রাষ্ট্রসঙ্ঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সারা পৃাথিবীতে মোট প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা ১ বিলিয়ন। তার ভিতর ৪০ থেকে ৮০ মিলিয়ন প্রতিবন্ধী ভারতীয় নাগরিক বলে জানা গিয়েছে। ভারতে এই বিপুল সংখ্যক প্রতিবন্ধী নাগরিক জীবনের অনেক অধিকার থেকেই বঞ্চিত। সেইসঙ্গে তাঁরা বেড়ে ওঠার জন্যে, স্বনির্ভর হওয়ার জন্যে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাগুলি থেকে এখনও অনেকাংশই বঞ্চিত বলে অভিযোগ।
তবে প্রতিবন্ধীরাও যাতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন, এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই উদ্যোগ বাস্তবায়িত করতে ডিসএবিলিটি বিলে সংশোধনী আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে সংশোধিত ওই বিলটি রাজ্যসভায় পাস হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিযেছে। প্রসঙ্গত, ইউপিএ সরকারের কার্যকালের শেষাশেষি ২০১৪ সালেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
বিলটিতে নতুনভাবে যে সংশোধনীগুলি আনা হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ করার অভিযোগ প্রমাণিত হলে দুবছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। সেইসঙ্গে হতে পারে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানাও। ইউপিএ সরকারের আমলে ২০১৪ সালে সংশ্লিষ্ট বিলটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের জেরে সেইসময়ে ইউপিএ-র তরফে সে্টি কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, ২০১০ সালে সুধা কাউল কমিটির পেশ করা রিপোর্টের ভিত্তিতে বিলটির খসড়া তৈরি করা হয়েছিল। ওই কমিটি সেইসময় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাঁদের রিপোর্টটি পেশ করে কেন্দ্রীয় সোস্যাল জাস্টিস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট মন্ত্রককে।
হিমোফিলিয়া, অটিজম, থ্যালাসেমিয়া ইত্যাদি অসুখের জেরে যাঁরা প্রতিবন্ধী এই বিলটি চূড়ান্ত অনুমোদনের পরে তাঁরা প্রতিবন্ধী হিসাবে আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন বলে জানা গিয়েছে। যেমন, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রতিবন্ধী পডুয়াদের জন্যে ৪ শতাংশ আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হবে। তাছাড়া, ৪০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার যে সমস্ত মানুষ, তাঁরাও শিক্ষা, চাকরিতে বিশেষ সুবিধা পাবেন। তাছাড়া, সরকারি প্রকল্পগুলির সুযোগ লাভ করার জন্যে প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে নিয়ম-কানুন শিথিল করা হবে। এর পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সংরক্ষণের সুযোগ ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে।