওদিনই অর্জুন তেমন পড়ুয়া ছিলেন না। বড়ভাই ডাক্তার। কিন্তু অর্জুন নিজে দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কাকার জুতোর দোকানে কাজকর্ম করা শুরু করেছিলেন। তবে বরাবরের স্বপ্ন ছিল নিজে কোনও ব্যবসা দাঁড় করানোর। এই লক্ষ্যে নিয়েই পরে সরকারি পলিটেকনিক কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেছেন।

এরপর অতি সাধারণ পরিবারের সন্তান অর্জুন গ্রাসাচ্ছদনের জন্যে পরপর কয়েকটি চাকরি করেন। তবে ভিতরে ভিতরে ছোটবেলায় দেখা স্বপ্নটা নিজে উদ্যোগ নিয়ে কিছু করবার জন্যে খোঁচা মারছিল। চাকরি ছেড়ে অর্জুন প্রথমে খুলেছিলেন একটি এসটি়ডি বুথ। সেখান থেকেই কাজ চালানো শুরু করেন একটি বেসরকারি কম্পানির টিকিট এজেন্ট হিসাবে। ১৯৯৩-৯৪ সাল নাগাদ নিজেই কিছু ট্যাক্সি রাস্তায় নামান। সেগুলি ছিল ভাড়ার। এরপর ১৯৯৬ সালে নিজেই গাড়ি কেনা শুরু করেন।

বর্তমানে ভারতে ৯টি শহরে উইং ট্র্যাভেলের নিজস্ব ট্যাক্সি সার্ভিস আছে। মুম্বই, পুণে, গুরগাঁও, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, চণ্ডীগড়, আমেদাবাদ ও বরোদায় চলছে উইং ট্র্যাভেলের নিজস্ব ট্যাক্সি। থাইল্যান্ডের তরতর করে চলছে উইং ট্ৰ্যাভেলের পরিবহন ব্যবসা। অর্জুন জানালেন, তাঁদের সংস্থার নিজস্ব গাড়ির সংখ্যা এখন ৪৭৫টি। মালিক চালাক নামে একটি প্রকল্পের আওতায় আরও ৮০০টি গাড়ি নথিবদ্ধ করা হয়েছে। তাছাড়া, চুক্তিভিত্তিকভাবে মোট ৫,৫০০টি ট্যাক্সি উইং ট্র্যাভেলের হয়ে কাজ করছে।

অর্জুনের উদ্ভাবনী ক্ষমতাই তাঁর সংস্থাকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। চলতি বছরের গোড়ায় উইং ট্র্যাভেলের তরফে শতাধিক সমকামী, লেসবিয়ান, ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের মানুষকে চালক হিসাবে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে। এখন এরাই শহরের রাস্তায় ট্যাক্সি চালক হিসাবে কাজ করছেন। এই প্রকল্পটি হামসফর ট্রাস্ট নামে একটি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে শুরু করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই সাফল্য এসেছে। বলাবাহুল্য, কাজটি সামাজিক স্বীকৃতির দাবি রাখে।

পাশাপাশি বেঙ্গালুরুতে চলছে অর্জুনের আর একটি স্বপ্নের প্রকল্প। কোনও ট্যাক্সিতে সওয়ারি হওয়ার পরে কেউ অস্বস্তি বা কোনও ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হলে তাঁকে অন্য আর একটি ট্যাক্সি ধরিয়ে দেওয়া হবে। পরিষেবা নিয়ে এই ধরনের আধুনিক ভাবনাচিন্তার জেরেই বাড়ছেন অর্জুন কারাট।