মকর পরবে জঙ্গলমহল পেল টুসুমন্দির

মকর পরবে জঙ্গলমহল পেল টুসুমন্দির

Friday January 22, 2016,

2 min Read

টুসুকে আনতে যাব
চন্দন কাঠের চৌদালে
টুসু যদি দয়া করে
রাখব সোনার মন্দিরে...

মাওবাদীরা মিলিয়ে গেছে। এখন আর গোলাগুলির ভয় নেই। অন্তত এমনটাই বলছে জঙ্গলমহল। তাই এবারের মকর পরব অন্যবারের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। জল-জঙ্গলের আকাশে বাতাসে টুসুদেবীর আরাধনার সুর। মেঠো গান। তাল মিলিয়ে আদিবাসীদের নৃত্যবিভঙ্গ। সঙ্গে ধামসা মাদল। মিঠে রোদ পিঠে মেখে অথবা কাঠের আগুনের মায়াবী আলোয় দারুণ রোমান্টিক আয়োজন। পর্যটকদের জন্য আর কী চাই! শহর থেকে দু-একদিনের জন্য কেটে পড়তে পারলে এই সময়ের জঙ্গলমহল মন্দ আইডিয়া নয়।

image


জঙ্গলমহলে এবারের মকর পরবে বাড়তি পাওনা টুসুমন্দির। ঝাড়গ্রামের নাদনগেড়িয়া গ্রামে তিন ফুট উচ্চতার টুসুমূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। পাথরের এই মূর্তির সৃষ্টিকর্তা বেলপাহাড়ির পাথরশিল্পী তপন সিং। পূর্ব ভারতের কোনও রাজ্যে এই প্রথম টুসুমন্দির। নিসন্দেহে জঙ্গলমহল পর্যটনের বাড়তি আকর্ষণ হবে এটি। অঘ্রান সংক্রান্তি থেকেই জঙ্গলের ঘরে ঘরে চলে টুসুমণির আরাধনা। পৌষ সংক্রান্তির দিন নদীর জলে টুসু ভাসানোর রীতি। গোটা জঙ্গলমহলে ভাসে ধামসা মাদলের বোল। ঝুমুরের রিনঝিন। কোমর দুলিয়ে মাথায় কলসি নিয়ে পরব মানায় সাঁওতাল মহল। এতদিন কোনও স্থায়ী টুসুমন্দির ছিল না। এই প্রথম টুসু মন্দির পেয়ে জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের পরবের আনন্দ দ্বিগুন হয়েছে। বসেছে টুসু মেলা। প্রতিদিন বিকেলে ক্রীড়া আর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন চলছে জঙ্গল মহলে। সূর্য ডুবলেই লোকগানের আসর। ঝুমুর, বাউল, টুসু, সাঁওতালি গান যেমন চলে সঙ্গে পাতা, ছৌ, পাইক আর সাঁওতাল নাচ। সব মিলিয়ে মাঘের জঙ্গলমহল এখন দারুণ জমাটি।

image


একদিকে মেলা, অন্যদিকে পর্যটন। জঙ্গলবাসী বলছেন, ওদের নাকি বৃহস্পতি তুঙ্গে। মাওবাদী আশঙ্কার কালো মেঘ কেটে যেতেই নিজস্ব সৌন্দর্য নিয়ে তৈরি নিঃস্বর্গ। গা-ঝাড়া দিয়ে নতুন করে জেগে উঠছে জঙ্গল। অভাবের অন্ধকার ধীরে ধীরে সরছে, ঘরে দুবেলা খাবারের সংস্থান হচ্ছে। হাসি ফুটছে অবহেলায় পিছিয়ে থাকা জনজাতি সম্প্রদায়ের।