ঘুরে বেড়ানোর ব্লগ লিখেই কোটিপতি যে মেয়ে
ঘরে বসে ব্লগিং করে কোটিপতি হয়ে ওঠার গল্পে আপনাদের আলাপ করিয়ে দিয়েছিলাম অমিত আর হর্ষ আগরওয়ালের সঙ্গে। চলুন আজ আরও এমন কিছু ব্লগারের কথা শুনি যারা ব্লগিং করেই রাজা।
Thursday September 08, 2016,
3 min Read
The Shooting Star.com-এর মালকিন শিবা নাথ এমন এক স্বপ্ন নিয়ে বাঁচেন যা অন্যরা শুধু স্বপ্নেই দেখেন। এবছর শিবা ডিজিটাল দুনিয়ার যাযাবরের মতো তাঁর ট্রাভেল ব্লগিংয়ের তিন বছর পূর্ণ করলেন।
বিগত দিনগুলোয় শিবা রোমানিয়ার উত্তর শহরতলী থেকে শুরু করে ট্রেনে চষে বেড়িয়েছেন কানাডার ভয়ঙ্কর বনভূমি। সময় কাটিয়েছেন কোস্টা রিকার চকলেট চাষিদের সঙ্গে। মালয়েশিয়ার পূর্বাঞ্চলের সমুদ্রে সাঁতার কেটেছেন কালো হাঙর মাছের ঝাঁকের মাঝে। পৃথিবী ঘোরার তাগিদে লোভনীয় কর্পোরেট চাকরি ছেড়েছেন তিনি। শিবা তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতে চান, যাতে তাঁরা আরামের জীবন থেকে বেড়িয়ে এসে জগতটাকে চিনতে শেখেন। এক জায়গা থেকে অন্যস্থানে ঘুরে বেড়ান যাযাবর শিবা। এখন তিনি গোয়ায় আছেন। কোথাও সপ্তাহ খানেকের বেশি থাকেন না এই ভ্রমণ পিপাসু তরুণী।
২০১১ সাল থেকে তাঁর ব্লগের ইউএসপি হল এক্সপেরিমেন্টাল, সোলো আর রেসপনসিবল ট্র্যাভেলিং। শূন্য থেকে শুরু করে আজ মাসে ২,০০,০০০ টাকা পর্যন্তও রোজগার করেন শিবা।
ব্লগিং আর সোশাল মিডিয়া ক্যাম্পেইন করেন শিবা। উল্লেখযোগ্য ট্র্যাভেল কোম্পানিগুলি শিবার ট্র্যাভেলিং ফিলোসফি শেয়ার করে। জীবনে যে চ্যালেঞ্জ শিবা নিয়েছেন তা হল অনিয়মিত রোজগার। আগে থেকে তাঁর উপার্জন কত হবে বলা যায় না। তবে তিনি বলেন এটা 'ফিনান্সিয়াল অ্যাডভেঞ্চার'। শিবা আমাদের বললেন, ভালবাসলেই ব্লগিং করা উচিত। নইলে এই অনিশ্চিত রোজগারের জগতে টিকে থাকা মুস্কিল। শিবার ব্লগিং পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে ট্র্যাভেল ডেসটিনেশন আর লাইফ-স্টাইল বেছে নেওয়া পাঠক তাঁকে মুগ্ধ করে। আপনারা শিবাকে Instagram-এও পাবেন।
এবার আলাপ করব হায়দরাবাদের অমিত ভবানীর সঙ্গে। অমিত amitbhawani.com-এ তাঁর ব্লগিং শুরু করেন এক দশকেরও বেশি আগে। সালটা ছিল ২০০৪। তবে ওঁর বর্তমান প্রোজেক্ট PhoneRadar.com-এর কথা ২০১৪-র সেপ্টেম্বরে ঘোষিত হয়েছে। অমিত প্রথমে প্রযুক্তি আর স্মার্টফোন নিয়ে লেখা শুরু করেন।
