সুফল চাইলে ‘সরল’ সমাধান

সুফল চাইলে ‘সরল’ সমাধান

Monday October 19, 2015,

2 min Read

ফলের খুচরো ব্যবসা করতে চান? আপেলের সঙ্গে পসরায় রাখতে চান কমলালেবু। বাদ দিতে চান না বেদানা, আনারস, তরমুজকেও। এখানেই যত বিপত্তি। একই মরশুমে পাওয়া যায় না সব ফল। আবার একই বাজারে হরেক রকম ফলের সমাহার মেলে না। কাছের পাইকারি ফলের বাজার তো দূরের কথা, এক ছাতার তলায় সব ‌ফল পেতে ছুটতে হয় নানা জায়গায়। এত দৌড়াদৌড়ির পরও আশানুরূপ ফল মেলে না। খুচরো ফল বিক্রেতাদের এই সমস্যার সমাধান করেছে নতুন এক বাজার। নাম ‘সরল মার্কেট’। খুচরো ফল বিক্রেতাদের ফল বাছাইয়ের ঠিকানা।


image


খুচরো ব্যবসায়ীদের চাহিদার সঙ্গে এখানে মিশে গিয়েছে প্রযুক্তি। হোয়াটসঅ্যাপ-এর মাধ্যমে পছন্দের ফল দেখে কিনতে পারছেন ক্রেতারা। কোম্পানির নামের মতোই সরল পদ্ধতিতে ঘরে বসে মিলছে ফল। অল্পদিনের মধ্যেই দীপম পৃ্থ্বিয়ানীর মস্তিষ্কপ্রসূত এই সংস্থা আজ অতি পরিচিত নাম। বড়-বড়রা যেখানে হার মানল, সেখানে কোন চালে বাজিমাত করলেন এই যুবক? ‘সরল মার্কেট’-এর প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন, ব্যবসা করতে গিয়ে বিশাল কিছু বাগড়ম্বর করতে হয় না তাঁকে। কেবল সাত সকালে হাজির দিতে হয় মুম্বইয়ের পাইকারি ফল বাজারে। সেখান থেকে ফলের ছবি, দাম ও মোড়কের মূল্য পাঠাতে হয় ক্রেতাকে। এসবই চলে হোয়াটসঅ্যাপ-এর মাধ্যমে। এরপর ক্রেতা ফোনে পছন্দসই ফল কিনতে চাইলে তা নির্দিষ্ট গন্তব্যে পাঠানো হয়। কোনওসময়ই ফল কিনে তা নিজেদের কাছে মজুত রাখা হয় না। ফলে পচে যাওয়ার ঝক্কি নেই। এক গাদা টাকা বিনিয়োগেও ঝুঁকি নিতে হয় না। অথচ সহজ-সরল পথে ব্যবসা চলতে থাকে।


image


মূলত তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে চাকরি জীবন শুরু দীপমের। ‘একসেনচার’-এর মতো কোম্পানিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্বও সামলেছেন তিনি। ছোট শহর গন্ডিয়ার সিন্ধ্রি পরিবারে জন্ম। সেখান থেকেই বড় হওয়া। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবরা বেশিরভাগই ছিলেন ব্যবসাদার। ছোট থেকে দীপম লক্ষ্য করতেন, অপরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন শহরে ঘুরে রসদ জোগাড় করছেন তাঁরা। ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহু অর্থের অপচয় ঘটছে। লভ্যাংশের একটা বড় অংশ চলে যাচ্ছে বিনিয়োগেই। কলেজের দিনগুলোতেও এই সমস্যার সমাধান নিয়ে চিন্তা করতেন দীপম। পরে ‘টিআইই বুট ক্যাম্প’-এ যোগ দিতেই বুদ্ধিটা খেলে যায়। গড়ে ওঠে ‘সরল মার্কেট’।


image


তবে প্রতিষ্ঠান গড়ার আগে ভালোমতো ফলের বাজারের খোঁজ খবর নেন দীপম। সমীক্ষা চালিয়ে দেখেন, দেশের আমদানিকৃত ৬৫ শতাংশ ফলই পাওয়া যায় মুম্বইয়ে। কেবল ইন্টারনেট ও হোয়াটসঅ্যাপ-এর দৌলতে তা ক্রেতার কাছে সহজেই পৌঁছাতে পারে। ব্যস, শুরু হয়ে যায় কাজ। প্রথম মাসেই চার লক্ষ টাকার মুনাফা লাভ করে কোম্পানি। ধীরে ধীরে দেশের ৮টি শহরে ছড়িয়ে পড়ে ‘সরল মার্কেট’ এর ব্যবসা। কোম্পানির সব থেকে বেশি বিক্রি ফলের নাম ‘ম্যাঙ্গেজিন’। থাইল্যান্ডের এই ফলের বিশ্বজুড়ে চাহিদা রয়েছে।

কোম্পানির কর্ণধারের দাবি এই ব্যবসার মাধ্যমে মূলত ফড়ে বা মধ্যস্থতাকারীদের সরাতে পেরেছেন তিনি। ন্যায্য মূল্যে ফল পাওয়ায় ‘সরল মার্কেট’-এর চাহিদা হু হু করে বেড়েছে। দীপমের এই দাবির সঙ্গে একমত অনেক ফল বিক্রেতা। তাঁদের মতে জটিল সমস্যার সহজ সমাধান ‘সরল মার্কেট’।