অফিস যেতে আর হবে না দেরি!

অফিস যেতে আর হবে না দেরি!

Wednesday December 09, 2015,

3 min Read

এ বার গুজরাতের ভদোদরাতেও যাত্রী পরিষেবা শুরুর কথা ঘোষণা করল মুভ ইন সিংক (MoveInSync)। অফিসে কর্মচারীদের নিয়ে আসা ও বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে বেঙ্গালুরুর এই সংস্থা। সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা দীপেশ আগরওয়াল বললেন,"একশোটি স্মার্ট সিটির তালিকায় নাম থাকা ভদোদরাতে এই পরিষেবা চালু করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আইটি হাব হিসাবে গড়ে উঠতে চলেছে এই শহর। সরকার ও ভদোদরা চেম্বার অব কমার্সের নিরন্তর চেষ্টাতেই এটা সম্ভব হতে চলেছে।"

দেশজুড়ে এই মুহূর্তে ১৫টি শহরে কার-পুলিং সার্ভিস দিয়ে থাকে মুভ ইন সিংক। সেই তালিকায় ভদোদরাকে যুক্ত করা হল কেন? এ জন্য পুনের এক ক্লায়েন্টকেই কৃতিত্ব দিচ্ছে সংস্থা। সেই ক্লায়েন্টের থেকেই সংস্থা জানতে পারে ভদোদরায় অসংখ্য বহুজাতিক ও কর্পোরেট সংস্থা রয়েছে। সমস্যা রয়েছে পরিবহণের। সেই ভাবনা থেকেই ভদোদরাতে পরিষেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থা।


image


মুভ ইন সিংকের পরিষেবা নিয়ে থাকে নামজাদা বহু সংস্থা। এর মধ্যে রয়েছে Google, Microsoft, HSBC, Adobe, Oracle, Wipro-র মতো সংস্থাও। আগরওয়ালের দাবি, তাঁদের এই পরিষেবার মাধ্যমে সময়ে অফিস পৌঁছনো কোনও সমস্যাই নয়। সাধারণভাবে যেতে যে সময় লাগে, তার ওয়ান-ফিফ্‌থ কম সময়েই কর্মচারীরা অফিসে পৌঁছে যান। সময়ের এই সাশ্রয় কাজে লাগে প্রোডাকটিভ অফিস ওয়ার্কেই। আসলে প্রযুক্তি নির্ভর এই পরিষেবার সেটাই প্লাস পয়েন্ট। সে কারণেই দেশের পনেরোটি শহরে এক লক্ষেরও বেশি কর্মীকে রোজ এই পরিষেবা দিতে পারছে সংস্থা। এ জন্য সংস্থাকে রাস্তায় নামাতে হয় ১০ হাজারের মতো গাড়ি।

বড়-বড় শহরে যানজট একটা সমস্যা। কর্পোরেট সংস্থাগুলি কর্মীদের কার পিক-আপ ও ড্রপিংয়ের ব্যবস্থা করলেও যানজটের নাগপাশে পড়তেই হয়। পথেই নষ্ট হয় অমূল্য সময়। দেখা গিয়েছে বড়-বড় সংস্থাগুলি বছরে কার পুলিংয়ের জন্য ১০০ থেকে ২০০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করে থাকে। উপযুক্ত পরিষেবা দিয়ে সেই খরচের ২০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারলে সংস্থার অনেক টাকা বেঁচে যেতে পারে। ২০০৯ সালে বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন দীপেশ আগরওয়াল, আকাশ মাহেশ্বরী এবং অনুব্রত অরোরা। তাঁরা বুঝতে পারেন এমপ্লয়ি ট্র্যান্সপোর্ট সেক্টরটি সেভাবে সংগঠিত নয়, যার ফলে কোম্পানি ও স্টাফ দু'পক্ষকেই অসুবিধার মুখে পড়তে হয়। সঙ্গে রয়েছে মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়টি। মাল্টিপল সাপ্লায়ারদের থেকে গাড়ি নেওয়া হয়। চালকদের কে কেমন জানা থাকে না। 

সামগ্রিক এই ভাবনা থেকেই তিনজনে গড়ে তোলেন মুভ ইন সিংক। বর্তমানে এমপ্লয়ি ট্রান্সপোর্টেশন ক্ষেত্রে অত্যন্ত সুনামের অধিকারী এই সংস্থা। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্থাকে পরিষেবা দিয়ে থাকে মুভ ইন সিংক। খরচ কী ভাবে কমানো যায় ও আরও সঠিকভাবে খরচ, এই দুটি ভাবনাই এগিয়ে নিয়ে চলেছে বেঙ্গালুরুর সংস্থাটিকে।


image


এমপ্লয়ি ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজমেন্টে সংস্থার ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্যাম হল Employee Transportation Solution (ETS)। SaaS (Software as a Service) হিসাবে এই পরিষেবা মেলে। যে যে সুবিধার কথা বলা হয় তা নিচে তুলে ধরা হল -

  • রিয়াল টাইম ভিত্তিতে কর্মী পরিবহণে ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজারের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ
  • অফিস স্টাফ অনুযায়ী পিক-আপ ও ড্রপিংয়ে গাড়ির ব্যবহার
  • অতিরিক্ত গাড়ির ব্যবহার বন্ধ করে ২০ শতাংশ পর্যন্ত আর্থিক সাশ্রয়
  • পরিবহণ খরচ সংক্রান্ত কাগজপত্রের ঠিকঠাক রেকর্ড রাখা
  • বিলিং সংক্রান্ত রেকর্ড পেপারলেস করে খরচ বাঁচানো
  • মহিলা অফিস স্টাফের নিরাপত্তায় জোর, সেভাবে রুট প্ল্যান করা হয়
  • মহিলাদের যথাসম্ভব প্রথমে তোলা বা শেষে নামানো হয় না

যে ১৫টি শহরে সংস্থা কার পুলিং পরিষেবা দিয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে ভাইজ্যাগ বা বারমের-এর মতো ছোট শহরও। লক্ষ্য আগামী দিনে আরও বেশি বেশি শহরে পরিষেবা দেওয়া। বর্তমানে মুভ ইন সিংকের নিজস্ব কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় একশো। ২০১৪ সালে সংস্থার আয় হয়েছিল প্রায় ৫ কোটি টাকা। চলতি বছরে সেই আয় দ্বিগুণ হবে বলেই সংস্থা আশা করছে।

সোর্স- পিটিআই