ব্যাঙ্ক চাইছে বিনিয়োগ করুন, কমানো হচ্ছে সুদের হার

ব্যাঙ্ক চাইছে বিনিয়োগ করুন, কমানো হচ্ছে সুদের হার

Thursday November 24, 2016,

3 min Read

এখন যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে লক্ষ লক্ষ হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়ছে রোজ। ডিজিটাল ট্র্যান্সাকশানের সংখ্যা বেড়েছে ৩০০ শতাংশ হারে। আর পরিমাণ বেড়েছে ২০০ শতাংশ হারে। সব মিলিয়ে ব্যাঙ্কে টাকা বাড়ছে। জানালেন স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারপার্সন অরুন্ধতী ভট্টাচার্য। এর ফলশ্রুতিতে শুরু হয়েছে ব্যাঙ্কে সুদের হার কমানোর পালাও। দীর্ঘ মেয়াদি জমায় সুদের হার কমানো শুরু করে দিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। এর ফলে ঘুরিয়ে গ্রাহকদের বাজারে বিনিয়োগ করতে উৎসাহ দিচ্ছে খোদ ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সিংহভাগের অধিকারী এসবিআই। ফিক্সড ডিপোজিট রেট আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার তরফে সুদের হারের ক্ষেত্রে সংশোধন আনতে এই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। ২৪ নভেম্বর থেকে নতুন এই নিয়ম কার্যকর হল। তবে ১ কোটি টাকা থেকে ১০ কোটি টাকা যারা স্টেট ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রেখেছেন, তাঁরাই এই নতুন নিয়মের আওতায় পড়বেন।

image


সংশোধিত সুদের হার অনুসারে, ১৮০ থেকে ২১০ দিনের ক্ষেত্রে স্টেট ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকার ওপরে সুদের হার দাঁড়াবে ৩.৮৫ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে সুদের হার কমল ১.৯ শতাংশ। আগে ওই সময়সীমায় ১ থেকে ১০ কোটি টাকার ওপর সুদের হার দাঁড়াত ৫.৭৫ শতাংশ।

এক বছর থেকে ৪৫৫ দিনের ফিক্সড ডিপোজিটের ক্ষেত্রে সুদের হার ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে এখন ৪.২৫ শতাংশে দাঁড়াল। অন্যদিকে, ৭ দিন ও ৪৫ দিনের ক্ষেত্রে গচ্ছিত টাকার ক্ষেত্রে সুদের হার কমছে ১.২৫ শতাংশ। প্রসঙ্গত, চলতি মাসের গোড়াতেই ১ কোটি টাকার কমে গচ্ছিত রেখেছেন যে সমস্ত গ্রাহক, এসবিআই তাঁদের ক্ষেত্রেও ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হার কমিয়েছে।

ব্যাপারটির যৌক্তিকতা নিয়ে বলতে গিয়ে এসবিআই-এর সিএফও অনসুলা কান্ত বলছেন এই রেট কমানোর প্রভাব আদৌ পড়বে না, কারণ এখন ক্রেডিট অফ-টেক খুবই কম। ফলে ব্যাঙ্কগুলি সরকারি ক্ষেত্রেই বেশি বিনিয়োগ করবে। ৫০০, ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পরে ব্যাঙ্কে ইতিমধ্যে ১ লক্ষ ১৬ হাজার কোটি টাকা জমা পড়ছে। টাকা তোলার প্রবণতাও কমছে। পাশাপাশি কমছে অপ্রয়োজনীয় ঋণ নেওয়ার প্রবণতাও। এখন ব্যাঙ্কের সামনে দুটো রাস্তা খোলা, এক বিনিয়োগে উৎসাহিত করা। দুই ঋণ নেওয়ার জন্যে উৎসাহিত করা। সুদের হার কমালে দুইক্ষেত্রেই সুফল পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন ব্যাঙ্কিং পণ্ডিতরা। এসবিআই-এর দেখাদেখি অন্য ব্যাঙ্কগুলিও স্বভাবতই একই নীতি নীতি নিতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে যারা ব্যাঙ্ক ঋণ নেবেন অথবা যারা ইতিমধ্যে ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়েছেন তাঁরা কিছুটা লাভবান হতে চলেছেন। সাধারণ মানুষের কাছে এখন এটাই সবচেয়ে বড় লাভজনক ব্যাপার। প্রসঙ্গত, আরবিআই ইতিমধ্যে ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণের হার কমানোর ব্যাপারে চাপ দিয়েছে। ২০১৬ সালে প্রকাশিত আরবিআই-এর বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৫ সালে জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৬ সালে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক তাদের পলিসি রেট ১৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে। এরপরে ব্যাঙ্ক তাদের বেস রেট কমিয়েছে ৬০ বেসিস পয়েন্ট। এছাড়া, ডিপোজিট রেট কমিয়েছে ৯২ বেসিস পয়েন্ট (মিডিয়ম টার্ম)। 

অন্য ব্যাঙ্কগুলি স্টেট ব্যাঙ্কের পদাঙ্ক অনুসরণ করলে তারাও একই পথে চলবে। কিছুদিন আগেই ব্যাঙ্ক রিটেল ডিপোজিট রেট কমিয়েছিল ১৫ বিপি। অন্য ব্যাঙ্কগুলি এসবিআই-এর দেখানো পথেই হাঁটে তাহলে কর্পোরেট সংস্থাগুলি তাঁদের টাকা অব্যবহৃত ভাবে ফেলে রাখতে পারবে না। সেক্ষেত্রে নতুন করে আরও বিনিয়োগ সম্ভব। সেক্ষেত্রে সুদের হার কমবে, ক্রেডিট অফ-টেক ভাল অবস্থায় পৌঁছবে এবং নতুন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ ঘটবে। সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।