অচেনা স্ট্রবেরিতে কুশমণ্ডিতে নতুন পথ

অচেনা স্ট্রবেরিতে কুশমণ্ডিতে নতুন পথ

Wednesday March 23, 2016,

2 min Read

পাহাড়ি এলাকার ফল। বেশি জল সহ্যে করতে পারে না। চারা লাগানোর পর উঁচু বেডের ব্যরবস্থা করতে হয়। তবুও ঝুঁকিটা নিয়েছিল দক্ষিণ দিনাজপুরের কৃষি দফতর। শুধু ধানের ভরসায় আর যে চাষিদের পেট ভরে না। বিকল্প চাষের লক্ষ্যে গত বছর স্ট্রবেরি চাষের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে কুশমন্ডির নাকর গ্রামের কয়েকজন চাষিকে বোঝানো হয়। তাদের পাশে দাঁড়াতে ‘আতমা’ প্রকল্পের মাধ্যডমে প্রত্যে ক কৃষককে দেওয়া হয় চার হাজার টাকা করে। এগিয়ে আসেন সুকুর মহম্মদ, সুকুর মিনজের মতো চাষিরা। গত বছরের নভেম্বরের শেষের দিকে ওই গ্রামে প্রায় বিঘে পাঁচেক জমি তৈরি করে শুরু হয় চাষ। মাটির স্পর্শে থাকা ফলকে রক্ষার জন্যি মাটির ওপর খড় বিছিয়ে দেওয়া হয়। কিছুদিনের মধ্যেু গাছ লতিয়ে এগোতে থাকে। তার কিছুদিনের মধ্যেজ এসে যায়, পরে ফল। স্ট্রবেরির পাকা লাল রং–এ ভরসা পাচ্ছেন সুকুররা।

image


দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমুন্ডি ব্লক পিছিয়ে পড়া এলাকা হিসাবে পরিচিত। এখানে মূলত সংখ্যা লঘু ও আদিবাসী পরিবারের বাস। মূলত চাষবাসের ওপরই নাকর গ্রামের বাসিন্দাদের জীবন নির্ভরশীল। চাষ বলতে ধান ও কয়েক রকম সবজি। এমন পাণ্ডববর্জিত এলাকায় স্ট্রবেরি চাষের ভাবনা ছিল ব্লকের কৃষি আধিকারিক সেফাউর রহমানের। তাঁর কথায়, “বিকল্প চাষের ব্যােপারে কৃষি দফতর চাষিদের উৎসাহিত করার কাজটা চলছে বেশ কিছু দিন ধরে।চাষিরাও বুঝতে পেরেছেন এই অর্থকরী ফসল তাদের অনেক কিছু দেবে।” কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের থেকে চারা গাছ দেওয়া হয় চাষিদের।পাশাপাশি তাদের জৈব পদ্ধতিতে চাষের পরামর্শ দেওয়া হয়। তার সুফল যে মিলেছে তা স্পষ্ট চাষিদের কথায়। সুকুর মহম্মদ নিজের এক বিঘে জমিতে এবার স্ট্রবেরি চাষ করেছিলেন। প্রথম স্ট্রবেরি দর্শনে তিনি উচ্ছ্বসিত। সুকুর বলছেন, “এবার থেকে ভাল করে স্ট্রবেরি চাষ করব। নতুন বলে প্রথমে একটু চিন্তা ছিল। বিকল্প চাষ ছাড়া উপায় নেই।” এমনই অনুরণন আর এক সুকুরের গলায়। মাত্র মাস তিনেক সময়েই পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা রোজগার করেছেন এক একজন চাষি।

কুশমুণ্ডির স্ট্রবেরি ভালই কদর পেয়েছে। স্থানীয় বাজারেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে সব। এখানকার স্ট্রবেরি গন্ধও বেশ ভাল। রংও খাসা। তবে স্বাদটা তেমন জমেনি। প্রথম চাষে ভরসা পেয়ে সুকুররা বলছেন সামনের বছর এই ঘাটতি মিটিয়ে ফেলবেন। স্ট্রবেরির জ্যে। আরও জমি বাড়াতে চাইছেন তারা। আশেপাশের এলাকার চাষিরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন, জেলা কৃষি দফতরও চাইছে এই উৎসাহটা বজায় থাকুক। অচেনা ফলেই নতুন পথ খুঁজে পেয়েছে কুশমুন্ডি। ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প চাষে ঝুঁকলে রোজগারের পথটা যে অনেক লম্বা তা বুঝতে পারছেন প্রান্তিক মানুষগুলো।