জলবায়ু সচেতনতা নিয়ে ঝাড়গ্রামে পৌঁছল সায়েন্স এক্সপ্রেস

জলবায়ু সচেতনতা নিয়ে ঝাড়গ্রামে পৌঁছল সায়েন্স এক্সপ্রেস

Tuesday January 26, 2016,

2 min Read

সায়েন্স এক্সপ্রেস। নাম শুনেই বোঝা যায়, যে এটা কু ঝিক ঝিক দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেন নয়। আবার ট্রেনও বটে। পুরও নাম ‘সায়েন্স এক্সপ্রেস ক্লাইমেট চেঞ্জ স্পেশাল’। ২০০৭ সালে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ১৬ কামরার এই ট্রেনটি বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিভাগের জন্য ভারতীয় রেল বিশেষভাবে তৈরি করায়। দেশের বিভিন্নপ্রান্তে ঘুরেছে এই এক্সপ্রেস। ঘুরতে ঘুরতে এবার এসে পৌঁছল ঝাড়গ্রাম। মূলতঃ দূষণের ফলে জলবায়ুর পরিবর্তন কীভাবে জীব বৈচিত্র্য ও মানব সভ্যতার উপর আঘাত হানছে, তা অত্যন্ত সহজ সরল ভাবে উপস্থাপন করা হয়। সমাধানের পথ কী সেটাও দেখানো হয়। ২২ জানুয়ারি থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রদর্শনী হল ঝাড়গ্রামে। প্রথম দিনেই সাড়ে আট হাজার দর্শক! এর মধ্যে দু’হাজারের বেশি স্কুল পড়ুয়া। ট্রেনটির প্রদর্শনী দেখার জন্য দিনভর ঝাড়গ্রাম রেল স্টেশনে আগ্রহীদের দীর্ঘ লাইন ছিল চোখে পড়ার মতো।

image


ঝাড়গ্রাম স্টেশনের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে এই প্রদর্শনী ঘিরে মেলা বসে গিয়েছে। ট্রেনে প্রদর্শনী দেখতে হাজার হাজার স্কুল পড়ুয়া সকাল থেকেই লাইন করে দাঁড়ায়। ঝাড়গ্রাম শহর ও আশপাশের এলাকার পাশাপাশি, ডেবরা, সবং, বালিচকের দূরদূরান্তের এলাকা থেকে বহু স্কুলের পড়ুয়া প্রদর্শনী দেখার জন্য এসেছিল। আস্ত একটি ট্রেনের ভিতর এমন প্রদর্শনী দেখে অভিভূত স্কুল পড়ুয়ারা। প্রদর্শনীর কো-অর্ডিনেটর বিমল এন পিল্লাই জানান, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধ করার বার্তা নিয়ে গত বছর ১৫ অক্টোবর দিল্লির সফদরজঙ্গ স্টেশনে প্রদর্শনীটির সূচনা হয়। দেশের ২০টি রাজ্যের ৬৪টি রেল স্টেশনে প্রদর্শনী ট্রেনটি থামবে। এ পর্যন্ত দেশের ৩২টি স্টেশনে প্রদর্শনীটি দেখানো হয়েছে। ঝাড়গ্রাম স্টেশনে ৩৩ তম প্রদর্শনীটি হয়ে গেল। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মধ্যে কেবলমাত্র ঝাড়গ্রাম স্টেশনেই প্রদর্শনী ট্রেনটি থামল। এরপর পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘা স্টেশনে প্রদর্শনী ট্রেনটি যাবে। এবার ১৯ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবে এই ট্রেন’। প্রদর্শনীটি ব্যাখ্যা করার জন্য ট্রেনটিতে রয়েছেন ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের ৩৭ জন কমিউনিকেটর। তবে ঝাড়গ্রামের একটি সংস্থার সহযোগিতায় ১১ টি কামরায় প্রদর্শনীর বিষয়বস্তু বাংলায় তর্জমা করছেন ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন কলেজের স্নাতকস্তরের ১১ জন পড়ুয়া।

ট্রেনের ১৩টি কামরায় প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রয়েছে। একটি কামরায় রয়েছে বিজ্ঞান গবেষণাগার। রয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য ওরিয়েন্টশনের ব্যবস্থা। ১২ নম্বর কামরাটি মজার মজার খেলায় ভর্তি। বিজ্ঞান,গণিত আর পরিবেশ নিয়ে অনেক কিছু শেখার রসদ আছে ট্রেনজুড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কীভাবে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, বিঘ্নিত হচ্ছে খাদ্য সুরক্ষা,কীভাবে এইসব সমস্যার মোকাবিলা করা যায়, তার বিভিন্ন পদ্ধতিও প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় পরিবেশ-বন-জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের যৌথ পরিকল্পনায় ভারতীয় রেলের তরফে বিশেষভাবে এই ভ্রাম্যমান প্রদর্শনী-ট্রেনটি তৈরি করা হয়েছে। প্রদর্শনীটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে আমদাবাদের বিক্রম এ সারাভাই কমিউনিটি সায়েন্স সেন্টার নামে একটি সংস্থা। স্থানীয় ভাবে সহযোগিতায় ছিল ঝাড়গ্রাম ট্যুরিজম। চলতি বছরের মে মাসে প্রদর্শনীটি গুজরাতের গান্ধিনগরে গিয়ে শেষ হবে।