এক্সেলে কারিকুরি শেখান আইআইএমের প্রাক্তনী চান্দু

এক্সেলে কারিকুরি শেখান আইআইএমের প্রাক্তনী চান্দু

Thursday November 19, 2015,

3 min Read

চান্দুকে এক্সেল সম্রাট বললে বোধহয় খুব ভুল হবে না। মাইক্রোসফট এক্সেলে রীতিমতো যাদু দেখান ইন্দোর আইআইএমের এই প্রাক্তনী। যারা কম্পিউটারে কাজ করে অভ্যস্ত, তাদের অনেকেই এক্সেলে কাজ করেন। কিন্তু চান্দুর যাদু জীবন্ত করে তোলে এক্সেলশিটকে।

image


পুরও নাম পূর্ণচন্দ্র রাও। Chandoo.org এর প্রতিষ্ঠাতা। মাইক্রোসফট এক্সেলে সবাইকে সিদ্ধহস্ত করে তুলতে সাহায্য করে এই সংস্থা। ২০০৪ সালে ব্লগ হিসেবে চান্দু লঞ্চ হয়। এক্সেল নিয়ে নতুন নতুন আইডিয়া শেয়ার এবং কাজ করতে গিয়ে যেসব অসুবিধার সম্মুখীন হন সেসব নিয়ে আলোচনা হত। ২০১০ সালে চান্দুতে সর্বক্ষণের জন্য যোগ দেওয়ার আগে টিসিএস-এ ডাটা অ্যনালিসিস্ট হিসেবে কাজ করেন। এক্সেল শিক্ষা দেওয়ার অবদান হিসেবে ২০০৯ এমাইক্রোসফট মোস্ট ভ্যালুএবল প্রফেশনাল অ্যাওয়ার্ড পান। ‘মাঝে মাঝে দারুণ এক্সাইটিং লাগে। যখন ছোট ছিলাম তখনও ভাবতাম, নিজে কিছু করব, নিজেই নিজের বস হব। কিন্তু যখন এমবিএ করতে গেলাম, দেখলাম বিরাট প্রতিযোগিতা। এমবিএ শেষ করে একরকম বাধ্যবাধকতা থেকে চাকরি খুঁজতে বের হই। টিসিএস-এ যোগ দিই। কিন্তু আমার আগ্রহ কোনও দিনই হারিয়ে যায়নি। তখনও মনে হত, একদিন আমার ইচ্ছে পূরণ হবে। তাই টিসিএস-এর কাজ ৩ বছর পর ছেড়ে দিই। উদ্যোক্তা হওয়ার যাত্রা সংস্থা তৈরির আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। এই পর্যন্ত পথ খুব ভালো কেটেছে। কিছু ইতিবাচক ঘটনাও ঘটেছে’, বলেন চান্দু।

image


Chandoo.org তে ঢুকলেই প্রডাক্ট নিয়ে কিছু তথ্য পাওয়া যায়। যেটা করার চেষ্টা হয় সেটা হল, চান্দুরা ঠিকই করে নিয়েছেন এক্সেল নিয়ে নিত্য নতুন কিছু তথ্য দেওয়া হবে সাইটে। ‘নতুন নতুন টিপস এবং আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা সবাইকে সাহায্য করতে চাই যাতে, প্রত্যেকে নতুন কিছু শিখে বসকে বা সহকর্মীদের তাক লাগিয়ে দিতে পারে। আমি বিশ্বাস করি প্রতিদিন এক্সেল শিখিয়ে হাজার হাজার মানুষকে সাহায্য করি। কাজ দেখিয়ে কেউ কেউ হিরো বনে যান। এটাই আসলে আমরা করতে চাই’, জানান চান্দু।

টাকা বা ডলার রোজগার উদ্দেশ্য নয়। এক্সেলে এক্সপার্ট হতে সাহায্য করে চান্দু। তাই চান্দু অ্যান্ড কোং যাই করুন না কেন, সবটাই এক্সেলকে নিয়ে আবর্তিত হয়। খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন, যেটা করেছেন তাতে মানুষ দারুন কিছু শিখল কিনা। আর এটা করতে গিয়ে প্রতিদিনই নতুন কিছু শিখে চলেছেন। ‘আমার দুটো ই-বুক রয়েছে, যারা এক্সেল ফাংশন এবং ফিচার নিয়ে আলোকপাত করে। আমাদের কাছ কয়েক সেট রেডি টু ইউজ এক্সেল ফাইল রয়েছে, যেগুলি যেকোনও জায়াগায় ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট এবং প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্টের টেমপ্লেট রয়েছে। এই প্রডাক্টগুলি অনেককে বিরাট কিছু এক্সেল না শিখেও, কাজ আরও ভালো করতে এবং তাড়াতাড়ি ফল পেতে সাহায্য করে। মূলত প্রজেক্ট ম্যানেজারদের অনেক দায়িত্ব থাকে। কোনও রিপোর্ট বা টেম্পলেট তৈরির সময়ই পান না। তখন আগে থেকে হয়ে থাকা এই টেম্পলেটগুলি কাজে লাগে’, জানান পূর্ণচন্দ্র রাও। চান্দুর অনলাইন ট্রেনিং ক্লাস রয়েছে। এই ক্লাসে এক্সেলে কাজ করার প্রশিক্ষণ এবং এক্সেলে রিপোর্ট করা, ড্যাশবোর্ড তৈরি ধাপে ধাপে শেখানো হয়।

উদ্যোক্তা হিসেবে সবকিছু খুঁটিয়ে দেখার সময়, শক্তি কোনওটাই থাকে না। এরই মধ্যে কিছু জিনিস রয়েছে যেগুলি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা বা সিইওর মনে রাখা দরকার। উদাহরণ স্বরূপ, নিজের ব্যবসা সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকা দরকার। উদ্যোক্তাকে বুঝতে হবে কী চলছে, কোথায় জিতছেন, কোথায় হেরে যাচ্ছেন, কোন পণ্যের ভালো কাটতি, কোথায় কর্মীদের কাজ ভালো হচ্ছ না এইসব। এগুলি খুব জরুরি। ‘আমার বস প্রায়ই বলতেন, যেটা আঁচ করতে পারবে সেটা সামলাতেও পারবে’, বলেন চান্দু। যদি টিম ছোট হয়, তাহলে প্রতিষ্ঠাতাকেই ব্যবসার রিপোর্ট তৈরি করে নিয়মিত নজর রাখা জরুরি হয়ে পড়ে। অন্যের কাছ থেকে পাওয়ার চাইতে নিজেই এক্সেল ব্যবহার করে অনেক রকম সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। যদি তা না হয় টেবিলে রিপোর্ট আসতেই সপ্তাহ কেটে যাবে, শেষ করতে করতে বলেন এক্সেল এক্সপার্ট।

 লেখক- সত্যনারায়ণা জি

অনুবাদক- তিয়াসা বিশ্বাস