জলের ব্যবহার ও সাশ্রয়ে অরুণ দুবের হাতিয়ার Greywater

জলের ব্যবহার ও সাশ্রয়ে অরুণ দুবের হাতিয়ার Greywater

Wednesday September 09, 2015,

3 min Read

রুরকি আইআইটি থেকে গ্যাজুয়েট হওয়ার পরে একটি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিতে যোগ দেন অরুণ দুবে। সেই ওষুধ কোম্পানিতে জেনেরিক ড্রাগ তৈরিতে উচ্চ প্রযুক্তির স্ক্রিনিং ও ডেভেলপিংয়ের কাজ দেখতেন অরুণ। সেই কাজ করতে গিয়েই প্রযুক্তি বিষয়ক দুর্দান্ত একটি কাজের সাক্ষী হন তিনি। শৈবাল (অ্যালজি) থেকে বায়োডিজেল তৈরির প্রযুক্তিতে কীভাবে আরও উন্নত করা যায় তাতে মনোনিবেশ করেন অরুণ। স্ট্যানফোর্ড থেকে এমবিএ করার পরে কিছু সময়ের জন্য ম্যাকিনসে অ্যান্ড কোম্পানিতেও কাটান। সেখানে মূলত বড় সোলার কোম্পানিগুলির বিষয়গুলি দেখতেন তিনি।সেই সময়েই প্যাকেজড সিউয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (STP) কনসেপ্টের সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয় তাঁর।ভারতে আর্বান ইকোসিস্টেমের ক্ষেত্রে বিষয়টা যে একদম ফিট তা বুঝতে সময় নেননি তিনি।


image


স্বপ্ন থেকে পরিকল্পনায় অগ্রগতি, এরপর তৈরি হয়ে গেল অ্যাকশন প্ল্যানও। দেশে ফিরে গ্রেওয়াটার (Greywater) সংস্থায় যোগ দেন অরুণ। আর এখন গ্রেওয়াটারের ডিরেক্টর হিসাবে এর স্ট্র্যাটেজি, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট, ফাইনান্স সবই সামলাতে হয় তাঁকে।জলের পুনর্ব্যবহার ও সিউয়ারেজের ডিসেন্ট্রালাইজ ট্রিটমেন্ট, এই দু'টি কাজের জন্য অর্থ সাশ্রয়কারী অটোমেটিক প্লাগ অ্যান্ড প্লে প্রোডাক্টস ডেভেলপ করত গ্রেওয়াটার।সংস্থার এই কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবেন অরুণ। তাঁর কথায়, 'একদিকে ক্রমবর্ধমান নগরায়ন আর অন্যদিকে পুরসভাগুলিতে পরিকাঠামোর অভাব, দ্বিমুখী এই প্রভাবের ফলে আমাদের জিনিসটা যে সময়ের দাবি মেটাতে পারে তা বুঝেছিলাম। আমরা দেখলাম এক-দশমাংশ খরচ করেই আমরা যথাসম্ভব কমিয়ে ফেলতে পারব র সিউয়ারেজ ডাম্পিং। সেইসঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে জলের পুনর্ব্যবহারও সম্ভব'।

গ্রেওয়াটারে কোর টিমের মধ্যে বোঝাপড়াও দুর্দান্ত। সুনীল তুপে (সিইও), রাজেশ নায়ার (ডিরেক্টর, সেলস) এবং শচীন পরদেশী (হেড অব সেলস, তিনজনেই অভিজ্ঞতায় ভরপুর। অরুণ বলেন, 'আসলে চারটি নীতির ওপর আমাদের প্রডাক্টটা দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্রথমত, প্যাকেজড ও সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়, দ্বিতীয়ত সহজে ব্যবহারযোগ্য ট্রিটেড ওয়াটার, তৃতীয়ত মিনিমাম লাইফ সাইকেল কস্ট গ্যারেন্টিড এবং চতুর্থত ভারতের সব পরিবেশ সংক্রান্ত বোর্ডে তা গৃহীত হয়েছে'। তাঁর দাবি, গ্রেওয়াটারের তৈরি জিনিসটি বিদ্যুতের বিল এবং মেইনটিন্যান্স কস্ট ৫০শতাংশ কমিয়ে দেয়।এর ফলে সব ব্যবহারকারীরই কমবেশি সাশ্রয় হয়। রয়েছে বিশেষ কয়েকটি বৈশিষ্ট। যেমন GREWA-RS. প্ল্যান্ট যাতে ঠিকঠাক চলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চালিত হয় এর মাধ্যমে। যা দেশের আর কোনও সংস্থা দিতে পারেনি।


অরুণ দুবে

অরুণ দুবে


CPCB (সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড)-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতে টায়ার ওয়ান শহরগুলিতে মাত্র ৩২ শতাংশ সিউয়েজ শোধন করা হয়। টায়ার-টু শহরগুলির ক্ষেত্রে তা মাত্র ৯ শতাংশ। ২০১৮ সাল নাগাদ পরিস্থিতি এমনটাই দাঁড়াবে যে ২৪ হাজার মিলিয়ন লিটার সিউয়েজ প্রতিদিন শোধনহীন অবস্থায় থাকবে। এর ফলে এইসব শহরে স্যানিটেশন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত বিষয়ে ভয়ঙ্কর খারাপ প্রভাব পড়বে। এতে রাশ টানতে পারে একটাই জিনিস- ডিসেন্ট্রালাইজড এসটিপি। ঠিক এই জায়গাতেই কাজে আসবে গ্রেওয়াটারের প্রযুক্তি। অরুণ দুবে বলেন, 'আমাদের এসটিপি হল কমপ্যাক্ট সিঙ্গল ট্যাঙ্ক সিস্টেম। এর জন্য কোনও ডেডিকেটেড অপারেটর লাগে না। এতে কোনও আওয়াজ হয় না, গন্ধও ছড়ায় না। ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে তা স্থাপনও করা যায়'। চলতি বছরেই নেটেল (ইন্ডিয়া) নামে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং অর্গানাইজেশনের সঙ্গে পার্টনারশিপ গড়ে তুলেছে গ্রেওয়াটার। ভারতে পরিবেশউপযোগী পণ্য ও পরিষেবা, দুয়েরই ক্ষেত্রে নেটেল এই মুহূর্তে মার্কেট লিডার। সে কথা তুলে ধরেই অরুণ বলেন,'গ্রেওয়াটারের হাতে বেস্ট প্রডাক্টটা রয়েছে। নেটেলের হাতে রয়েছে বাজার। ফলে দুই সংস্থার গাঁটছড়াটা খুবই জরুরি ছিল।আমাদের লক্ষ্য হল ভালো জিনিস তুলে দেওয়া একটা স্ট্যান্ডার্ড চ্যানেলের মাধ্যমে। যে কারণে আমাদের GREWA-RS কে সরাসরি বিক্রির ব্যবস্থা করবে নেটেল। এর ফলে ভারতে আমাদের ব্যবসারও দ্রুত প্রসার ঘটবে'।


image


যাত্রা শুরু করার পর থেকে গ্রেওয়াটারকে কখনই পিছন ফিরে দেখতে হয়নি। শহর ও গ্রামীণ ভারত, দু'প্রান্ত থেকেই চাহিদা বেড়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে বেশ কয়েকটি নামজাদা সংস্থারও। যেমন Dell, Club Mahindra, BPCL, Wadhwa Builders.