হস্তশিল্পীদের সঙ্গে ক্রেতার সেতু গড়ছে ‘শিল্পমন্ত্র’

দেশ তথা, বিশ্ব বাজারে নাম রয়েছে তাদের। ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃ‌তির জন্য চাহিদা ছিল রাজস্থানি হস্তশিল্পের। প্রতি বছর বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনায় এই চাহিদা বৃ্দ্ধি পাচ্ছিল। চাহিদা মতো জোগানও দিয়ে চলেছিলেন হস্তশিল্পীরা। কিন্তু হস্তশিল্প থেকে পণ্য বিক্রেতা পর্যন্ত পৌঁছতে কোথাও যেন ফাঁক থেকে যাচ্ছিল। অক্লান্ত পরিশ্রম করেও উপযুক্ত পারিশ্রমিক পাচ্ছিলেন না শিল্পীরা। রাজস্থানী হস্তশিল্পের ‘লাভের গুড়’ খেয়ে যাচ্ছিল কিছু মধ্যস্থতাকারী বা ফোড়ে। যে কারণে এই শিল্প ছেড়ে অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছিলেন হস্তশিল্পীরা। রাজ্যের হস্তশিল্পের ‘অকালমৃত্যুর আশঙ্কা’ করছিলেন কেউ কেউ। শেষে বিপদ বুঝে হস্তশিল্পী ও ক্রেতাদের মধ্যে সরাসরি সেতু গড়লেন তিন ব্যক্তি। মুক্তি পেল অনলাইন পোর্টাল ‘শিল্পমন্ত্র’।

হস্তশিল্পীদের সঙ্গে ক্রেতার সেতু গড়ছে ‘শিল্পমন্ত্র’

Monday September 14, 2015,

1 min Read

২০১৩ সালের কথা। রাজস্থানের হস্তশিল্পকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন তিন ভূমিপুত্র। লোকেন্দ্র রানাওয়াত, বীরেন্দ্র রানাওয়াত ও সন্দীপ গৌড় মিলে শুরু করলেন ‘শিল্পমন্ত্র’। ইন্টারনেটে বিপণন ও ব্যবসা সম্পর্কে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা ছিল তিনজনের। ফলে শুরুতেই সাফল্যের মুখ দেখলেন তাঁরা।


লোকেন্দ্র, বীরেন্দ্র ও সন্দীপ

লোকেন্দ্র, বীরেন্দ্র ও সন্দীপ


মূলত, স্থানীয় শিল্পীদের পণ্য অনলাইন পোর্টালে দেখানোর সুযোগ করে দেয় ‘শিল্পমন্ত্র’। দীর্ঘ দিন ফোড়েদের কারণে যে উপযুক্ত পারিশ্রমিক শিল্পীর পেতেন না, আজ তা সহজেই হাতে আসে তাঁদের। এছাড়া দেশি ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী হস্তশিল্পীদের প্রশিক্ষিত করে সংস্থা। নির্ধারিত সময় অন্তর অন্তর হস্তশিল্প কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

ইতিমধ্যেই শিল্পমন্ত্রের চিন্তাধারা হস্তশিল্পীদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে। ফোড়েরা না থাকায় প্রায় ৩০০ গ্রামে ২০০ হস্তশিল্পী নিজেদের কাজ পোর্টালে জমা দিয়েছেন। যা দেখে ২০ হাজারেরও বেশি পণ্যের অর্ডার এসেছে। পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন গড়ে ‘শিল্পমন্ত্র’-র সাইট দেখেন তিন হাজারের বেশি গ্রাহক। ষাটেরও বেশি দেশের শিল্প অনুরাগীরা এই পোর্টালের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন। মাত্র আট মাসের মধ্যে ৬০ লক্ষেরও বেশি টাকার ব্যবসা করেছে এই অনলাইন পোর্টাল।

ফোড়েদের মতো একাই ‘লাভের গুড়’ খাওয়ার রাস্তায় হাঁটেননি লোকেন্দ্র, বীরেন্দ্র ও সন্দীপ। তবে এই বিপুল কর্মকাণ্ড চালাতে শিল্পীদের থেকে ১৫ শতাংশ নিজেদের কাছে গচ্ছিত রাখেন তাঁরা। বাকিটা সরাসরি পৌঁছে যায় শিল্পীদের হাতে। তবে এই টাকা দিতে আপত্তি নেই শিল্পীদের। উল্টে তাঁদের মত, শিল্পমন্ত্রই জীবনযন্ত্র। যন্ত্রণার এখানে জায়গা নেই।