সঠিক স্মার্টফোন কেনার অন্তর্দৃষ্টি দেন তিনি। এই বছর বত্রিশ বছরের এই ব্লগার ১০০০ ডলারে Tesla Model 3 রিসার্ভ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন Tesla-র তরফ থেকে কনফিগারেশন এবং ডেলিভারি সংক্রান্ত আপডেটের অপেক্ষায় আছেন, যেটি ২০১৭-র শেষে হয়ে যাওয়ার কথা। দেশে স্মার্টফোন নিয়ে টেকনোলজি রিলেটেড নিউজ দেবার ক্ষেত্রে তাঁর টিম দ্রুততম আর সেটাই অমিতের সাফল্যের চাবিকাঠি। এক্সক্লুসিভ স্কুপস যার হদিশ অন্য কোথাও পাবেন না, পাবেন অমিতদের কাছে। তিনি বললেন তাঁরা এমন এক দল গঠন করছেন যারা সমস্ত পুঙ্খানুপুঙ্খ কিন্তু জরুরি খবরের সন্ধান রাখবেন যা হয়তো অন্য মেনস্ট্রিম মিডিয়ার চোখ এড়িয়ে যাবে। কত আয় হয় সেই রহস্যের জাল ভেদ না করলেও অমিত জানিয়েছেন দুবছরেই ব্রেক-ইভেন ছুঁয়ে ফেলেছেন ওঁরা। সেই ভেঞ্চারই ফলো করছেন যা ভবিষ্যতে লাভ দেবে।
Google Adsense Program থেকে টাকা আসে। তাছাড়াও leader board-র অ্যাড নিয়ে কাজ করে এমন অ্যাডভার্টাইজিং নেটওয়ার্কের মারফত অর্থ রোজগার করেন তাঁরা। দিনে দিনে খরচ বাড়ছে। সামাল দেওয়ার জন্য নেটিভ অ্যাডভার্টাইজিংযের কথাও ভাবছেন। Google Adsense Platform থেকে টাকার পরিমাণ একটু কমবে কারণ অ্যাডভার্টাইজাররা Facebook ad platform-এ সরে যাচ্ছেন।
ওঁদের এই মুহূর্তের সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হল অ্যাড ব্লকিংয়ের মোকাবিলা। পাঠক টুইটার এবং সাইটের বিভিন্ন অ্যাড ব্লক করে দেন। Google AMP ব্যবহার করেন যেখানে ওয়েবসাইটের অ্যাড-হীন লাইটার ভার্সন দেখানো হয়। অমিত গ্রাহকের দিকে নজর দেওয়ার টিপস দিচ্ছেন। যদি কনটেন্ট সুপাঠ্য হয় অবশ্যই সেক্ষেত্রে পেড সাবস্ক্রিপশান মডেল বেছে নেওয়া উচিত। এটাই সম্ভবত কনটেন্ট ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ।
২০১৭ নাগাদ অমিতরা এবিষয়ে অল্পকিছু পাঠকের মধ্যে একটা পরীক্ষা করবেন। অমিত ভবানীর ওয়েবসাইট প্রতিমাসে ১৪ শতাংশ বৃদ্ধির হার নিয়ে এগোচ্ছে। হিন্দি সাইট লঞ্চের ঘোষণাও ভীষণ জোরদার সাড়া পেয়েছে। পাঠকের উৎসাহ আর ফিডব্যাক তাঁদের আরও দৃঢ়ভাবে কাজের প্রেরণা দেয়। অনেক আনন্দের মুহূর্তের পাশাপাশি বেদনাদায়ক ঘটনা হল অমিতকে Flipkart একবার অন্যায়ভাবে আইনি অভিযোগে জড়িয়ে দেয়।
আরও একটু সবুর করুন। গল্প এখনো বাকি আছে বন্ধু।... আসছেন আরও কয়েকজনের কাহিনি...