চাকরিটা প্রত্যাখ্যান করুন,সাফল্য আসবে শুরুয়াতি ব্যবসাতেই

চাকরিটা প্রত্যাখ্যান করুন,সাফল্য আসবে শুরুয়াতি ব্যবসাতেই

Friday December 25, 2015,

3 min Read

আমি জানি, তুমি আমার কাছ থেকে কোনও উপদেশ নেবে না, কিন্তু তাও আমার মনে হয় উপদেশটা তোমায় দেওয়া উচিৎ, যদি একবার মিলিয়ে দেখার ইচ্ছে হয়। ধরো আকর্ষণীয় চাকরি পেলে, কিন্তু মনটা অ্যাডভেঞ্চার্স, তাহলে একবার ব্যবসায় নামার ঝুঁকি নিয়ে দেখবে নাকি? যদিও ব্যবসায়ী হওয়ার ইচ্ছেটা কিন্তু মনে প্রাণে থাকতে হবে।


image


তাহলে, একটা কাজ করি, আগে আমার পথচলাটা তোমাদের একটু জানাই। বরং বলা ভালো, নিজের প্রোমোশনটা নিজেই একটু করে নিই। ২০১১ সালে আমার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর দ্বিতীয় বর্ষে আমি প্রথম ব্যবসা শুরু করি। ওয়েবসাইট তৈরির দিকে আমার বরাবরই ভালোবাসা ছিল। আমার রুমমেটেরও তাই। তাই দুজনে মিলে তৈরি করে ফেললাম 'ডিজাইন ফ্রম দ্য হার্ট'। আমাদের প্রথম ওয়েবসাইট তৈরির ব্যবসা। কিন্তু সাফল্য এত বেড়ে গেল আমরা শুরু করলাম আমাদের দ্বিতীয় স্বপ্ন 'ক্যাম্পাস-হাস'। সালটা ২০১২, ডিসেম্বর। দুজনেই ততদিনে ঠিক করে নিয়েছিলাম, চাকরি করব না। 'ক্যাম্পাস-হাস'কে নিজেদের ছোটো সন্তানের মতই অতি যত্নে বড় করতে লাগলাম। এর মধ্যে দুজনেই বেশ বড় টাকার চাকরি পেলাম। কিন্তু ছেড়ে দিলাম। 'ক্যাম্পাস-হাস' ধীরে ধীরে আরও বড় হতে লাগল। ২০১৪ সালে যখন স্নাতক শেষ করলাম, তখন আমরা দুজনেই যথেষ্ট অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ফেলেছি।

এখন তোমাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কেন তোমরাও এই একই কাজ করবে? কেন তোমরাও কলেজে থাকতেই নিজেদের ব্যবসায় হাতেখড়ি শুরু করবে? কেন কলেজ প্লেসমেন্টে পাওয়া চাকরি ছেড়ে দেবে? কেন তোমরা আমার কথা শুনবে? আমি তোমাদের কখনোই চাকরি ছাড়ার জন্য জোর করতে পারি না। কিন্তু ব্যবসায় উৎসাহ থাকলে একবার চেষ্টা করে তো দেখা যেতেই পারে।


image


১) তোমার প্রচেষ্টা কার্যকরী না হয়, তাহলে চাকরির একটা বিকল্প তোমাদের জন্য খোলা থাকছেই। কিন্তু তুমি যে প্রচেষ্টা করেছিলে এবং তাঁর যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছ, তা কখনও বিফলে যাবে না। ভবিষ্যতে সেটাই তোমাদের কাজে দেবে। যে কোনও কোম্পানি তোমার সেই অ্যাটিটিউডকে স্বাগত জানাবে।

২) কোনও অর্থনৈতিক চাপ তোমায় নিতে হবে না। তোমার পরিবার যদি চায়, তুমি আগে পড়াশুনাটা শেষ করো, তাহলে এটাই তোমার সেরা সময় চাকরির দিকে মনোনিবেশ না করে নিজেকে তৈরি করে নেওয়া।

৩) এই শুরু করাতে কোনও লগ্নির দরকার হচ্ছে না। শুধু একটা ল্যাপটপ দরকার, আর ইন্টারনেট কানেকশন। তোমার রুমমেটই তোমাকে সাহায্য করতে পারে এ ব্যাপারে। কলেজ ল্যানকে ইন্টারনেট হিসেবে ব্যবহার করো। খাবারের চিন্তা কি আলাদা করে করতে হবে? আর কি চাই?

৪) তোমার রুমমেট এবং প্রিয় বন্ধুরাই হয়ে উঠতে পারে তোমার সহপ্রতিষ্ঠাতা। ইতিহাস বলে তাঁদের চেয়ে ভালো সহপ্রতিষ্ঠাতা হয় না। কিন্তু তোমাকে কারোকে আলাদা করে বেতন দিতে হবে না। বরং তারাই তোমার স্বপ্নকে পূরণ করতে উঠে পড়ে লাগবে। এতে তাদেরও যে অভিজ্ঞতা বাড়ছে। স্বপ্ন অমূল্য, তাকে পূরণের চেষ্টা করা উচিৎ, তাই নয় কি?

৫) তুমি সব সময়ই নতুন ভাবে সব কিছু শুরু করছ। এটা তোমার একটা বাড়তি সুবিধা। সবাই তোমায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে।

৬) তোমার এনার্জি, আত্মবিশ্বাস তোমার শক্তি। তুমি যদি ঠিক মত যোগাযোগ করতে পারো, অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সাহায্য কাজে লাগাতে পারো, তাহলে পেছন ফিরে তোমাকে তাকাতে হবে না।

আমি জানি তুমি আমায় পুরোপুরি বিশ্বাস করবে না। যদি তোমার মন চায়, তুমি চাকরি করবে, তাহলে নিশ্চয়ই নিজের সেই লক্ষ্য পূরণ করো। কিন্তু যদি কিছুটা সময় বের করে, একবার চিন্তা করো তুমি সত্যি কি চাও, তাহলে হয়তো আমার কথাগুলি তোমাকে সাহায্য করবে। আর একজনের নাম তোমাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, তিনি স্টিভ জোবস।


অতিথি লেখক-সঙ্কেত সৌরভ(সহ প্রতিষ্ঠাতা ক্যাম্পাস-হাস ,পাইথন এবং গ্রীক জাভাস্ক্রিপ্ট গিক)

অনুলেখক-চন্দ্রশেখর চ্যাটার্জী