ফেয়ারলনের ফেয়ারিটেলে শশীর উজ্বল উপস্থিতি

ফেয়ারলনের ফেয়ারিটেলে শশীর উজ্বল উপস্থিতি

Sunday January 10, 2016,

2 min Read

ফেয়ারলন। নাম দিয়ে কি যায় চেনা? এ নাম শুনলে কজনই বা চিনবেন? আবার হয়তো অনেকেই চিনবেন। নিউমার্কেটের অদূরেই ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার মেলবন্ধন। আর সেখানে বলিউডের পরশ ফেয়ারলনের অহংকার। রুম নম্বর ১৭ শুধুই শশীময়। 

image


আর হয়ত মধ্য কলকাতার বুকে সাদার স্ট্রীট এলাকায় এখনো স্ব-মহিমায় বিরাজমান ফেয়ারলন হোটেল। আর এই হোটেল ঘিরেই রয়েছে ইতিহাসের আনাগোনা। প্রায় ২০০ বছরের পুরনো এই হোটেল এলাকা। কলকাতার সবচেয়ে পু্রোনো হোটেল। সময়টা ১৭৮১ র কাছাকাছি। বঙ্গে তখন বিদেশি রাজত্ব , ঠিক সেই সময়ই এই জায়গাটি কিনে নেন মিস্টার উইলিয়াম ফোর্ড । তখন ও এই জায়গার নাম হয়ে ওঠেনি সাদার স্ট্রীট। তারপর নানা হাত ঘুরে শেষে ১৯৩৬ সালে রসিয়া সারকিসের মালিকানায় আসে ফেয়ারলন। ব্রিটিশ ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ ভারতীয় নবাবিয়ানা, এই দুইয়ের মেলন্ধনেই ফেয়ারলনকে আর পাঁচটা হোটেলের থেকে আলাদা করে তোলেন রসিয়া। 

সেই স্বাদ উপভোগ করতেইর ছুটে আসেন শশী কাপুরের মত বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরাও । এই হোটেলেরই ১৭ নম্বর রুমটি জুড়ে রয়েছে শশীর নানা স্মৃতি । ২০১১ সালে পদ্মভূষণ পেয়েছেন শশী কাপূর। কাপূর বংশের এই উজ্বল নক্ষত্রের জন্ম কলকাতায় । কলকাতার মাটিতেই একাধিক নাটক উপস্থাপনা করেছেন শশী কাপূর। আর কাজের সূত্রেই প্রেমে পড়েছেন জেনিফার কেনদালের। প্রেম গড়িয়ে বিয়ে।

image


সময়টা তখন ১৯৫৮। কলকাতাকে বড় বেশি ভালোবাসতেন শশীজি। তাই বাইরে নয় কলকাতার মাটিকেই মধুচন্দ্রিমার জন্য বেছে নেন শশী ও জেনিফার। আর কলকাতায় পছন্দের জায়গা বলতে তাদের কাছে প্রথম সারিতেই ছিল ফেয়ারলন। সেখানেই ১৭ নম্বর রুমটি ছিল তাদের হানিম্যুন স্যুইট। তাই শশীর স্মৃতিতে এখনও ১৭ নম্বর রুমের তলায় লেখা থাকে ‘দ্য শশী কাপূর রুম’। শশী ও হোটেলের সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে আবেগে ভেসে যান হোটেলের বর্তমান মালিক জেনি। মা ভায়োলেট স্মিথের মৃত্যুর পর তিনি রয়েছেন হোটেলের সমস্ত দায়িত্বে। জানালেন, একবার নয় বারবার শশী কাপূর এসেছেন এই হোটেলে । ১৯৯১ সালে সিটি অফ জয়ের শুটিংও হয়েছে দমিনিক ল্য পিয়ারের পছন্দের এই হোটেলেই। তাই এখনও হোটেলের আনাচে কানাচে রয়েছে সিটি অফ জয় ছবির নানা দৃশ্য। আর আছে শশীর নানা সময়ের নানা মুহূর্তের ছবি। কাঠের কারুকাজ, বেতের চেয়ার সাজানো, বারান্দা কিংবা সবুজে ঘেরা গার্ডেনে ছড়ান ছিটোনো রয়েছে নানা স্মৃতি। ২০০ বছরের এই স্মৃতির টানেই হয়ত ফিরে ফিরে আসেন বর্তমান মালিক জেনি ও তাঁর স্বামী জনি। দুইজনেই এখন ইংল্যান্ডের বাসিন্দা। তাও মাঝেমধ্যেই হোটেলের কাজ সরজমিনে খতিয়ে দেখতে চলে আসেন। হাজার কথার মাঝে জেনি জানালেন কলকাতায় জন্ম তাঁর। তাই তিনি বাংলা এবং হিন্দি ভাষায় যথেষ্ট সাবলীল। হিন্দিতেই বললেন’, শুধু বিদেশী নয় ভারতেরও নানা রাজ্য থেকে অনেকেই আসেন এখানে। আসেন অনেক বাঙ্গালীও। 

আর রুম নম্বর সতের? ইতিহাসকে এবং শশীর এককালীন উপস্থিতিকে উপভোগ করতে আজও তাই ফেয়ারলনে ঘুরে ফিরে আসেন শশীর ফ্যান ফলোয়ার।