তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে পিকি

তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে পিকি

Tuesday December 22, 2015,

3 min Read

ক্রেতাদের চাহিদা, তাঁদের পছন্দ-অপছন্দগুলি জেনে নেওয়া যে কোনো ব্যবসার জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য সাহায্য নেওয়া হচ্ছে নানা উন্নত প্রযুক্তির, তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন মার্কেট রিসার্চ টুল। ক্রেতা বা টার্গেট অডিয়েন্সদের ভালোলাগা মন্দলাগা আগ্রহ আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি জেনে নিয়ে নিজেদের মার্কেটিং এর কৌশল স্থির করছে কোম্পানিগুলি।


image


এরকমই এক মার্কেট রিসার্চ টুল পিকি। তবে দীর্ঘদিন ধরে ক্রেতার অভ্যাস ও পছন্দের দিকে নজর রেখে তা বিশ্লেষণ করার পথে হাঁটছেন না পিকির উদ্ভাবক ও প্রতিষ্ঠাতা ইন্দ্রায়ুধ ঘোষাল, বরং কোম্পানিগুলিকে তাঁদের ক্রেতাদের পছন্দ সম্পর্কে চটজলদি উত্তর দিতে চান তিনি। পৃথিবীতে মার্কেট রিসার্চ ক্ষেত্রটি ৪০ বিলিয়ন ইউএস ডলারের, কিন্তু পিকি শুধুমাত্র তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রটিকেই বেছে নিয়েছে।

ইন্দ্রায়ুধ বললেন, “পিকির ব্যবসা মডেলটি ডিসরাপটিভ, আমরা এমন একটি ক্ষেত্রকে বেছে নিয়েছি যেখানে কাজ হয়েছে কম। দীর্ঘ সময় ধরে সর্বাঙ্গীন একটি চিত্র তুলে ধরার বদলে আমরা সেই সব ব্যবসাকে পরিষেবা দেব যারা তাত্ক্ষণিক উত্তর চায়”। পিকিকে পৃথিবীর র্যা পিড মার্কেট রিসার্চের প্রথম সারিতে দেখতে চান ইন্দ্রায়ুধ।

ইন্দ্রায়ুধের ছোটবেলা কেটেছে বেঙ্গালুরুতে, এরপর ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা ও টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের রটম্যান স্কুল অফ ম্যানেজমেন্ট থেকে এমবিএ।


image


“প্রযুক্তির সঙ্গে মানুষের আদান-প্রদান লক্ষ্য করতে ভালবাসি আমি, যখন প্রযুক্তির কোনো জায়গায় সে ধাক্কা খায় তার যে বিরক্তি, বা কোনো কিছু খুব সহজেই করে ফেলার যে আনন্দ তার চোখে মুখে ফুটে ওঠে, এগুলো দেখতে খুব ভাললাগে”, বললেন ইন্দ্রায়ুধ।

কর্মজীবনে টোরোন্টোর একটি ব্যাঙ্কে (সিআইবিসি) অ্যানালিটিক সল্যুশন প্রদানকারী টিমকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ইন্দ্রায়ুধ, এরপর বেঙ্গালুরুর তথ্য বিশ্লেষক সংস্থা, ফোর্থলায়ন টেকনোলজিসে সিওও হিসেবে কাজ করেন। রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্বাচনী প্রচারের জন্য তথ্য সরবরাহ করে ফোর্থলায়ন টেকনোলজিস, সেখানে পোলিং প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাবানি তৈরি করা ও পরিচালন করার দায়িত্বে ছিলেন ইন্দ্রায়ুধ। এখানে কাজ করার সময়ই তিনি অনুভব করেন ডেটা অ্যানালিটিকসের ভাল বাজার রয়েছে।

২০১৫ এর মে মাসে ফোর্থলায়নের চাকরি ছেড়ে দেন ইন্দ্রায়ুধ, নিজের ব্যবসা করবেন বলে। সেখান থেকেই জন্ম পিকির। তিনটি প্রশ্নভিত্তিক সমীক্ষার বিশ্লেষণ চার ঘন্টার মধ্যে পৌঁছে যাবে গ্রাহকের কাছে, ফলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হবেন তিনি, দাবি ইন্দ্রায়ুধের, বললেন, “পিকি মার্কেট রিসার্চের চাহিদা বহুগুণ বৃদ্ধি করবে, ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী ও ব্যক্তিরা যারা এখন তথ্য সমীক্ষার সুযোগ নেন না তাঁরাও গ্রাহক হিসেবে বাজারে প্রবেশ করবেন”।


image


আগামি জানুয়ারিতেই ভারত, ইউএস ও কানাডায় কাজ শুরু করবে পিকি। অ্যানরয়েড অ্যাপ ও ওয়েব অ্যাপের মাধ্যমে মিলবে পরিষেবা।

১০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ সংগ্রহ করেছে পিকি, লক্ষ্য রয়েছে অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে ৫০ লক্ষ টাকা সংগ্রহের।

পরিবার ও বন্ধুদের থেকে সহযোগিতা ও সমর্থন পেয়েছেন ইন্দ্রায়ুধ, সাহায্য পেয়েছেন জীবন সঙ্গীনি রিয়ার থেকে। “নিজের উদ্যোগে প্রচুর স্বাধীনতা রয়েছে, কিন্তু কিছু বিষয়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, দীর্ঘ সময়ের জন্য কোনোরকম বেতন ছাড়াই জমানো টাকাতে জীবন কাটাতে হবে। বিনিয়োগকারী পেলেও তিনি ব্যবসাতে বিনিয়োগ করবেন, আপনাকে বেতন দিতে নয়”, বললেন ইন্দ্রায়ুধ।

আরও বললেন, “নিজের ব্যবসায় প্রাপ্তি আনেক, সবসময়ই। সাফল্য বা ব্যর্থতা দুটো থেকেই শিক্ষা নেওয়ার আছে। চাকরিতে তো যে কোনও সময়ে ফিরে যাওয়া যায়, কিন্তু ‘আমি এটা গড়ে তুলেছি’, এর মধ্যে যে আনন্দ, পে চেকে সেটা কখনোই পাওয়া যাবে না”।

ইন্দ্রায়ুধ মনে করেন, নিজের উদ্যোগে কোনো ধীরে চলার সময় নেই, সমস্যা আসুক, বা সুযোগ কোনো কিছুই কালকের জন্য অপেক্ষা করবে না। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর উপদেশ, “এমবিএতে টাকা ব্যয় না করে নিজের স্টার্টআপ শুরু করুন, অনেক বেশি শিখবেন।”