সোনার চাকতি, পাখির চোখ দীপার

১৪ অগাস্ট অলিম্পিকে বড় ইতিহাস গড়তে চলেছেন ত্রিপুরার মেয়ে দীপা কর্মকার। ইচ্ছে শক্তি আর প্র্যাক্টিসই ওঁকে সোনা এনে দেবে। বাঙালি মেয়ের গলায় অলিম্পিকের মেডাল দেখতে ঊদগ্রীব গোটা দেশ। 

সোনার চাকতি, পাখির চোখ দীপার

Tuesday August 09, 2016,

3 min Read

অলিম্পিকে বড় ইতিহাস গড়তে চলেছেন দীপা। ইচ্ছে শক্তি আর প্র্যাক্টিসই ওঁকে সোনা এনে দেবে। বাঙালি মেয়ের গলায় অলিম্পিকের মেডাল দেখতে ঊদগ্রীব গোটা দেশ। অলিম্পিকের টেস্ট ইভেন্টে প্রদুনোভা ভল্ট দিয়ে গোটা দুনিয়াকে চমকে দিয়েছিলেন দীপা এখন ŕŚ…ŕŚ˛ŕŚżŕŚŽŕ§ŕŚŞŕŚżŕŚ•ŕ§‡ŕŚ° ফাইনালে কোয়ালিফাই করে ইতিহাস গড়লেন এই বাঙালি জিমন্যাস্ট। প্রথম ভারতীয় হিসেবে জিমন্যাস্টিকের কোনও বিভাগে মূলপর্বে পৌছলেন তিনি। তেইশতম জন্মদিনের আগের দিনই রিও অলিম্পিকে ভল্ট বিভাগে ব্যক্তিগত ইভেন্টের ফাইনালে জায়গা পাকা করে নিলেন ত্রিপুরার এই জিমন্যাস্ট।

image


২০০৭- এ বছর চোদ্দর মেয়েটা যেবার জলপাইগুড়িতে জুনিয়ার ন্যাশনাল জিতল সেদিন থেকেই ওর দিকে আমাদের নজর রয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ও ৭৭টি পদক জিতে ফেলেছেন। তার মধ্যে ৬৭ টিইি সোনা। রাজ্যস্তরে তো বটেই জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে যেখানেই ফ্লোরে নেমেছেন গলায় উঠেছে স্বীকৃতির সম্মান। হার ও কখনও মানেননি। ওঁর কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী ছোটোবেলা থেকেই ওঁকে তৈরি করেছেন। ফলে ওঁর নাড়ি নক্ষত্র সব থেকে ভালো বিশ্বেশ্বর বাবুই জানেন। বলছিলেন ওঁর হার না মানার কাহিনি।

ও যখন প্রথম জিমন্যাস্টিকের প্রশিক্ষণ নিতে আসে তখন ওর বয়স কত হবে খুব বেশি হলে ৬ বছর। পায়ে একটা ডিফেক্ট ছিল। প্রথমদিনই নজরে পড়ে। ওর ফ্ল্যাটফুট। জিমন্যাস্টদের জন্যে একদমই ঠিক নয়। দীর্ঘদিন সময় লেগেছে পায়ের তলায় কার্ভ আনতে। Flat Feet থাকার জন্যে যন্ত্রণাও হত। সাধারণত এধরণের সমস্যা থাকলে ঠিকঠাক ভাবে হাঁটা চলাই কষ্টকর হয়। আর জিমন্যাস্টদের জন্যে এই সমস্যা অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু কোচ এবং ছাত্রী উভয়ের দীর্ঘ চেষ্টায় পায়ের তলার সমস্যা কেটেছে। আর এটা দিয়েই প্রথম যুদ্ধ জয় শুরু করেছেন দীপা। বাবা দুলাল কর্মকার মেয়েকে জিমন্যাস্টিকে দিয়েছিলেন শুধু পায়ের পাতার সমস্যা সারানোর জন্যেই নয়। চেয়েছিলেন দূর পাল্লার ঘোডা় হোক তাঁর মেয়ে। দুলাল বাবুও সাইয়ের কোচ। খেলাধুলোর সঙ্গে যুক্ত এই পরিবার। প্রথম দিকে দীপার ভালো লাগত না এই অকথ্য পরিশ্রম। কিন্তু দীপার জীবনে বাবা আর কোচই হল ব্যালান্স বিম, প্যারালাল বার। আর ভাল লাগাটা আস্তে আস্তে আসা শুরু হল যখন গুটিগুটি পায়ে সাফল্য যবে থেকে আসতে লাগল। তখন থেকেই জিমন্যাস্টিকই জীবন হয়ে উঠতে শুরু করল দীপার।

image


অ্যাসোসিয়েশানের গন্ডগোল পেরিয়ে কোচ,পরিবার ওশুভাকাঙ্খীদের হাত ধরে উড়ান ভরতে শুরু করলেল দীপা কর্মকার। প্রথম ভারতীয় জিমন্যাস্ট হিসেবে কমনওয়েলথ গেমসে ব্রোঞ্জ জেতেন। আর এবার রিও অলিম্পিকের মূল পর্বে চলে এলেন অনায়াসেই।

এর আগে কোনও ভারতীয় মহিলা জিমন্যাস্ট অলিম্পিকে যাওয়ার যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেননি। বাছাই পর্বে চোদ্দ দশমিক আট পাঁচ পয়েন্ট পেয়ে অষ্টম স্থান পেয়ে মূলপর্বে পৌছেছেন দীপা। চোদ্দই অগাস্ট, ভারতীয় সময় রাত এগারোটা পনেরো মিনিটে ফাইনালে নামছেন দীপা কর্মকার। ভল্ট বিভাগে নজরকাড়া পারফরম্যান্স করলেও আন ইভেন বার, ব্যালেন্সিং বিম, ফ্লোর এক্সারসাইজে দীপা মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি।

ইচ্ছাশক্তি, জেদ আর অধ্যাবসায়। এই তিনের জোরেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন দীপা। আরও সাফল্য আসুক। অলিম্পিকে পদক জিতে একশ কুড়ি কোটির দেশকে গর্বিত করে তুলুন ত্রিপুরার এই বাঙালি মেয়ে এই কামনাই করছে ইওর স্টোরি।