বাংলাদেশে সাম্প্রতিক জঙ্গি কার্যকলাপ নজরে রেখে এবার তৎপর বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক। জঙ্গিরা যাতে বাংলাদেশের কোনও ব্যাংকে টাকা রাখতে এবং টাকা তুলতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশের নোডাল ব্যাংক বিশেষ ব্যবস্থা নিতে চলেছে। জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে গিয়ে ফজলে কবির জানান, এই নিয়ে সব ব্যাংকের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গেই বৈঠক হয়েছে। চলতি বছরের অক্টোবরের মধ্যে প্রত্যেক ব্যাংককে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জঙ্গিরা যাতে কোনভাবেই ব্যাংকের সুবিধা নিতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আরও কড়া হতে চলেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের গভর্নর।
বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়লে সে দেশের সমাজ রাজনীতির ওপর যত না প্রভাব পড়বে তার থেকে বেশি প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর। গত কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের শিল্প এবং বাণিজ্য পৃথিবীর মানচিত্রে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। কৃষি এবং কৃষি নির্ভর শিল্পের এই অগ্রগতি থামিয়ে দিতে পারে জঙ্গি কার্যকলাপ।
বিদেশি লগ্নি ফিরে যেতে পারে। নতুন লগ্নি আসার পথও বন্ধ হতে পারে। যদি বিশ্বের অন্যান্য দেশে বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণায় চিড় খায় তার খারাপ প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের রফতানির ওপর।
ফলে জঙ্গি কার্যকলাপের মত রাজনৈতিক এবং সামাজিক এই আক্রমণে উদ্বিগ্ন সে দেশের অর্থনীতিবিদরা। একেতেই ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার যোগান স্বাভাবিকভাবে ২ দশমিক ৫ শতাংশের মতো কমেছে। কিন্তু টাকার মান ধরে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে বিদেশি মুদ্রা কিনতে বাধ্য হয়েছে। বেসরকারি খাতে দেওয়া ঋণ যাতে অনুৎপাদনশীল ও ঝুঁকিপূর্ণ খাতে ব্যবহার না করে উৎপাদনশীল কাজে ব্যবহার হয়- তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তৎপর।
বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতির প্রধান শত্রু এখন সে দেশের জঙ্গি কার্যকলাপ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা। এই দুই শত্রুর সঙ্গে লড়াই করার পথ খুঁজছে বাংলাদেশের স্টার্টআপ কমিউনিটিও। সে দেশের স্থিতিশীল সরকার এবং উন্নয়নশীল কাজের অগ্রগতি যেমন কিছুদিন আগে পর্যন্ত বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করেছে। সাম্প্রতিক ঢাকার ঘটনা এবং তার পর থেকে চলতে থাকা মৌলবাদীদের তাণ্ডবে যে ছবি দেশের সীমা পেরিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে গিয়ে পৌঁছচ্ছে তাতেই ‘অশনি সংকেত’ দেখতে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।