সামনেই বন্ধুর বিয়ে, দামি শেরোয়ানি পরার শখ, অথচ পকেটে টান। ভাবছেন কী করা যায়। এমন সময় আপনাকে পথ দেখাতে পারে নীরজ ভঢরা ও অনুনয় অরোরার wrapd। যেখানে ৬০ হাজার টাকার পোশাকও মিলবে মাত্র ২০০০ টাকায়। ভাবছেন অসম্ভব। এই অসম্ভবকেই সম্ভব করছে সংস্থাটি।
পার্টি বা বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য অনেকেই দামি ডিজাইনার পোশাক কেনেন। তারপর সেই পোশাকের ব্যবহার বছরে এক কি দু-বার। বাকি সময়টা সেগুলি আলমারিতে ভিড় বাড়ায়। ব্র্যান্ডেড ডিজাইনার পোশাক কেনার খরচও বিস্তর।
তাহলে বিকল্প কী?
বিশেষ অনুষ্ঠান উপলক্ষে পোশাক ভাড়া নেওয়ার চল পাশ্চাত্যের দেশগুলিতে রয়েছে। ভারতীয় বাজারে সেই বিকল্পেরই খোঁজ দিচ্ছে wrapd।
বছর ছয়েক আগে মধ্য দিল্লির প্যাটেল নগরে এই বিকল্প ব্যবস্থার আমদানি করেন নীরজ ভঢরা। ব্যবসার নাম দিয়েছিলেন ‘রেন্ট আ পার্টি ড্রেস’। তবে সেই কারবার চলছিল খুব ছোট করেই। বছর তিনেক পর অনুনয় এই ব্যবসার কথা জানতে পারেন। ‘ব্যবসার কনসেপ্ট দেখে আমার আগ্রহ হয়েছিল। তাই নীরজের সঙ্গে আমি আলোচনায় বসে জানার চেষ্টা করি, তিনি ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে কী ভাবছেন। আমরা দু’জনেই এই ব্যবসার মধ্যে সম্ভাবনা দেখেছিলাম। ব্যস তারপরেই জন্ম নেয় wrapd’, জানিয়েছেন অনুনয়। নতুন মোড়কে প্যাটেল নগরের গণ্ডি পেরিয়ে দক্ষিণ দিল্লির লাজপত নগরে চালু হয় সংস্থার নতুন শো-রুম। নতুন জায়গায়, নতুন নামে দারুণ হিট হয় ‘রেন্ট আ পার্টি ড্রেস’ কনসেপ্ট।
wrapd-এর পোশাক ব্যবহারের পদ্ধতি খুব সহজ। সংস্থার শো-রুমে কিম্বা ওয়েবসাইটে গিয়ে ন্যূনতম মূল্যে পছন্দের পোশাক বুক করা যায়। ৪৮ ঘণ্টা সেই পোশাক ব্যবহার করার পর সেটি দোকানে ফেরত দিয়ে আসতে হয়। ইন্দো, ওয়েস্টার্ন, এথনিক – wrapd-এর কাছে রয়েছে ডিজাইনার পোশাকের সম্ভার। অল্প খরচে কেতাদুরস্ত পোশাক পরার এই বিকল্প রমরমিয়ে চলছে দিল্লিতে। বিয়ের মরসুমে চাহিদা এতটাই যে দোকানে কর্মচারী সংখ্যায় কম পড়ে। অনুনয় জানিয়েছেন এমন বহু ক্রেতা তাদের কাছে আসেন যারা নামি পোশাক বিপণি থেকেই wrapd-এর বিষয়ে জানতে পেরেছেন। অনুনয়ের মতে এটাই তাদের সাফল্য। তবে এপ্রিল থেকে জুনের অফ সিজনে ব্যবসায় থাকে ভাটার টান। সম্ভাব বাড়ানো, নতুন পোশাক ডিজাইন করে সেই সময়টাকে কাজে লাগানো হয়। আর কর্পোরেট সংস্থা, মডেলিং সংস্থা বা বিভিন্ন হোটেলকে পোশাক ভাড়া দিয়ে সংস্থার আয় অক্ষুণ্ণ রাখা হয়।
অনুনয় অরোরার দাবি লাজপত নগরের অনেক ব্যবসায়ীই তাদের পোশাকের ডিজাইন নকল করে বিক্রি করেন। তবে এসবের সঙ্গে তারা মানিয়ে নিয়েছেন। কেউ কেউ আবার তাদের ব্যবসার কনসেপ্ট নকল করেও সেরকম সফল হননি বলেই দাবি wrapd-এর অন্যতম কর্ণধারের। কিন্তু বিপণন ছাড়াই যেভাবে তাদের ব্যবসা বেড়েছে তাতে খুশী অনুনয় অরোরা।
প্যাটেল, লাজপত নগরের পর নগরের পর দিল্লির লক্ষ্মী নগরেও শোরুম খুলেছে wrapd। হায়দরাবাদেও পাড়ি জমিয়েছে সংস্থাটি। তবে এখানেই থেমে দেশের অন্যান্য মেট্রো শহরেও ছড়িয়ে পড়তে চায় wrapd।
লেখা - রঘু মোহন, অনুবাদ - ঋত্বিক দাস