মিট অন হুইলস। অর্থাৎ চাকায় চড়ে মাংসের নানা পদ ঘুরে বেড়াবে আপনারই চারপাশে। কখনও হাজির হবে দোরগোড়ায়। সাবেক ‘বেনফিশ মডেল’-এরই নয়া অবতার। তবে মাছভাজার বদলে থাকছে মাংসের নানা কাবাব।
শহরের রাস্তায় গাড়ির ভ্রাম্যমান হেঁসেল থেকেই মাংসের ফাস্ট ফুড হাতছানি দেবে। মেনুতে রোল, শোয়ারমা, স্যান্ডউইচের মতো দেশি-বিদেশি পদের ছড়াছড়ি। প্রাণিসম্পদ বিকাশ নিগমের এই উদ্যোগে খুশি রসনাপ্রিয় বাঙালিও। আবার আয় বাড়াতে এই আমিষ ফাস্টফুডের সম্ভারই এখন সরকারের নয়া হাতিয়ার।
গত তিন-চার বছরে হরিণঘাটার মাংস প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটের উৎপাদন বাণিজ্যিক ভাবে ছড়িয়ে দিতে দিকে দিকে গড়ে উঠেছে বিপণি। জেলায় জেলায় ১৯২টি দোকান। নিগমের প্রকল্পের টার্কি, হাঁস, কোয়েল থেকে দেশি মুরগি-খাসির মাংসের পদের একটি রেস্তোরাঁও গত বছর সেক্টর ফাইভে চালু হয়েছে। বছর ছয়েক আগে ৫০ লক্ষ টাকা থেকে নিগমের বছরের রোজগার এখন ছ’কোটি ছুঁই ছুঁই। কিছু কর্মসংস্থানও হয়েছে।
‘মিট্ অন হুইলস’ প্রথমে দক্ষিণ কলকাতায় গড়িয়াহাট-গোলপার্ক-ঢাকুরিয়ায় হাজির হল। পয়লা বৈশাখের মধ্যে পথে নামবে আরও তিনটি গাড়ি। রুটও ঠিক হয়েছে, ধর্মতলা-বি বা দী বাগ, নিউ টাউন-সেক্টর ফাইভ ও উল্টোডাঙা-লেকটাউন। নিগম সূত্রে খবর, চারটি গাড়িতেই থাকছে পুরোদস্তুর চিমনি বিশিষ্ট রান্নাঘর। কুকড অথবা ফ্রোজেন দুধরনের মাংস মিলবে। গাড়ি পিছু খরচ ২২ লক্ষ টাকা মতো । কী ভাবে কাজ করবে এই গাড়ি?
‘কিছু দক্ষ ফ্র্যাঞ্চাইজিকে বাছা হয়েছে। তারা গাড়ির জন্য ভাড়া দেবে। কয়েক জনের কর্মসংস্থান হবে। নিগমের মাংসের পরিচিতিও বাড়বে। নিগমের মাংসই ব্যবহার করতে হবে’,জানান নিগমেরই এক কর্তা।নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গৌরীশঙ্কর কোনার বলেন, ‘মেনু তরুণ প্রজন্মের পছন্দ মতো সাজানোর চেষ্টা হয়েছে। হরিণঘাটার মাংসের বৃহত্তর বাজার তৈরি ও কর্মসংস্থান— দু’টো দিক মাথায় রেখে এগোচ্ছি’।
গোড়ায় চিকেন-মাটনের উপরেই জোর বেশি দেওয়া হচ্ছে। সরকারি খামারের মুরগি ছাড়া ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট-এর মাংস থাকবে। কিছু দিন বাদে টার্কি বা কোয়েলের মাংসের কাবাবও ঢুকবে গাড়িতে। তা ছাড়া, নিগমের তৈরি নাগেট-পপকর্নের মতো আমিষ পদও মিলবে। বেনফিশের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও স্বাদ-মানের ধারাবাহিকতা দেখা যায়নি। তাই মাংসের গাড়ি নিয়ে সাবধানে এগোতে চাইছে নিগম।