বাঙালি খাঁটি 'চাইনিজ' পাবেন The Noodle Hub-এ
Wednesday April 13, 2016,
3 min Read
লাঞ্চ, ব্রাঞ্চ, ডিনার-দিব্য চলছে নুডলস চিবিয়ে। চিনাদের এই খাবারটি কবে যে চুপিসাড়ে বাঙালির পাতে জায়গা পাকা করে নিয়েছে তার স্পষ্ট উত্তর হয়ত মিলবে না। তবে, বাঙালি রাঁধুনির হাতে পড়ে খানিকটা বাঙালিয়ানা যে নুডলসেও ঢুকে পড়েছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। একরকম বলতে গেলে শহরবাসীর বোধহয় এটাই সেকেন্ড ফুড অপশন। বাঙালির এই নুডলসপ্রীতিকেই মাথায় রেখে গত বছর পুজোর সময় নাকতলা মেট্রোর ঠিক উলটো দিকে নুডুল হাব নামে রেস্তোরাঁ খুলে ফেলেন বাঙালি উদ্যোক্তা সঞ্জয় রায়। রকমারি নুডলসের প্রিপারেশন এবার পয়লাপাতেও যে ঝড় তুলতে চলেছে তারও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন এই বাঙালি উদ্যোক্তা।
তাজ বেঙ্গলের মতো পাঁচতারা হোটেলে কাজ করেছেন। আফ্রিকার নানা দেশে কাজের অভিজ্ঞতা-সব মিলিয়ে ২০ বছর ধরে হোটেল শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে সঞ্জয়। কনসালটেন্সি ফার্ম খুলে নিজের ব্যবসাও চালাচ্ছিলেন বেশ কিছুদিন ধরে। মনে মনে নিজের রেস্তোরাঁ খোলার ভাবনাটা ছিল সবসময়। ছোটবেলার বন্ধু রঞ্জিত ঘোষের সঙ্গে সে নিয়ে বিস্তর আলোচনাও হয়েছে। রঞ্জিত পেশায় আইনজীবী। শেষ পর্যন্ত দুজনে স্থির করলেন রেস্তোরাঁ খুলবেন। নাম ঠিক করলেন দ্য নুডল হাব।
নুডল হাব কেন? সঞ্জয় বলেন, ‘ছেলেকে যখনই জিজ্ঞেস করি কী খাবি? একটাই উত্তর, নুডলস। চাউমিন। শুধু আমার ছেলে নয়, এমন অনেকে আছেন, যারা নুডলস দিয়েই লাঞ্চ, ডিনার সারেন। আমার রেস্তারাঁর নামের সঙ্গে কুইজিনটাও যাতে সরাসরি রিলেট করতে পারে,তার জন্যই এই নাম’।
নববর্ষে বাঙালির পাতে দিতে লোভনীয় নানা পদ নিয়ে হাজির দ্য নুডল হাব। মেনুতে মিলবে ফিস ইন হংকং স্টাইল, ফিস ইন চিলি প্লাম সস, ক্রিসপি কাঞ্জি লাম্ব, পর্ক হট বিন, ক্রিসপি ফ্রাইড চিকেন ইন সুইট অ্যান্ড সাওয়ার সসের মতো নতুন নতুন পদ।
এক ছাদের তলায় গোটা এশিয়ার নুডলসকে এনে হাজির করেছে এই রেস্তোরাঁ৷ অবশ্যই ভিন্ন স্বাদে, ভিন্ন রূপে৷ চিন থেকে শুরু করে মালয়েশিয়া, জাপান, কোরিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডের বিভিন্ন স্বাদের নুডলস খেতে পারবেন ভোজন রসিকরা৷ ‘দীর্ঘদিন ধরে আমি এই দেশগুলোতে ঘুরেছি৷ এশিয়ার প্রায় ৪৫ ধরনের নুডুলস রয়েছে৷ এখানকার আবহাওয়া, মানুষের খাবারের রুচির সঙ্গে মিল রেখে আমি এরমধ্যে থেকে কিছু নুডলসের রেসিপি বেছে নিয়েছি’, রেস্তোরাঁর ডিরেক্টর সঞ্জয় রায় জানান কীভাবে মেনু ঠিক করেছেন নিজে। আরও চমক আছে। ‘দেশ ভেদে প্রত্যেকটা আলাদা আলাদা নুডলসের জন্য সেই সেই দেশ থেকে আনা হয়েছে সসেস৷ কলকাতায় ভিন্ন দেশের ভিন্ন স্বাদের নুডলসের রেস্তোরাঁ এটাই প্রথম’, দাবি সঞ্জয়ের।
আপাতত ৮-১০ রকমের নুডলস পাওয়া যাবে এখানে৷ দিনে দিনে বাড়বে রেসিপির সংখ্যাও৷ সামনের পুজোর মধ্যে ১৮-২০ রকমের নুডলস শহরবাসীকে খাওয়াতে পারবেন বলে আশা করছেন সঞ্জয়-রঞ্জিত, নুডল হাবের দুই প্রাণভোমরা। শুধু নুডলস নয়, বিভিন্ন রকমের চাইনিজ, বারমিজ,থাই খাবারের পদও এখানে মিলবে৷ গেট টুগেদার থেকে বার্থ ডে পার্টির আইডিয়াল প্লেস সিক্সটি সিটের এই রেস্তারাঁ৷ আগামী ছমাসের মধ্যে কলকাতায় আরও দুটো শাখা যোগ হতে চলেছে৷
মাছ-ভাতের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে অনেক আগেই বাঙালি আন্তর্জাতিক হয়ে উঠেছে খাওয়া দাওয়ায় ৷ তাই কলাপাতায় কচি পাঁঠার ঝোল, চিতল মাছের মুইঠ্যার মতো বাঙালি খাবারের পঞ্চব্যঞ্জন সাজিয়ে নববর্ষ উদযাপনে একটু না হয় বদল হল। কে মাথার দিব্যি দিল পয়লাপাতে বাঙালি খাবার থাকতেই হবে? বার্মিজ কিংবা মালয়েশিয়ান নুডলসের সঙ্গে ফিশ ইন হং-কং স্টাইল অথবা হানি গ্লেজড লেমন চিকেন খেলে বাঙালিয়ানা কি ধাক্কা খাবে? কী বলেন?