ঐতিহ্যের অহঙ্কার নিয়ে জেগে উঠছে অসম

ঐতিহ্যের অহঙ্কার নিয়ে জেগে উঠছে অসম

Saturday May 27, 2017,

2 min Read

অসম। পাহাড়, চা বাগান, ঘন জঙ্গলের সবুজে মোড়া এক রাজ্য। স্টার্টআপ সংস্কৃতি সেখানেও দারুণ ভাবে ফুটে উঠছে। টেকনোলজি নির্ভর স্টার্টআপ সংস্থাগুলি যেমন সেখানে ধীরে ধীরে মাথা তুলছে তেমনি আছে রাজ্যের ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরে বেড়ে ওঠার স্বপ্নও। মেখলা, গাপাগালি, রিবি, তেলাশি, ফালির ঐতিহ্য। মুগা সিল্কের রেশমি ঐতিহ্যকে ভর করে নতুন ভাবে স্বপ্ন দেখছেন গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একঝাঁক যুবক যুবতী। পুষ্পা ওদেরই একজন। বলছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা পড়াশোনার ফাঁকে তাঁতে কাপড় বুনে পোশাক তৈরি করেন। বাজারে বিক্রি থেকে নানা প্রদর্শনীতে নিজেরাই নিয়ে যান। উদ্দেশ্য একটাই, তাঁদের নিজেদের সংস্কৃতিকে কিছুতেই হারাতে দেবেন না তাঁরা।

image


সে এক সময় ছিল। অবিভক্ত অসমে ছিল বর্তমান বাংলাদেশের রংপুর, সিলেট। ছিল মেঘালয়, মণিপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। তখন বৈচিত্র্যও ছিল অনেক। ভাগাভাগির পর সেসব প্রায় হারিয়েই গিয়েছে। শুধু মুগা সিল্ক আর মেখলা। বিপণনের বাজারে এই দুটি পোশাকের দরই চড়েছে। গাপাগালি, রিবি অথবা ফালি অপরিচিত নাম। এসব পোশাক ব্যবহার করত যে উপজাতি, তারাও দিনে দিনে আধুনিক পোশাকের দিকে ঝুঁকছেন। অথচ একটা সময় ছিল, যখন তাঁতে এসব পোশাক বুনতে না জানলে বিয়েই হত না বাড়ির মেয়েদের।

কিন্তু নিজেদের ইতিহাস, ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখতে এবং অন্যদের তা জানাতে আগ্রহী বর্তমান প্রজন্ম। পুষ্পা তেমনই একজন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে পুষ্পারা শিখেছেন তাঁতে শাড়ি বুনতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ছুটি পড়ে এসব নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যান ওরা। আধুনিক পোশাকের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে এই পোশাকগুলিও যে কত ট্রেন্ডি হয়ে উঠতে পারে নানা জায়গায় প্রদর্শনীতে নিয়ে গিয়ে সেটাই দেখান ওরা। পুষ্পারা জানেন ঐতিহ্য হারিয়ে গেলে স্বকীয়তাও হারিয়ে যায়।

একই সঙ্গে রাজ্যের বাইরে অসমের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের বাজার তৈরিও তাঁদের লক্ষ্য। ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মিশেলে যেসব পোশাক আমরা তৈরি করছেন দেশের অন্য রাজ্যগুলিতে এমনকি বিদেশও গাপাগালি, রিবি, ফালির বাজার তৈরি করতে অসুবিধে হচ্ছে না। প্রয়োজন শুধু পরিকাঠামো।

কলকাতায় ভারতীয় জাদুঘরে এক প্রদর্শনীতে অসমের নবীন প্রজন্ম দেখিয়ে গেলেন তাঁদের বুননশৈলী। দুদিনের জন্য জাদুঘরের হল হয়ে উঠেছিল অসমের তাঁতঘর। বিভিন্ন ট্র্যাডিশনাল ড্রেস দেখে, দেখিয়ে, তার ইতিহাস, বুনন পদ্ধতি বর্ণনা করে অন্তত প্রাচীন অসমের কিছুটা ইতিহাস জানিয়ে দিয়ে গেলেন এক ঝাঁক স্বপ্নশীল যুবক যুবতী।