আড্ডাবাজ বাঙালির নতুন ঠিকানা C/O ফুডপাথ

আড্ডাবাজ বাঙালির নতুন ঠিকানা C/O ফুডপাথ

Tuesday January 12, 2016,

2 min Read

আড্ডাবাজ আর ভোজনরসিক হিসেবে বাঙালির সুখ্যাতি বহুদিনের। স্টার্টআপের জোয়ারের সময়ে এই শহরে যে আড্ডা আর খাবারকে কেন্দ্র করে একাধিক ব্যবসা গড়ে উঠবে সেটাই স্বাভাবিক। হচ্ছেও তাই। শহরের কেন্দ্র থেকে শহরতলিতে গড়ে উঠছে একাধিক ক্যাফে, ফুড জয়েন্ট। যেমন এই ফুডপাথ।

image


উত্তরকলকাতায় গজিয়েছে এই কফিশপ। কফি, শেক, স্যান্ডউইচ, স্যালাড, পাস্তা আর নানা মুখরোচক খাবার সঙ্গে কম্‌প্লিমেন্টারি দেদার আড্ডা। খাদ্যের স্বাদ তো বটেই তবে পরিবেশ ও সজ্জার কারণেও শহরের তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় এই ফুডজয়েন্ট। ঝাঁ চকচকে মননশীল সজ্জা, আরামপ্রদ বসার ব্যবস্থা, খোলামেলা পরিবেশ। এটাই ইউএসপি। শুরু হয়েছিল বছর চারেক আগে সিঁথিতে, গতবছরের শেষে বাঙুর অ্যাভেনিউতে খুলে ফেলেছে নিজেদের দ্বিতীয় শাখা।

কথা হচ্ছিল ফুডপাথের প্রতিষ্ঠাতা বছর ৩০ এর অরিজিত সাহার সঙ্গে। ফিন্যান্স নিয়ে এমবিএ করেছেন অরিজিত। ১০টা-৬ টার চাকরি করার ইচ্ছে কোনওদিনই খুব একটা ছিল না। আড্ডাবাজ খাদ্যরসিক অরিজিত তাই এমন কিছু একটা করার কথা ভাবছিলেন যেখানে অবসরযাপনের মধ্যে দিয়েই কাজ করতে পারবেন তিনি, করতে পারবেন নিজের ভাললাগার কাজ। আর সেই ভাবনারই ফসল ফুডপাথ। আর্থিক ও মানসিক সহায়তা পেয়েছেন বাবার থেকে।

রাস্তার খাবার, রকের আড্ডা সবমিলিয়েই নাম ফুডপাথ, জানালেন অরিজিত। “ফিন্যান্স নিয়ে পড়াশোনা আমার, খাদ্য শিল্প সম্পর্কে জানা বোঝা প্রায় ছিলই না। সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এই এলাকার মানুষের পছন্দ মত নিখুঁত স্বাদের খাবার বানানো। পরিবেশ পরিস্থিতির তো বদল ঘটে, কিন্তু তার মধ্যেও প্রতিদিন প্রতিটি পদের একইরকম স্বাদ বজায় রাখাটাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি দক্ষ এবং সাধারণ দু’রকমের কর্মী নিয়োগ করতে গিয়েই অসুবিধায় পড়তে হয়েছে বারবার”, বললেন অরিজিত।

image


অনিশ্চয়তাই তার উদ্যোগের পথে সারাক্ষণ সঙ্গী থেকেছে বলে জানালেন অরিজিত। একজন উদ্যোগপতির সবসময়ই অপ্রত্যাশিতকেই প্রত্যাশা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি, বললেন, “যেকোনও মুহূর্তে অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটবে, ভাবতেও পারেন নি এমন সব সমস্যা এসে উপস্থিত হবে। প্রস্তুতির কোনও সময়ই পাবেন না। ঠাণ্ডা মাথায় সেই সব সমস্যাগুলি সমাধান করতে করতে এগোতে হবে, এটাই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।“ শুরুর থেকে আজ অবধি যাত্রাপথটা মসৃণ ছিল না। এখনও ঠোক্কর খেতে হয় পদে পদে। জানালেন, “আমাদের এখানকার ইকোসিস্টেম অ্যান্ত্রপ্রন্যারশিপের জন্য একেবারেই সহায়ক নয়। খাদ্য ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স পেতে গিয়ে প্রচুর সমস্যায় পড়তে হয়েছে আমাকে। এছাড়াও ঠিকঠাক কর্মী পাওয়াও বেশ সমস্যাজনক।

image


তবে সব সমস্যার মধ্যেও ক্রেতাদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে অরিজিতের ফুডপাথ। দ্বিতীয় শাখা খোলার পাশাপাশিই অনলাইন খাবার অর্ডার নেওয়াও শুরু করেছে তারা। খাবারের গুণমান ও স্বাদ বজায় রাখা, নিত্যনতুন পদ সংযোজন এবং আরামদায়ক আড্ডার পরিবেশ তৈরিই তাদের সাফল্যের কারণ বলে মনে করেন অরিজিত। রয়েছে খোলা জায়গায় বসার ব্যবস্থাও। এছাড়া খাবারের দাম সাধারণ আয়ত্বের মধ্যে রাখাটাও জনপ্রিয়তার একটা বড় কারণ বলে মনে করেন তিনি।

২০২০ এর মধ্যে শহরে ২০টি শাখা খুলতে চান অরিজিত। ফুডপাথকে কলকাতার অন্যতম সবচেয়ে জনপ্রিয় আড্ডা জয়েন্ট হিসেবে দেখতে চান।