চেন্নাইয়ের রাস্তার ভিখিরি এখন কেমব্রিজের ছাত্র

চেন্নাইয়ের রাস্তার ভিখিরি এখন কেমব্রিজের ছাত্র

Monday September 19, 2016,

2 min Read

image


চেন্নাইয়ের পথবাসীদের একমাত্র আলোচ্য বিষয় এখন জয়াভেল। ওঁর গোটা পরিবার শহরের পথে পথে ভিক্ষা করে। আর বাইশ বছরের জয়াভেল এইমুহূর্তে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডভান্সড অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র।

"অবাক পৃথিবী, অবাক করলে তুমি...", জন্ম থেকে তাঁর ভিক্ষুক দরিদ্র পরিবারের সঙ্গে এই কঠিন দুনিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করছে জয়াভেল। আশির দশকে ওঁর পরিবার নেলোর থেকে জীবিকার খোঁজে শহরে চলে আসে। গ্রামে ওঁদের সব শষ্য নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এখানে গোটা পরিবারটাকে চরম দারিদ্র গ্রাস করে। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ওঁরা ফুটপাতে রাত কাটাতেন। বৃষ্টি পড়লে আশ্রয় খুঁজতেন কোনও দোকানের শেডের তলায়। পুলিশ এসে তাড়িয়ে দিত সেখান থেকেও।

বাবা মারা যাওয়ার পর তাঁর মা মদের প্রতি আসক্ত হয়ে যান। জয়াভেলের রোজগারের বেশিরভাগটাই খরচ হয়ে যেত এই মদে। জীবনে আশার আলো নিয়ে আসেন উমা মুথ্থুরামণ। উমা তাঁর স্বামী মুথ্থুরামণের সঙ্গে জয়াভেলকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। তাঁরা দুজন জয়াভেলের পরিবারের উপর একটি ভিডিও স্টোরি বানানোর পরিকল্পনা করেন। নাম দেন ‘Pavement Flower’। জয়াভেলের এখনও মনে আছে তাঁর লোকেরা উমাদের পছন্দ করতেন না। কারণ সাহায্যের নাম করে অনেকেই তাঁদের কাছে আসতেন। কিন্তু সেসবই সরকারি ফান্ড আদায়ের ফিকির। মুথ্থুরামণদের সদিচ্ছা ছিল। তাঁরা আন্তরিক ছিলেন। তাই জয়াভেলের ব্যবহারও তাঁদের প্রতি নরম হল। ১৯৯৯ সালে উমাদের NGO, Suyam Charitable Trust তাঁকে সঠিক পথে শিক্ষালাভের ব্যবস্থা করে দেয়।

তাঁর দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার ফল শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার। এরপর জয়াভেল কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। Wales-এর Glendwr University তে 'Performance Car Enhancement Technology Engineering' নিয়ে পড়বার সুযোগ পান।

জয়াভেলের কাছে উচ্চশিক্ষা ছিল তাঁর স্বপ্নপূরণের সোপান। শিক্ষাজীবনের শেষে তিনি পথবাসী শিশুদের উন্নয়নের স্বার্থে কর্মরত NGO গুলির সঙ্গে যুক্ত হতে আগ্রহী। ইওরস্টোরি জয়াভেল আর উমা মুথ্থুরামণদের আন্তরিক অভিনন্দন আর ধন্যবাদ জানায়।