সিঙ্গাপুরের Tabsquare এর সাফল্যে সামিল কলকাতাও

সিঙ্গাপুরের Tabsquare এর সাফল্যে সামিল কলকাতাও

Sunday May 22, 2016,

2 min Read

আপনি ধরুন রেস্তোরাঁয় গেলেন। টেবিল দখল করে বসলেন। কিন্তু তাজ্জব ব্যাপার কেউ এগিয়ে এসে আপনাকে মেনু ক্যাটালগ ধরিয়ে দিল না। অর্ডার নিল না। হয়ত দেখলেন যে টেবিলে বসেছেন সেখানেই লাগানো রয়েছে একটি স্মার্টট্যাব সেই-ই আপনার নিজস্ব ওয়েটার। ব্রাউজ করে বাছাই করলেন আপনার পছন্দের মেনু। এক ক্লিকে অর্ডার। পেমেন্ট। খেয়ে দেয়ে মুখ মুছে বেরনর আগে দিয়ে দিলেন আপনার ফিডব্যাক মার্ক। সেটাই টিপস। আর গোটাটাই আপনার থ্রিলিং এক্সপিরিয়েন্স। ক্রেতা যেমন স্বাধীনতার এই সুখের অভিজ্ঞতা পেল, রেস্তরাঁ যিনি চালাচ্ছেন তিনিও পেলেন এক পরিচ্ছন ব্যবসা। গোটাটাই ক্লাউডে থাকল। ফলে অভিজ্ঞতাগুলো জুড়ে দিয়ে ভবিষ্যতের শিক্ষা পেয়ে যাওয়ার সুযোগটাও রইল। 

image


না এটা কোনও সায়েন্স ফিকশন নয়। এরকম আছে। এরকম হয়। এরকম যে হতে পারে ২০১২ সালে ভেবেছিলেন ভারতের তিন তরুণ। যেমন ভাবা তেমন কাজ। এই ক্লাউড বেস্‌ড রেস্তরাঁ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমটি তৈরিও করে ফেলেছেন ভারতের তিন উদ্যোগপতি। সেই প্রথম। ফলে ওরাই ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে ক্রেতাকে সামিল করে রেস্তরাঁ ম্যানেজমেন্টের ব্যবসায় ওরাই পায়োনিয়র।

তবে এখনও ভারতে নয় ওদের কর্মকাণ্ডের গোটাটাই সিঙ্গাপুরে। স্টার্টআপটির নাম ট্যাবস্কোয়ার। ২০১২-য় তৈরি হয়েছে। কাজ সিঙ্গাপুরে হলেও কলকাতার সঙ্গে ওতোপ্রোতো ভাবে যুক্ত। এই উদ্যোগপতিদের কারওরই জন্ম কলকাতায় নয়। কিন্তু কাজের সূত্রে কলকাতায় ছিলেন দীর্ঘদিন। আরও একটা যোগ আছে। ওরা ২০১৩ য় যখন প্রথম সিড ফান্ড জোগাড় করেন তখন এগিয়ে এসেছিল কলকাতার অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টমেন্ট নেটওয়ার্ক সংস্থা, ক্যালকাটা অ্যাঞ্জেলস। এবার তিন বছর পর আরও একটা ধাপ এগলো ট্যাবস্কোয়ার। মূলত ওয়াল্ডেন ইনভেস্টমেন্ট এবং আরও বেশ কিছু ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সংস্থার কাছ থেকে ২৫ লক্ষ ৭০ হাজার মার্কিন ডলারের সিরিজ এ ফান্ডিং তুলে নিল এই সংস্থা। এর ফলে সিঙ্গাপুর সহ পূর্ব এশিয়ার বাজার ধরতে এবং ব্যবসা আরও প্রসারিত করতে পারবে ট্যাবস্কোয়ার।

image


সংস্থার সিইও এবং অন্যতম ফাউন্ডার অনশুল গুপ্তা, বলছিলেন ওরা এই ফান্ডিংয়ের ফলে সিঙ্গাপুরের বাজার দখল করতে চান ওরা। অনশুল কলকাতা আইআইএমের ছাত্র। দীর্ঘ ৮ বছর আইটিসিতে কাজ করেছেন। চিরাগ মুম্বইয়ের ছেলে। আর শঙ্করণ মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়র। আইআইএসসির অ্যারোস্পেস ল্যাবে ছিলেন। তিনজনই ম্যানেজমেন্ট পড়তে গিয়েছিলেন INSEAD এ। সেই থেকে আলাপ। তিনজনের বন্ধুত্ব বাণিজ্যিক মডেল তৈরি পর্যন্ত গড়ালো। ফুড এবং বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন তিন জনই। তাই যখন ব্যবসার আইডিয়া বাল্ব জ্বলে তখন এই ইন্ডাস্ট্রিতেই কিছু করে দেখানোর ইচ্ছে তৈরি হয়। বাজার তখন নিরঙ্কুশ না হলেও, প্রতিযোগীর সংখ্যা ছিল হাতে গোণা। এখন বাজারে প্রতিযোগীর সংখ্যা বেড়েছে তবুও সিঙ্গাপুরে ট্যাবস্কোয়ার যথেষ্ট সুখ্যাতি অর্জন করতে পেরেছে। ইতিমধ্যেই ৬০টি ফুড ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করে এই সংস্থা। ১৫০ টিরও বেশি খাবারের আউটলেটে রয়েছে তাদের স্মার্ট সলিউশন।

ট্যাবস্কোয়ারের এই সাফল্যে স্বভাবতই খুশি ক্যালকাটা অ্যাঞ্জেলস। সংস্থার প্রেসিডেন্ট সিদ্ধার্থ পানসারি বলেন, এই সাফল্য আরও অনেক অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টরকে এই পূর্বভারতের ইকোসিস্টেমে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করবে। ফলে 'আচ্ছে দিন' এর স্বপ্ন দেখছেন কলকাতা অ্যাঞ্জেলসও।